সেনা ইস্যুতে রাজ্যপাল-রাজ্য সরকার সংঘাত জারিই, বিজেপিরও পাল্টা আইনি লড়াইয়ের হুমকি
সেনা ইস্যুতে রাজ্যপালের সঙ্ঘে মমতার সরকারের সঙ্ঘাত জারিই রইল। গতদিন তৃণমূলকে আশ্বাস দিলেও ২৪ ঘণ্টা ঘুরতে না ঘুরতেই বিজেপি-র সুরে সুর মিলিয়েছেন রাজ্যপাল
কলকাতা, ৫ ডিসেম্বর : সেনা ইস্যুতে রাজ্যপালের সঙ্গে মমতার সরকারের সঙ্ঘাত জারিই রইল। গতদিন তৃণমূলকে আশ্বাস দিলেও ২৪ ঘণ্টা ঘুরতে না ঘুরতেই বিজেপি-র সুরে সুর মিলিয়েছেন রাজ্যপাল। ফের এই অভিযোগ আনল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীও বুঝিয়ে দিলেন তিনি টোলপ্লাজায় সেনা সমীক্ষা-কাণ্ডে রাজ্য সরকারের সুরে সুর মেলাতে রাজি নন। তিনি বলেন, 'কেন্দ্রের সুরে নয়, আমি বিবেকের সুরে কথা বলেছি।'
নোটকাণ্ডের পর বিমান-বিভ্রাট ইস্যুতে মোদি সরকারের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংঘাতের মধ্যেই ঘটে যায় রাজ্যের টোলপ্লাজায় সেনা মোতায়েনের বিষয়টি। এই বিষয়টি ভালো চোখে নেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রাজ্যের অনুমতি না নিয়ে সেনা নামানোর বিষয়ে প্রতিবাদ করে নবান্নে রাত পাহারা দেন।
পরদিন সংসদের দুই কক্ষ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রাজ্য-রাজনীতি উত্তাল হয়ে ওঠে। এর মধ্যে বিধানসভা থেকে পদযাত্রা করে তৃণমূল বিধায়করা রাজভবনে ধরনা-অবস্থান করেন। রাজ্যপালের সঙ্গে পরদিন অর্থাৎ শনিবার দেখা করে তাঁদের ক্ষোভ উগরে দেন। এমনকী রাজ্যপালের মন্তব্যের সমালোচনাও করেন।
উল্লেখ্য রাজ্যপাল বলেছিলেন, একজন দায়িত্বশীল নাগরিকের উচিত দায়িত্বশীল সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে গেলে ভালো করে খতিয়ে দেখা। মমতা এর পাল্টা দেন, রাজ্যপাল তো আটদিন বাইরে ছিলেন, তিনি জানবেন কী করে কী ঘটেছে রাজ্যে। তিনি ভালো করে সব দিক খতিয়ে মন্তব্য করুন। এ প্রসঙ্গে মমতা অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকারের সুরে কথা বলছেন রাজ্যপাল। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের বিরুদ্ধে এই মন্তব্যে আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে। তারপর রাজ্যপাল রবিবার বলেন, তিনি কেন্দ্রের সুরে কথা বলেন না, বলেন বিবেকের সুরে। তাই তিনি বলেছেন।
রবিবার ফের রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যান রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। ফলে রবিবারও জারি থাকে সানা ইস্যুতে রণং দেহি মনোভাব। দু'পক্ষের তাল ঠোকার মধ্যেই রাজ্যপাল বুঝিয়ে দেন রাজ্য সরকারের সুরে তিনি কথা বলতে নারাজ। বরং তাঁর অবস্থানে তিনি অটুট থাকছেন।
এদিকে বিজেপি আবার পাল্টা অভিযোগ তুলেছে কালো টাকা পাচারে বাধা পাওয়াতেই সেনা সমীক্ষার বিরোধিতা করছে তৃণমূল। এমনকী বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেনাবাহিনীকে অপমান করেছেন। তাঁরা এই ইস্যুতে হাইকোর্টে যাবেন।
উল্লেখ্য মমতা আগের দিনই আইনি লড়াইয়ের হুমকি দিয়েছিলেন। এবার বিজেপিও আইনি লড়াইয়ের ডাক দিয়ে রাখল। স্মারকলিপির পাল্টা স্মারকলিপি। তারপর আইনি লড়াইয়ের পাল্টা হাইকোর্টে যাওয়ার হুমকি। যুযুধান তৃণমূল বনাম বিজেপি। দিলীপবাবু বলেন, তৃণমূলের হাতে রয়েছে প্রচুর কালো টাকা। সেই টাকা উত্তর-পূর্ব ভারতে পাচার হচ্ছিল। সেনা তল্লাশিতে ভয় পেয়ে গিয়েছে তৃণমূল। তাই সেনাবাহিনীর রুটিন কর্মসূচি আটকাতেও আন্দোলনে সামিল হয়েছে তারা। এই দাবিতেই তাঁরা হাইকোর্টে যাবেন।