জাপানি বোমা থেকে বাঁচাতে কালো রঙে ঢাকা হয়েছিল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালকে
জাপানি বোমা থেকে বাঁচাতে কালো রঙে ঢাকা হয়েছিল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালকে
১৯৪৩ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানিরা কলকাতায় বোমা ফেলছিল। বোমারু বিমান হামলা থেকে স্মৃতিসৌধের ক্ষতি রোধ করতে হবে।ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালকে নিয়ে খুব চিন্তায় পরেছিল সেই সময়ে বৃটিশ সরকার।ফাঁকা মাঠের মাঝখানে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। এ তো অমাবস্যার গাঢ় অন্ধকারেও দেখা যাবে, এখন কি করা যায়! ব্রিটিশরা ঠিক করল, কোনোভাবে গোটা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালকে কালো রঙে ঢেকে দিতে হবে। যেমন ভাবা তেমনি কাজ।
কলকাতা বিশেষজ্ঞ স্বর্ণালী চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'আপাদমস্তক কালো রং করে দেওয়া হল কলকাতা শহরের সবচেয়ে বড়ো আইকনে এবং এর সাথেই ভিক্টোরিয়া-সহ গোটা শহর জুড়ে লাগিয়ে দেওয়া হল 'ফটোগ্রাফি প্রহিবিটেড' লেখা বোর্ড। যাতে ব্রিটিশদের এই গোপন পরিকল্পনার কথা গুপ্তচরের মাধ্যমে কোনোভাবেই জাপানিরা জানতে না পারে। এই হল 'ব্ল্যাক ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল'-এর কাহিনী, যা ১৯৪৩ সাল নাগাদ অল্প কিছু মাসের জন্য হলেও আমাদের এই শহরেই ছিল।'
কলকাতায় গিয়েছেন অথচ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল দেখেননি এমন লোক খুব কমই আছেন। যেসব স্থাপনা ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের চিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছে তার মধ্যে কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল অন্যতম। এটি ভারতের অন্যতম ঐতিহ্য, যা দেশি-বিদেশি পর্যটককে আকর্ষণ করে। আমি কলকাতা ভ্রমণে গেলে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল অবশ্যই ঘুরে আসি, কখনো এটি পুরনো মনে হয় না। বার বার দেখা সত্ত্বেও ছুটে যাই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে। প্রকৃতপক্ষে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলো রানী ভিক্টোরিয়ার স্মৃতিসৌধ।
কলকাতা ময়দানের দক্ষিণ কোণে অবস্থিত এবং সুরম্য উদ্যান পরিবেষ্টিত শ্বেতপাথরে নির্মিত মেমোরিয়ালটি। এর নির্মাণ শুরু হয় ১৯০৬ সালে। এরপর সৌধটির উদ্বোধন হয় ১৯২১ সালে। আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্ট সিটি হলের স্থাপত্যশৈলীর আদলে এ স্মৃতিসৌধের নকশা প্রস্তুত করেন স্যার উইলিয়াম এমারসন। ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে তাকে বলা হয়েছিল ইতালিয়ান রেনেসাঁর স্থাপত্যশৈলীতে এটি নির্মাণ করতে।
শুধু ইউরোপীয় স্থাপত্যের আদলে গড়তে বিরোধিতা করেন উইলিয়াম। তিনি তার কাজে মুঘল ছাপও যুক্ত করেন। তাই এটি দেখতে অনেকটা আগ্রার তাজমহলের মতো। অনেকেই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালকে পশ্চিমবঙ্গের তাজমহল বলে আখ্যায়িত করেন। স্মৃতিসৌধটিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বিশাল এক উদ্যান। ওই সময় এ উদ্যানের নকশা করেছিলেন লর্ড রেডেসডেল ও জন প্রেইন। তখন থেকে আজো উদ্যানটি ধরে রেখেছে তার সৌন্দর্য। আজো কলকাতাবাসী সকাল-বিকালে প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে ছুটে আসেন এখানে। সবচেয়ে বেশি ভিড় পরিলক্ষিত হয় প্রাতঃভ্রমণের সময়।
