সবচেয়ে বেশি মন্দির ভেঙেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! ভিএইচপি নেতার বক্তব্যে বিতর্কের ইন্ধন
জাতি বিদ্বেষের বিষ ছড়ানো হচ্ছে এই রাজ্যে। বারবার এমনই অভিযোগ করে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী তাঁর অভিযোগ, দেশপ্রেমের নামে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে দাঙ্গা বাঁধানোরও চেষ্টা চলছে।
জাতি বিদ্বেষের বিষ ছড়ানো হচ্ছে এই রাজ্যে। বারবার এমনই অভিযোগ করে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী তাঁর অভিযোগ, দেশপ্রেমের নামে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে দাঙ্গা বাঁধানোরও চেষ্টা চলছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়েছে এই বঙ্গভূমি সব জাতি ও বর্ণের জন্য। এখানে যেমন হিন্দু আছে, তেমনি আছে শিখ, খিস্ট্রান, জৈন, বৌদ্ধ সকলেই। আর এই সমস্ত বর্ণের মিলনেই এই বঙ্গভূমি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের এহেন অবস্থানকে এক্কেবারে নসাৎ করে দিতে চাইছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তাদের অভিযোগ মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় সবচেয়ে বেশি সাম্প্রদায়িক এবং হিন্দু বিদ্বেষী। বৃহস্পতিবার কলকাতায় একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন ভিএইচপি-র আন্তর্জাতিক যুগ্ম সচিব সুরেন্দ্র জৈন। সেখানেই তিনি মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ আনেন।
সুরেন্দ্র জৈন-এর দাবি, গত কয়েক বছরে পশ্চিমবঙ্গে সবেচেয়ে বেশি মন্দির ভেঙেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে হিন্দুদের ভাবাবেগকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুসলিম দরদি বলেও প্রতিপন্ন করতে ছাড়েননি এই ভিএইচি নেতা। মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নেতৃত্বে রাজ্যে এক মৌলবাদী শাসন চলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বিজেপি-র জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহাও বৃহস্পতিবার ভিএইচপি নেতার সুরে সুর মিলিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মৌলবাদী বলে অভিযুক্ত করেন। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে রাহুল সিনহাও ভিএইচপি নেতা সুরেন্দ্র জৈন-এর বক্তব্যে কার্যত সিলমোহর দেন।
রাহুল সিনহা জানান, 'বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ধ্যান-ধারনা এবং দর্শনের সঙ্গে বিজেপি-র সাংগঠনিক এবং ভাবাদর্শের কিছু ফারাক রয়েছে। কিন্তু, এটা অস্বীকার করা যায় না যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মুহূর্তে রাজ্য়ের সবচেয়ে বড় মৌলবাদী।' তিনি অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতটাই হিন্দু বিরোধী যে তিনি মহরমের মিছিলের জন্য় দূর্গাপুজোর নিরঞ্জন স্থগিত করে দেন। রীতিমতো চ্য়ালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েই রাহুল দাবি করেন, এমন এক জন মুসলিমকে আপনার ধরে এনে দেখান যে সে মহরমের মিছিলের জন্য় দূর্গাপুজোর নিরঞ্জন বন্ধ রাখতে বলছে!
এই প্রসঙ্গে টেনেই রাহুল সিনহা আরও বলেন, 'গত বছর রামনবমীর মিছিল-কে ঘিরে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় কোন অবস্থান নিয়েছিলেন তা সকলেরই জানা। এই রাজ্যে রামনবমীর মিছিল বের করা যাবে না, দুর্গাপুজোর নিরঞ্জন নির্দিষ্ট দিনে হবে না, কিন্তু মুসলিমদের সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান একই দিনে হতে হবে, সে ক্ষেত্রে কোনও বদল হবে না '। বিজেপি নেতার মতে এই সব ঘটনাই প্রমাণ করে দিচ্ছে এই রাজ্যে সবচেয়ে বড়় মৌলবাদী, সবচেয়ে বড় মুসলমান হলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। ভিএইচপি নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন তাতে বিজেপি-র পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বলেও জানিয়ে দেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে এমন মন্তব্য়ে আগামী দিনে রাজ্য়-রাজনীতিতে বড়় বিতর্ক তৈরি হতে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও, এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
[আরও পডুন: 'দেশদ্রোহী'-দের আখড়া পশ্চিমবঙ্গ, মমতার সরকারকে তোপ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতার ]