শিক্ষক-শিক্ষিকার বদলি নিয়ে এবার নয়া নির্দেশিকা জারি রাজ্যের
শিক্ষক-শিক্ষিকার বদলি নিয়ে এবার নয়া নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য সরকার। এবার থেকে সংশোধিত নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী 'সিঙ্গেল টিচার'রা বদলির আবেদন করলে প্রধান শিক্ষক বা পরিচালন সমিতি আটকাতে পারবেন না। একই সঙ্গে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আবেদনের ৭ দিনের মধ্যে পদক্ষেপ করতে হবে স্কুল শিক্ষাদপ্তরের কমিশনারকে।
পাশাপাশি, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলিতে এবার তাঁদের বয়স এবং বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব অন্যতম বিবেচ্য হিসেবে ধরা হবে বলেও বুধবার রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরের প্রকাশিত নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে, আবেদনকারী শিক্ষক বা শিক্ষিকার বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব ২০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার হলে বদলির ক্ষেত্রে পাবেন ৩ নম্বর। পাঁচশো কিলোমিটারের বেশি দূরে কর্মরত হলে তিনি পাবেন ৫ নম্বর। চল্লিশ বছর বয়স পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা বদলির আবেদনে ১ নম্বর পাবেন। ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সীরা পাবেন ২ নম্বর। ৫১ বছর বয়সের বেশি হলে বরাদ্দ ৩ নম্বর।
প্রসঙ্গত, উৎসশ্রী প্রকল্পে গতবছর ১ আগস্ট থেকে রাজ্যের স্কুল শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু বদলিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ এনওসি দিচ্ছে না বলে সম্প্রতি অভিযোগ তোলেন আবেদনকারী শিক্ষক শিক্ষিকা। স্কুলগুলির বক্তব্য, নির্দিষ্ট বিষয়ে একজন শিক্ষককে (সিঙ্গেল টিচার) ছেড়ে দিলে ওই বিষয়ে পড়াবে কে? তা নিয়েও বিড়ম্বনায় পড়তে হয় স্কুল কর্তৃপক্ষকে। তবে স্কুলশিক্ষা দপ্তরের কড়া দাওয়াই, বিষয়টি দেখবেন নির্দিষ্ট জেলার স্কুল পরিদর্শক (ডিআই)।
সংশোধিত নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে ৫ অথবা এর কম শিক্ষক আছেন এমন স্কুলের শিক্ষকরাও বদলির ক্ষেত্রে আবেদন করতে পারবেন। ডিআইরা অন্য স্কুল থেকে অস্থায়ী ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ করবেন। কমিশনার অফ স্কুল এডুকেশনকে এক্ষেত্রে রিপোর্ট করবেন ডিআই। জুনিয়র হাইস্কুলের কম শিক্ষক আছেন এমন পরিস্থিতিতেও শিক্ষকরা বদলির আবেদন করতে পারবেন। এছাড়াও মেডিক্যাল গ্রাউন্ড-এর ক্ষেত্রে আবেদন করলে রেজিস্টার্ড ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন লাগবে।
এদিনের নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকার নিজের বা তাঁর সন্তানের বা তাঁর স্বামী বা স্ত্রীর হৃদরোগ, কিডনি বিকল, থ্যালাসেমিয়া, অঙ্গ প্রতিস্থাপন বা স্ত্রী রোগের মতো গুরুতর সমস্যা থাকলে বদলিতে বিশেষ সুবিধা পাবেন। আগে ৪০ শতাংশের বেশি শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলে বদলিতে সুবিধা পেত। এদিন বলা হয়েছে, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ৬০ শতাংশ বা তার বেশি হলে সুবিধা পাবেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সরব হয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সম্পাদক কিংকর অধিকারী জানান, "প্রত্যেক শিক্ষক বা শিক্ষিকা নিজের জেলায় সুযোগ পাবেন বলে ঘোষণা করেছিল সরকার। সেই ঘোষণার প্রতিফলন সংশোধিত নির্দেশিকায় আমরা পেলাম না। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক।"