বাবা-ছেলের লুকোচুরি ধরা পড়ে গিয়েছে! মুকুল-শুভ্রাংশুকে নিয়ে বেসুরো তৃণমূলেরই মন্ত্রী
মুকুল রায় ও শুভ্রাংশু রায় পরিকল্পনা করেই এই খেলা শুরু করেছিলেন। তিনি বিজেপিতে গিয়ে ছেলেকে তৃণমূলে রাখতে চেয়েছিলেন। এই ডুয়েল গেম ধরে ফেলেছেন রাজ্যের মানুষ।
মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের গতিবিধি নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল তৃণমূলের অন্দরেই। তৃণমূলের মন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবার সরব হলেন মুকুল-পুত্রকে নিয়ে। ফলে শুভ্রাংশুকে নিয়ে জল্পনা আরও বাড়ল। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মন্তব্যে শুভ্রাংশু রায়ের বিজেপিতে যাওয়া এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। তবে এ প্রসঙ্গে শুভ্রাংশুর কোনও বিবৃতি মেলেনি।
[আরও পড়ুন:অভিষেককে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে! প্রাক্তনী মুকুলের নয়া চালে আরও বিপাকে 'যুবরাজ']
শুক্রবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, 'বাবা-ছেলের লুকোচুরি খেলা শুরু হয়েছে। কিন্তু সেই খেলা ধরা পড়ে গিয়েছে মানুষের কাছে। মুকুল রায় দলে থেকেই বিজেপি-র সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। দল বুঝতে পেরে সাবধান করতেই তিনি পদ্মশিবিরে যোগ দিয়েছেন।'
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অভিযোগ, 'মুকুল রায় ও শুভ্রাংশু রায় পরিকল্পনা করেই এই খেলা শুরু করেছিলেন। তিনি বিজেপিতে গিয়ে ছেলেকে তৃণমূলে রাখতে চেয়েছিলেন। এই ডুয়েল গেম ধরে ফেলেছেন রাজ্যের মানুষ। ধর্মতলার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের সমাবেশে শুভ্রাংশুর অনুপস্থিতিই অনেক কিছুই প্রমাণ করে দিয়েছে।'
উল্লেখ্য, তৃণমূলের সমাবেশে শুভ্রাংশুর গরহাজিরার পর থেকেই নানা জল্পনা শুরু হয়। বাবার পথ ধরেই শুভ্রাংশু বিজেপিতে যাচ্ছেন বলে রটনা শুরু হয়ে যায়। এরই মধ্যে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ধোঁয়াশা তৈরি করেন তাঁর মন্তব্যে। তিনি বলেন, 'শুভ্রাংশু আসতে চাইলে, বিজেপিতে তাঁকে স্বাগত। বাবা-ছেলে একসঙ্গে বিজেপিতে থাকবে। তারপর বলেন, শুভ্রাংশুকেই ঠিকর করতে হবে, সে বাপের দিকে থাকবে, নাকি পিসির দিকে।'
পরদিন আবার মুকুল রায় বলেন, 'শুভ্রাংশু সাবালক। সে নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এতদিন সে নিজেই তার নিজের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবারও তা-ই নেবে।' বাবা-ছেলের দু'দলে থাকা প্রসঙ্গে তিনি উদাহারণ হিসেবে সিন্ধিয়া পরিবারের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন। তুলে ধরেন রাজমাতা গায়ত্রী দেবীর বিরুদ্ধে মাধবরাও সিন্ধিয়ার দাঁড়ানোর প্রসঙ্গও।
কিন্তু মুকুল রায়ের এইসব কথাকে আমল গিতে নারাজ জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেন, 'বাবা-ছেলে পরিকল্পনা করেই এসব করে বেড়াচ্ছেন বলে এখন ক্রমশ সন্দেহ দৃঢ় হচ্ছে। কিন্তু তাঁদের এসব চক্রান্ত ধরা পড়ে গিয়েছে। বাংলার মানুষই তাঁদের যোগ্য জবাব দিয়ে দেবে। তার জন্য কয়েকটা দিন অপেক্ষা করে যান। উত্তর পেয়ে যাবেন মুকুল রায়, উত্তর পেয়ে যাবে বিজেপিও।'
যদিও শুভ্রাংশু রায় প্রথম থেকেই বলে যাচ্ছেন তিনি তৃণমূলে রয়েছেন, তৃণমূলেই থাকবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আদর্শ মেনেই তিনি প্রবেশ করেছেন রাজনৈতিক ক্ষেত্রে। তাঁকে সামনে রেখে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগার মঞ্চ সাজানো হওয়ায় তিনি অনুপস্থিত থাকেন বলে শুভ্রাংশুর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা গিয়েছে। কেননা যতই হোক মুকুল রায় তাঁর বাবা। সামনে থেকে বাবার অপমান সহ্য করা কোনও ছেলের পক্ষেই সম্ভব ছিল না।
[আরও পড়ুন:নারদকাণ্ডে মুকুল-যোগ নিয়ে এবার 'পুনর্নির্মান'! অপেক্ষায় সিবিআই]