পড়ন্ত বিকালে শিশুদের নিয়ে সময় কাটাতে চলে আসেন অভিভাবকরা। সৌধের সর্বোচ্চ গম্বুজে বিউগল-ধারিণী বিজয়দ্যোতির একটি কালো ব্রোঞ্জমূর্তি রয়েছে। বায়ুপ্রবাহ শক্তিশালী হলে বল-বেয়ারিংযুক্ত একটি পাদপীঠের ওপর স্থাপিত মূর্তিটি হাওয়া মোরগের কাজ করে। সৌধের সম্মুখভাগে রয়েছে শ্বেতপাথরের কয়েকটি সিঁড়ি। এসব সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয় মূল ভবনে। ভবনের ভেতরে রয়েছে একটি জাদুঘর।
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ইতিহাস ও নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায় এখানে। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের পাশে অর্থাৎ বারান্দার দিকে স্থাপন করা আছে একটি অস্থায়ী মঞ্চ। মঞ্চের সামনে দর্শকদের জন্য সারিবদ্ধভাবে রাখা চেয়ার। বিশেষ দিনে এখানে বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই সঙ্গে এখান থেকে লেজার ওয়াটার শো দেখানোর ব্যবস্থা রয়েছে। রাতের ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল দেখতে খুবই সুন্দর। দূর থেকে মনে হয় কোনো স্বপ্নপুরী বা কল্পলোকের অট্টালিকা। যে কাউকেই বিমোহিত করতে পারে এর সৌন্দর্য। মুগ্ধ হতে পারেন এর ইতিহাস-ঐতিহ্যে। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল আজো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে কলকাতা শহরে।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কলকাতার গড়ের মাঠের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত স্মৃতিভবন। ১৯০১ সালে ৯৪ বছর বয়সে মহারানী ভিক্টোরিয়া মারা যাওয়ার পর তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে সাদা মার্বেল পাথরের এই ভবনটি নির্মিত হয়। লর্ড কার্জন এই স্মৃতিসৌধটি নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। তাঁর মূল পরিকল্পনার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল বিশাল বাগিচার মাঝে একটি সৌধ এবং সেই সাথে ভারতে ব্রিটিশ শাসনের স্মৃতিবাহী নানা সামগ্রী সমৃদ্ধ একটি জাদুঘর নির্মাণ।
১৯০৬ সালের ৪ জানুয়ারি এই ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রিন্স অফ ওয়েলস হিসেবে ভারত সফরে আসা পরবর্তীকালের রাজা পঞ্চম জর্জ এবং ১৯২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর এটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রিন্স অফ ওয়েলস ও পরবর্তীকালের রাজা অষ্টম এডওয়ার্ড। স্মৃতিসৌধটিতে অনেক বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ একটি সঙ্কর রীতির প্রকাশ ঘটেছে। যেমন, ইতালিয় রীতির মূর্তি, মুগল রীতির গম্বুজ, তাজমহলের ন্যায় সাদা মার্বেলের ব্যবহার, সুউচ্চ উন্মুক্ত স্তম্ভশ্রেণি। সবকিছু মিলিয়ে এটি ঔপনিবেশিক স্থাপত্য শৈলীর এক অপূর্ব নিদর্শন।
ভারতে ঔপনিবেশিক স্থাপত্য রীতিটি গড়ে উঠেছিল ইউরোপীয় রীতির সাথে ইন্দো-ইসলামিক রীতির যথার্থ মিশ্রণে। ভারতে ইউরোপীয় উপনিবেশ এবং সেই সাথে ব্রিটিশ শাসন ভারতের স্থাপত্যে এক গভীর প্রভাব বিস্তার করে। এই রীতির স্থাপত্যিক প্রকাশ দেখা যায় গির্জা, ব্যারাক, দুর্গ, আবাসিক ও প্রশাসনিক ভবন ইত্যাদিতে। ব্রিটিশরা ভারতে স্থাপত্যশিল্পে নতুন কিছু কারিগরী শৈলীর সূচনা করে, যা ছিল সে সময়ে ভারতীয়দের ব্যবহূত পদ্ধতি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ভারতে ইউরোপীয় স্থাপত্য রীতির শ্রেষ্ঠ নির্দশন। এটি স্বাধীন ভারতে আধুনিক স্থাপত্যরীতির পথ নির্দেশনা দিয়েছে। ব্রিটিশ ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্ট-এর প্রেসিডেন্ট স্যার উইলিয়ম এমারসন এই ভবনের পরিকল্পনা ও নকশা প্রস্ত্তত করেন। তবে সুপারিনটেন্ডেন্ট আর্কিটেক্ট হিসেবে এর নির্মাণকাজ তত্ত্বাবধান করেন ভিনসেন্ট জে ইস্চ (Vincent J Esch)।
তিনি ছিলেন বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার। ১৯০২ সালে এমারসন তাঁকে ভবনের মূল নকশার ওপর একটি স্কেচ দাঁড় করার দায়িত্ব দেন। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল নির্মাণের দায়িত্ব প্রাপ্ত হয় কলকাতার মেসার্স মার্টিন অ্যান্ড কোম্পানি। তবে মেমোরিয়াল নির্মাণের মূল কাজটি অত্যন্ত শ্লথ গতিতে অগ্রসর হতে থাকে। ১৯০৫ সালে কার্জন যখন ভারত ছেড়ে যান তখন এর কাজ ঠিক মতো শুরুই হতে পারে নি।
এই শ্লথ গতির পেছনে কারণ হলো, কার্জনের পর যিনি ভারতে ভাইসরয়ের দায়িত্ব নিয়ে আসেন তিনি তাঁর পূর্বসূরির মতো মেমোরিয়ালের ব্যাপারে ততটা উৎসাহ দেখান নি; আর সেই সাথে ভবন নির্মাণে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষায়ও দীর্ঘসূত্রিতা চলে। পরিকল্পনার সাব-স্ট্রাকচার নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯০৪ সালে এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় ১৯০৬ সালে।
আর ভবনের উপরি-কাঠামোর নির্মাণকাজ শুরু হয় আরও চার বছর পর ১৯১০ সালে। স্যার উইলিয়ম এমারসন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের নকশা ইতালিয় রেনেসাঁর স্থাপত্যিক রীতিকে অনুসরণ করেই গড়ে তুলেছিলেন, যদিও তাজমহলের সাথে এর সাদৃশ্য বিদ্যমান। এমারসন এটিকে পশ্চিমা ডিজাইন হিসেবে ব্যাখ্যা করলেও এতে ভারতীয় বৈশিষ্ট্যই প্রকাশ পায়। সাদা মার্বেল পাথরে এটি নির্মাণের জন্য লর্ড কার্জন প্রথম থেকেই জোরালো মত প্রকাশ করেন।
এ ছাড়াও এর গঠনপ্রক্রিয়ায় তাজমহলের প্রভাব পরিদৃষ্ট হয়; যেমন, এর গম্বুজ, পার্শ্ববর্তী ক্লাস্টার্ড অষ্টভুজাকার গম্বুজ ছত্রী, সুউচ্চ জাঁকালো প্রবেশ তোরণ, উন্মুক্ত চত্বর, গম্বুজ আচ্ছাদিত কর্নার টাওয়ার ইত্যাদি। এমনকি এই দুই স্থাপত্যের উদ্দেশ্যের মধ্যেও সাদৃশ্য বিদ্যমান। তাজমহলের মতো এটিও এক সম্রাজ্ঞীর স্মৃতির উদ্দেশে নির্মিত। ৬৪ একর জমির উপর লন, পুকুর, গুল্মরাজি ও লতাপাতায় ঘেরা বিশাল উন্মুক্ত অঙ্গনে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল সংস্থাপিত।
কলকাতায় এরূপ মনোরম ও উন্মুক্ত অঙ্গন দ্বিতীয়টি নেই। ভবনটির দৈর্ঘ্য ১০৩.০২ মিটার, প্রস্থ ৬৯.৪৯ মিটার এবং 'অ্যাঞ্জেল অব ভিক্টরি' মূর্তি পর্যন্ত এর উচ্চতা ৫৬.০৮ মিটার। মূর্তিটি আরও ৪.৮৮ মিটার উঁচু। মেমোরিয়াল নির্মাণে ব্যয়িত মোট ১,০৫,০০,০০০ টাকার সবটাই সংগৃহীত হয়েছে ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ও ভারতের দেশীয় রাজন্যবর্গের স্বেচ্ছাপ্রদত্ত অর্থ থেকে। বলা হয়ে থাকে যে, ভবনের সম্পূর্ণ নির্মাণ সামগ্রী বহনের জন্য প্রয়োজন ছিল একটি ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ট্রেনের।
