স্কুলের ইন্টারভিউতে ডিগ্রি নয়, শরীর নিয়েই বেশি প্রশ্ন! আর যা অভিযোগ এই কর্মপ্রার্থীর
সুচিত্রা-র অভিযোগ, কলকাতাতেই বিভিন্ন স্কুলে ইন্টারভিউ-তে তাঁর শিক্ষকতা যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নের থেকে তাঁর শরীর নিয়েই বেশি প্রশ্ন করা হচ্ছে। তার স্তন,যৌনতা, শিশু জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে
পূর্ববর্তী নাম হিরন্ময় দে। সেক্স রিঅ্যাসাইনমেন্ট সার্জারির পর নাম সুচিত্রা দে। বর্তমানে সুচিত্রা দের শিক্ষার ঝুলিতে ইংরেজি ও ভুগোলে ডাবল মাস্টার্স ডিগ্রি। রয়েছে বিএড ডিগ্রিও। অভিযোগ, শিক্ষকতায় ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও কলকাতায় বছর ৩০-এর সুচিত্রাকে পড়তে হচ্ছে নানা সমস্যায়।
সুচিত্রা-র অভিযোগ, কলকাতাতেই বিভিন্ন স্কুলে ইন্টারভিউ-তে তাঁর শিক্ষকতা যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নের থেকে তাঁর শরীর নিয়েই বেশি প্রশ্ন করা হচ্ছে। তার স্তন, যৌনতা, শিশু জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
সুচিত্রা-র অভিযোগ, এক পুরুষ প্রিন্সিপালের প্রশ্ন ছিল, শারীরিক সম্পর্কে পর তিনি সন্তান ধারনে সক্ষম হবেন কিনা। অন্যদিকে, এক বিখ্যাত স্কুলের মহিলা প্রিন্সিপাল চাকরি চাওয়ায় তাকে মারধরের হুমকি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
কলকাতার নামকরা স্কুলগুলির প্রিন্সিপালরা ইন্টারভিউতে বিষয়ের ওপর প্রশ্ন না করে লিঙ্গ সম্পর্কে অপমানজনক এবং অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করেন বলে অভিযোগ করেছেন সুচিত্রা।
সুচিত্রা জানিয়েছে, তার নিজের স্কুলেই সে অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্নের সম্মুখিন হয়েছিল। সেই থেকে তার মন্তব্য তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়ে মানুষের মনোভাবের এখনও কোনও পরিবর্তন হয়নি। শিক্ষকদের বলা হয় ভবিষ্যতের কাণ্ডারি। যদি শিক্ষিত মানুষের মনোভাব এই ধরনের হয়, তাহলে অন্য মানুষদের কাছ থেকে আর কী আশা করা যেতে পারে? প্রশ্ন তুলেছে সুচিত্রা।
সুচিত্রা দে নিজেও পশ্চিমবঙ্গের এলজিবিটি ফোরামের সক্রিয় সদস্য। সমাজের কাছে তাদের মতো মানুষদের আরও বেশি করে সুযোগ দেওয়ার আবেদন করেছে সুচিত্রা।
নিজেকে ভারতের অন্যতম শিক্ষিত তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য হিসেবে দাবি করে পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশনের কাছে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন।
সমাজে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়ে শোষণ চলে। অনেক সময় পরিবারের সদস্যরাই তাদের বাড়ির বাইরে বের করে দেন। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অনেককেই চাকরির সুযোগ দেওয়া হয় না। ফলে তারা বলপূর্বক পতিতাপল্লীতে যুক্ত হয় কিংবা ভিক্ষা করে কিংবা অনুষ্ঠান বাড়িতে নাচতে দেখা যায় এই ধরনের মানুষদের।
ঠাকুরপুকুরের মাকে নিয়ে থাকে সুচিত্রা দে। তিনিও বৃদ্ধ। তাই বেঁচে থাকতে তাঁর একটা চাকরি জরুরি বলেই জানিয়েছে সুচিত্রা দে। তাঁর প্রশ্ন, যদি সমাজের প্রত্যেক অংশই তাদের বাতিল করে দেয়, তাহলে এই ধরনের মানুষেরা বাঁচবে কী ভাবে, উঠছে প্রশ্ন।