টিএমসিপির দাদাগিরি, ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজ
কলকাতা, ৪ অক্টোবর : এবার ছাত্রবিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠল আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজ। অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করে ছাত্রছাত্রীরা। মঙ্গলবার বিকেল থেকে মিন্টোপার্কে কলেজ গেট বন্ধ করে তৃণমূল পরিচালিত ইউনিয়নের প্রত্যক্ষ সমর্থনে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি চলে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, রাজ্যের কলেজগুলি এখন তৃণমূল স্টুডেন্ট ইউনিয়নের দাদাগিরিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে।
শেষপর্যন্ত পুলিশি হস্তক্ষেপে কলেজ ক্যাম্পাস ছাড়তে হয় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা যশোধরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অধ্যাপক-অধ্যাপিকারাও পুলিশি ঘেরাটোপে কলেজ থেকে বের হন। এক অধ্যাপিকার গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। আগামীকাল অর্থাৎ বুধবার কলেজে বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেই ভর্তি সংক্রান্ত আলোচনা হবে।
ছাত্রছাত্রীদের দাবি, ১০৯ জন ছাত্রছাত্রীকে প্রথম বর্ষে ভর্তি নিতে হবে। ইউনিয়নের কোটায় তাদের ভর্তি করতে হবে বলে দাবি তোলা হয়। যদিও রাজ্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভানেত্রী জয়া দত্ত বলেন, মেধার ভিত্তিতেই ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে। কোনোভাবেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দাদাগিরি বরদাস্ত করা হবে না। এদিন ছাত্রছাত্রীদের এই বিক্ষোভের জেরে কোনও ছাত্রছাত্রী বের হতে পারেনি কলেজ থেকে। সংবামাধ্যমকেও কলেজে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এরপর বিশাল পুলিশবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অধ্যক্ষ-অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের মুক্ত করে। ছাত্রছাত্রীরাও বের হতে পারে কলেজ থেকে।
এর আগে স্কটিশচার্চ কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আজই ওই কলেজ খুলেছে। কাল থেকে শুরু হবে পঠনপাঠন। স্কটিশচার্চেও ছাত্র বিক্ষোভের অভিযোগ উঠেছিল। তারই জেরে কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কর্তৃপক্ষের তরফে। শেষপর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে গভর্নিং বডির মিটিংয়ে সমাধান সূত্র বের হয়। কলেজ খোলে। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছিল জয়পুরিয়া কলেজেও।
কেন বারবার রাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে অচলাবস্থার তৈরি হচ্ছে? আর প্রতিটি ক্ষেত্রেই কাঠগড়ায় তৃণমূলের ইউনিয়ন। নিজেদের প্রভাব খাটাতেই যে বারবার কলেজ কর্তৃপক্ষকে টার্গেট করা হচ্ছে, সেই অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনীতির মূল্য দিতে হচ্ছে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের। অধ্যক্ষের বিক্ষোভ-বন্দি হয়ে থাকাই যেন এখন সার কথা হয়ে উঠেছে রাজ্যের কলেজগুলিতে।