মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে বৃ্দ্ধাঙ্গুষ্ঠ, হাসপাতালে হাসপাতালে ঘোরাই সার, জোড়া লাগল না কাটা পা
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ। রোগী নিয়ে হাসপাতালের দরজায় দরজায় ঘোরার চিত্রই প্রকট রাজ্যে। গ্রাম থেকে শহর সর্বত্রই একই চিত্র।
কলকাতা, ১৬ মার্চ : মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ। রোগী নিয়ে হাসপাতালের দরজায় দরজায় ঘোরার চিত্রই প্রকট রাজ্যে। গ্রাম থেকে শহর সর্বত্রই একই চিত্র। বুধবার দিনভর প্রত্যাখ্যানের সাক্ষী থাকল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির এক পরিবার। দুর্ঘটনায় কাটা যাওয়া পা নিয়ে হয়রানির শিকার রোগীর পরিজন। দুই বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হলেন রোগী। ১৪ ঘণ্টা পর অপারেশন হলেও ঘুচল না হতাশা। কাটা পা আর জোড়া লাগল না।[বেসরকারি হাসপাতালের 'অসুখ' সারাতে কড়া 'প্রেসক্রিপশন' মমতার, নয়া বিল পাস বিধানসভায়]
কুলতলির মৈপীঠের বাসিন্দা সুনীল পাত্র। কাঁকড়া ব্যবসায়ী মোটর সাইকেলে করে বাজারে আসার সময় লরির ধাক্কায় একটি পা কাটা পড়ে তাঁর। সুনীলকে উদ্ধার করে গ্রামের হাসপাতাল হয়ে সটান কলকাতায় চলে আসেন পরিজনরা। সঙ্গে প্ল্যাস্টিকে মোড়া কাটা পা। আশা ওই পা জোড়া লেগে আবার সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবেন সুনীল।[দিল্লিতে ৩০ ধরনের অস্ত্রোপচার বিনামূল্য হতে চলেছে, ঘোষণা দিল্লি সরকারের]
কিন্তু কলকাতায় এসে চরম অমানবিকতার সাক্ষী থাকতে হল সুনীলের পারিবারকে। মুখ্যমন্ত্রী কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন, মুমূর্ষু রোগীকে ফেরানো যাবে না। আগে চিকিৎসা, পরে বিল করতে হবে। কিন্তু কে শোনে কার কথা? যতই মুখ্যমন্ত্রী বলুন, বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে সেই একই পথে। যেতেই বিল ধরিয়ে দেওয়া হল। ভর্তি হতে ৫০ হাজার টাকা। টাকা দিলে তবেই ভর্তি।[হাসপাতাল কসাইখানা নয়, গরিব মানুষকেও সেবা দিতে হবে, নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর]
অত টাকা দেওয়ার ক্ষমতা না থাকায় মুমূর্ষু রোগীকে নিয়ে পরিজনরা ফিরল সরকারি হাসপাতালে। আরজিকর হয়ে এসএসকেএম। সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি থাকা সত্ত্বেও অপেক্ষার অন্ত নেই। বিকেল চারটে থেকে সেই যে অপেক্ষার প্রহর গোনা শুরু হয়েছিল ছ'ঘণ্টা পর রাত দশটায় ভর্তি নেওয়া হল এসএসকেএমে।[১ লক্ষ টাকার প্যাকেজে ভর্তি করিয়ে ৪০ দিনে বিল ২৫ লক্ষ! বিতর্কে অ্যাপোলো]
তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। কোন ওয়ার্ডে ভর্তি হবে, তা নিয়ে বিতর্কের পর যখন তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল অপারেশন টেবিলে, তখন কেটে গিয়েছে সব মিলিয়ে ১৪ ঘণ্টা। কাটা পা আর জোড়া লাগল না। চূড়ান্ত হতাশ হয়েই ফিরতে হল পরিজনদের। এখন রোগীর জীবন নিয়ে ফিরতে পারলেই বাঁচে তাঁরা।[হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর পা কেটে বাদ! চিকিৎসা গাফিলতিতে ফের রোগী মৃত্যু শহরের হাসপাতালে]