ভবনের সর্বমোট ওজন হিসাব করা হয়েছে ৮০,৩০০ টন এবং ব্যবহূত মার্বেলের মোট পরিমাপ ৪৫০.২৪ ঘন মিটার। মার্বেল সংগ্রহ করা হয়েছিল রাজস্থানের মাকরানা থেকে। এখান থেকেই সম্রাট শাহজাহান তাজমহলের জন্য মার্বেল সংগ্রহ করেছিলেন। প্রাথমিক পর্যায়ে পরিবহণ খরচসহ মার্বেলের মোট মূল্য হিসাব করা হয়েছিল ২৫ লক্ষ টাকা। পরে অবশ্য ভারতীয় রেলবিভাগ পরিবহণ চার্জ দাবি না করলে মার্বেল বাবদ ব্যয় ২ লক্ষ টাকা কমে যায়।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ২৫টি গ্যালারির সমন্বয়ে গঠিত। 'কুইন্স হল'টি আকর্ষণের মূল কেন্দ্র। এর সকল দেওয়ালে মহারানীর ঘোষণা লিপিবদ্ধ। তাঁর স্মৃতি বিজড়িত বিভিন্ন ঘটনার অঙ্কিত চিত্র যেমন- তাঁর সিংহাসনারোহণ, তাঁর বিয়ে, তাঁর পুত্র ও উত্তরাধিকারীর ব্যাপটিস্টকরণ, রাজপুত্রের বিবাহ, ফ্রগমোরে তাঁর বাসভবন ইত্যাদি দ্বারা গ্যালারি সজ্জিত।
রানীর ব্যবহূত কিছু সামগ্রী, যেমন- শৈশবে ব্যবহূত তাঁর পিয়ানো, উইন্ডসোর প্রাসাদে দৈনন্দিন চিঠি-পত্র লেখার জন্য ব্যবহূত তাঁর টেবিল ও চেয়ার, ভারতীয় প্রজাদের উদ্দেশ্যে লেখা তাঁর শেষ চিঠি ইত্যাদি। মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে আরও আছে বিভিন্ন সময়ে ভারতবর্ষে আসা বিখ্যাত ব্রিটিশ নাগরিকদের প্রতিকৃতি; যেমন, মেকলে, কিপলিং, বিশপ হেবার, উইলিয়ম হিকি প্রমুখ। নিজ যোগ্যতায় ভারতীয় কিছু ব্যক্তিও এখানে স্থান করে নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কেশবচন্দ্র সেন, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তাঁর পিতামহ দ্বারকানাথ ঠাকুর।
কিছু দলিল-পত্রও এখানে সংরক্ষিত আছে, এর মধ্যে রয়েছে নন্দকুমারের জালিয়াতি সম্পর্কিত দলিল যার জন্য তাঁকে অন্যায়ভাবে প্রাণদন্ডে দন্ডিত করা হয়। এছাড়াও আছে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের স্মৃতিবাহী বিভিন্ন নিদর্শনাদি, যেমন- রানী মেরী, পঞ্চম জর্জ ও অন্যান্যদের আবক্ষ মূর্তি, ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে দখলকৃত ফরাসি কামান ইত্যাদি। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে প্রধান আকর্ষণীয় বস্ত্ত হলো রানী ভিক্টোরিয়ার বিষণ্ণ বিশাল একটি মূর্তি। এর দুদিকে রয়েছে দুটি সৃদুশ্য জলাশয়। ভারত শাসনকারী অনেক শাসকই রোমান রীতির পরিচ্ছদাবৃত হয়ে এখানে প্রস্তর মূর্তিতে উপস্থাপিত, যেমন- লর্ড ক্লাইভ, ওয়ারেন হেস্টিংস, কর্নওয়ালিস, ওয়েলেসলী এবং লর্ড ডালহৌসী।
এমারসনের নকশা অন্যান্য আরও অনেকের সংযোজন দ্বারা আরও বৈশিষ্ট্যমন্ডিত হয়েছে। ভিনসেন্ট ইস্চের প্রধান অবদান হলো উদ্ভাবনী আদর্শের দ্বারা পরিবর্তিত ভিত্তি-নকশা। তবে তিনি প্রধান প্রবেশ তোরণের ভাস্কর্যসমূহ নির্মাণ, উত্তরাংশের অসাধারণ সেতুর নকশা প্রদান, ফটক ও বাগিচার মনোরম অলঙ্করণও তত্ত্বাবধান করেছিলেন। উত্তর পোর্চের উপরে ভাস্কর্যগুলি মাতৃত্ব, প্রজ্ঞা ও শিক্ষার প্রতীক হিসেবে নির্মিত। প্রধান গম্বুজকে ঘিরে থাকা ভাস্কর্যগুলি শিল্প, স্থাপত্য, ন্যায়বিচার, বদান্যতা ইত্যাদি জ্ঞাপক। প্রশস্ত ও মনোরম বাগান ভবনের সৌন্দর্যকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।