মোবাইল ব্রিজ ইনস্পেকশন ইউনিটটি কোথায়! মাঝেরহাটে দুর্ঘটনার পর যন্ত্র নিয়ে যা বললেন প্রাক্তন মন্ত্রী
উল্টোডাঙ্গা বা বিবেকানন্দ উড়ালপুল ভাঙার পরও যে প্রশাসনের টনক নড়েনি, তা মাঝেরহাট এবং শিলিগুড়ি সেতু ভেঙে পড়ায় আরেকবার প্রমাণ হয়েছে। সময় মতো বিভিন্ন সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নিয়মবিধি নিয়েও সন্দেহ।
উল্টোডাঙ্গা বা বিবেকানন্দ উড়ালপুল ভাঙার পরও যে প্রশাসনের টনক নড়েনি, তা মাঝেরহাট এবং শিলিগুড়ি সেতু ভেঙে পড়ায় আরেকবার প্রমাণ হয়েছে। সময় মতো বিভিন্ন সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নিয়মবিধি নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। এপ্রসঙ্গে পূর্ত দফতরের হাতে থাকা একমাত্র মোবাইল ব্রিজ ইন্সপেকশন ইউনিটটি আদৌ কোনও কাজ করছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
মোবাইল ব্রিজ ইন্সপেকশন ইউনিট-এর নিয়মিত ব্যবহার দুর্ঘটনা এড়াতে সাহায্য করতে পারে বলে মনে করছেন প্রাক্তন পূর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী। পূর্ত দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, এই ইউনিটটি ঠিকমত ব্যবহার করতে পারলেই ব্রিজ পরীক্ষার সমস্যা বহুলাংশে সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু ইউনিটটি সেভাবে কাজে লাগানো হয় না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের সড়ক পরিবহণ ও হাইওয়ে মন্ত্রক ২০০৭ সালে জার্মানিতে তৈরি তৎকালীন ৪ কোটি টাকা দামের এই মোবাইল ব্রিজ ইন্সপেকশন ইউনিটটি দিয়েছিল। রাজ্যের সেতু ও উড়ালপুলের স্বাস্থ্যের পর্যবেক্ষণের জন্য এই যন্ত্রটি দিয়েছিল কেন্দ্র। সেই সময় থেকে এটি নিয়মিত রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সেতু ও উড়ালপুল পরিদর্শনে বের করা হত। সূত্রের খবর অনুযায়ী, মেশিনটি পূর্ত (সড়ক) মেকানিক্যালের বাগুইআটির গুদাম ঘরে রয়েছে।
পূর্ত দফতরের একাংশের অভিযোগ, পরিস্থিতি বদলাতে থাকে ২০১৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে। অভিযোগ ওঠে, বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব দেখা দেয়। একইসঙ্গে এমবিআইইউ নিয়মিত বেরনোও বন্ধ হয়ে যায় কোনও অজ্ঞাত কারণে। ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে সাত দিনের জন্য এই যন্ত্রটিকে উত্তরবঙ্গে ব্রিজ পরীক্ষা করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এমবিআইইউ নিয়ে নিয়মিত পরীক্ষা চালু রাখলে রাজ্যের সেতু ও উড়ালপুলের হাল জানা সহজ হত। ফলে পরিকাঠামো ঠিক রাখতে পদক্ষেপ নেওয়া যেত।
প্রাক্তন পূর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী জানিয়েছেন, এই এমবিআইইউ কল্যাণীর ঈশ্বর গুপ্ত সেতুতে প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল। তারপর থেকে নিয়ম করে রাজ্যের সেতুগুলির পর্যবেক্ষণ করতে যন্ত্রটি ব্যবহার করা হত। পর্যবেক্ষণের সুপারিশ মেনে ব্যবস্থাও নেওয়া হত। তাঁর মন্ত্রিত্বকালে নিয়ম করে সারা বছর এই যন্ত্রের মাধ্যমে ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হত, দাবি করেছেন প্রাক্তন পূর্তমন্ত্রী। যেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা সহজে সম্ভব নয়, সেখানেও এটা ব্যবহার করা যায়। বড় সেতুগুলোর পাশাপাশি কলকাতার উড়ালপুলগুলো এমবিআইইউ দিয়ে পরীক্ষা করাতেই পারত। জানিয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী।