মমতার দলের সাংসদই ফের সেরা, তাঁর উদ্যমের কাছে হেলায় হার মানছে নবীনের দল
এখনও তিনিই সেরা। সেই ১৯৭৭ সাল থেকে ২০১৮- সময়টা তো আর নেহাত কম নয়। কিন্তু সেরা হওয়ার উদ্যম তাঁর এখনও সমান। যার জেরে তিনি হয়ে চলেছেন সেরা। রাজ্যের সেরা সাংসদ।
এখনও তিনিই সেরা। সেই ১৯৭৭ সাল থেকে ২০১৮- সময়টা তো আর নেহাত কম নয়। কিন্তু সেরা হওয়ার উদ্যম তাঁর এখনও সমান। যার জেরে তিনি হয়ে চলেছেন সেরা। রাজ্যের সেরা সাংসদ। সব বিচারেই তাঁর ধারে-কাছে নেই নতুনরা। গত লোকসভাতেও সেরা ছিলেন সৌগত রায়। এবারও সবার উপরে তৃণমূলের অধ্যাপক-সাংসদ।
পারফরম্যান্সে চমক
তিনি সৌগত রায়। তৃণমূল সাংসদ। ১৯৭৭ সাল থেকে তিনি শুরু করেছিলেন তাঁর সংসদীয় জীবন। তখন তিনি ছিলেন কংগ্রেস। এখন তৃণমূলের টিকিটে লোকসভার সদস্য হয়ে হাজিরা-বিতর্ক-প্রশ্নোত্তর পর্ব থেকে শুরু করে অর্থ খরচ, উন্নয়নমূলক কাজ- সবকিছুতেই তিনি সেরা। লোকসভায় তাঁর পারফরম্যান্স চমকে দেওয়ার মতোই।
বাকি ৪১-কে টেক্কা
পঞ্চদশ লোকসভাতেও তিনি ছিলেন সেরা। এবারও তিনি অপেক্ষাকৃত নবীনদের হারিয়ে তাঁর পারফরম্যান্স সবার উপরে। রাজ্যে ৪২ জনের মধ্যে সামগ্রিক বিচারে এক নম্বরে তাঁর নাম। হাজিরার মানদণ্ডে শুধু তাঁর থেকে এগিয়ে রয়েছেন রাজ্যের কংগ্রেস সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়।
বিতর্কে ডাবল
আশুতোষ কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক সৌগত রায় মোট ২১২টি বিতর্কে অংশ নিয়েছেন। এ ব্যাপারে সৌগত রায়ের পরেই রয়েছেন সিপিএম সাংসদ বদরুদ্দোজা খান। তিনি সৌগত রায়ের থেকে বেশ খানিকটা পিছিয়ে ১৬৫টি বিতর্কে অংশ নিয়েছেন।
প্রশ্নে সেরা, হাজিরায় দ্বিতীয়
প্রশ্নোত্তর পর্বেও এগিয়ে তিনি। গত বিধানসভা অধিবেশন পর্যন্ত মোট ৫৩৩টি প্রশ্ন করেছেন তিনি। মোট পাঁচটি প্রাইভেট মেম্বার বিল পেশ করেছেন। অধিবেশনের হাজিরাতেও তিনি রয়েছেন প্রথম সারিতে। এ ব্যাপারে সবার থেকে এগিয়ে কংগ্রেস বিধায়ক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। তাঁর হাজিরা ৯৭ শতাংশ। আর সৌগত রায়ের হাজিরা ৯০ শতাংশের উপরে।
অর্থ বরাদ্দ ও উন্নয়নে
এমপি ল্যাডের অর্থ খরচ ও উন্নয়ন পরিকল্পনাতেও তিনি উপরের সারিতে। পাঁচ বছরে এমপি ল্যাডের যে ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়, তার মধ্যে ২৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার সুপারিশ করেছেন। ২২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা রিলিজও হয়ে গিয়েছে। সেই অর্থের ৯০ শতাংশ ইতিমধ্যে খরচও হয়ে গিয়েছে।
শিক্ষার প্রগতিতে
নিজে একজন শিক্ষাবিদ। তাই শিক্ষার প্রসারে তিনি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন। সংসদে উল্লেখ্যযোগ্য সুপারিশ করেছেন। নিজের লোকসভার অন্তর্গত এলাকা উন্নয়নে ১০৯টি প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। শিক্ষাক্ষেত্রে নার্সারি স্কুলের পরিকাঠামো সহ ৬৯টি প্রকল্প গ্রহণ করেছেন সৌগত রায়।
কেন সেরা
সৌগত রায় বলেন, সবকাজই সিরিয়াসলি নিই। লোকসভার অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে পছন্দ করি। পছন্দ করি বিতর্কে অংশ নিতে। আমার কোনও সহকারী নেই। সমস্ত বিতর্কের প্রস্তুতি নিজে থেকেই নিই। প্রশ্নোত্তর পর্বেরও জন্যও তৌরি করি নিজেকে।
কীভাবে প্রস্তুতি
সৌগতর কথায়, তথ্য জানা দরকার। সেজন্য বিভিন্ন সংবাদপত্র খুঁটিয়ে পড়ি, তথ্য সংগ্রহ করি। লোকসভা থেকেও তথ্য নিই। তথ্য না থাকলে বিতর্কে অংশ নেওয়া যাবে না। পড়াশোনা করা দরকার। সেটা করি নিয়মিত। বিতর্কে অংশ নেওয়ার আগে হোমওয়ার্ক মাস্ট।
[আরও পড়ুন: মমতার কাজের প্রশংসায় রাজনাথ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধন্যবাদ জ্ঞাপনে বিপাকে রাজ্য বিজেপি]
ক্লান্তি আমার ক্ষমা কর
সৌগত নিজেই বলেন, নিজেকে কখনও ক্লান্ত মনে করি না। প্রার্থনা করি, আমার যেন কোনও ক্লান্তি না আসে। যেন নিজের লোকসভার কাজ সামলে সংসদের কাজে নিজেকে মেলে দেওয়ার সামর্ত থাকে। সংসদে যত বেশি সম্ভব সময় দেওয়ার চেষ্টা করি সংসদকে। ভগবানের অসীম করুণা, আমার এখনও কোনও ক্লান্তি আসেনি।
নজরে ২০১৯
সময়ের নিয়মেই সংসদে নবীন প্রজন্মের প্রতিনিধি বাড়ছে। তাঁর সময়ের এমপি কমছে। তবু নবীনের মধ্যে দাঁড়িয়ে তিনি সেরা পারফরম্যান্স করে চলেছেন। বছর ঘুরলেই ভোট। পারফরম্যান্সে সৌগত নিশ্চিত করেছেন, তিনি নবীনদের দলে আবারও ব্যাট ঘোরাবেন। এবং এখনও সেরা হবেন। তাই ২০১৯-এও অ্যাডভান্টেজ সৌগত।
[আরও পড়ুন:বিজেপির একগুচ্ছ নালিশের মধ্যেই রাজনাথ মমতার মুখোমুখি, রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ]