মোদী-সঙ্গ ত্যাগ সাংবাদিক থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা চন্দনের, কী কারণ নেপথ্যে
সাংবাদিক থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা বাংলার ছেলে চন্দন মিত্র বিজেপির জাতীয় রাজনীতির একজন অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছিলেন স্বল্প সময়েই।
দীর্ঘদিন ধরেই জল্পনা চলছিল চন্দন মিত্র বিজেপি ছাড়ছেন। তৃণমূলের একুশে জুলাইয়ের প্রাক্কালে তা স্পষ্ট হয়ে যেতেই জল্পনার পারদ চড়েছে রীতিমতো। কিন্তু কেনই বা চন্দন মিত্রের বিজেপি ছাড়া নিয়ে এত মাথাব্যথা! আসলে সাংবাদিক থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা বাংলার ছেলে চন্দন মিত্র বিজেপির জাতীয় রাজনীতির একজন অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছিলেন স্বল্প সময়েই।
ছিলেন লালকৃষ্ণ আদবানির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ একজন। 'দ্য পাইয়োনিয়ারে'র সম্পাদক চন্দন মিত্রকে রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে মনোনীত করেছিলেন রাষ্ট্রপতি স্বয়ং। ২০০৩ থেকে ২০০৯ সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর তাঁর বিজেপিতে আসা আনুষ্ঠানিকভাবে। তিনি ২০১০ সাল থেকে ২০১৬ পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশের থেকে বিজেপির টিকিটে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এরপর পশ্চিমবঙ্গ থেকে তিনি লোকসভায় বিজেপির টিকিটেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে দাঁড়িয়েছিলেন হুগলি লোকসভা কেন্দ্র থেকে। কিন্তু তৃণমূল প্রার্থীর কাছে তিনি পরাজিত হন। ছিলেন রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষকও। রাজ্যে দলের বিস্তার লাভের জন্য তাঁকে কাজে লাগিয়েছিলেন তৎকালীন বিজেপি নেতৃত্ব। এইসময়ে হাওড়ার চন্দন মিত্রকে বঙ্গ বিজেপির কাণ্ডারি করারও তোড়জোড় শুরু হয়।
কিন্তু জাতীয় রাজনীতিরে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটির বাড়বাড়ন্ত শুরু হওয়ার পরই গুরুত্ব কমতে থাকে তাঁর। লালকৃষ্ণ আদবানির ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তিনি ক্রমশই কোণঠাসা হয়ে পড়েন দলে। বিশিষ্ট সাংবাদিক থেকে রাজনীতিক হওয়ার পর চন্দন মিত্র জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপির অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছিলেন ঠিকই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের বৃত্তে তাঁর স্থান হয়নি।
এরপর থেকেই তিনি বিজেপির সমালোচনায় মুখর হয়েছেন বারবার। উপনির্বাচনে একের পর এক হারে বিদেপির নীতির সমালোচনা করেছেন। বিশেষ করে কৈরানা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপির পরাজয়ের পর দলের কৌশল নিয়ে প্রকাশ্যেই তিনি সমালোচনা করেন। তাঁর মতে, চাষিদের সমস্যাকে গুরুত্ব না দেওয়াই বিজেপির ভরাডুবির প্রধান কারণ।
তিনি বিজেপির বর্তমান নেতৃত্বের সমালোচনা করেন কড়াভাবেই। তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে নিজেও সমালোচিত হন। এরপরই তিনি মনস্থ করে ফেলেন দল ছাড়বেন। তবে তিনি নিজের দল ছাড়া নিয়ে কোনও কথা বলেননি। ফলে দল ছাড়ার পিছনে বর্তমান নেতৃত্বের সঙ্গে মতবিরোধই কারণ কি না, তা স্পষ্ট হয়নি এখনও।
[আরও পড়ুন:একুশে জুলাই মমতার মঞ্চে বিজেপি নেতা! আরও বড় চমকের অপেক্ষায় তৃণমূল কংগ্রেস]