সেনা ইস্যুতে কেন্দ্র সরকারের পাশাপাশি রাজ্যপালের বিরুদ্ধেও নালিশ তৃণমূলের
‘রাজ্যপালের মন্তব্য এমন হওয়া কাম্য নয়, যা মনে হবে তিনি বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আমরা বলেছি, আপনি ও ধরনের মন্তব্য করলেন কী করে? আপনি তো কলকাতায় ছিলেন না গতদিনে। আপনি জানেনই না কী ঘটেছে।
কলকাতা, ৩ ডিসেম্বর : রাজ্যে সেনা মোতায়েন নিয়ে রাজ্যপালের বিবৃতিতে প্রশ্ন তুলল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। শনিবার রাজভবন থেকে বেরিয়ে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বললেন, রাজ্যপালের মন্তব্য নিয়ে আমরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছি। সেইসঙ্গে বলেছি, মোদী সরকার সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে। আমরা সেনাবাহিনীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার সেই সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করছে।
আমরা স্মারকলিপিতে আমাদের সেই প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমাদের আবেদন, বিষয়টি রাজ্যপাল মোদী সরকারকে জানান। আমাদের চিঠি তাঁর মাধ্যমে মোদি সরকারের কাছে পাঠানো হোক। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। আমাদের অভিযোগ, আমাদের দাবি তিনি মোদী সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেবেন। পার্থবাবুর আরও অভিযোগ, গণতন্ত্র ধ্বংস করছে মোদী সরকার। সেনাকে ঢাল করে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় আঘাত করছে। রাজ্যকে না জানিয়ে সেনা নামানো হয় রাজ্যে। গণতন্ত্রের পক্ষে এটা ঠিক নয়।
এদিন তৃণমূল প্রতিনিধ দলের সঙ্গে বৈঠকের আগে রাজ্যপাল মন্তব্য করেন, যে কোনও দায়িত্বশীল নাগরিকের উচিত দায়িত্বশীল সংস্থার প্রতি খতিয়ে দেখে অভিযোগ করা। এই মন্তব্যের সমালোচনা করে তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের পক্ষে পার্থবাবু বলেন, রাজ্যপালের মন্তব্য এমন হওয়া কাম্য নয়, যা মনে হবে তিনি বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আমরা বলেছি, আপনি ও ধরনের মন্তব্য করলেন কী করে? আপনি তো কলকাতায় ছিলেন না গতদিনে।আপনি জানেনই না কী ঘটেছে।
রাজ্যে সেনা নামানোর প্রতিবাদে আজ শনিবার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূল বিধায়কদের একটি প্রতিনিধি দল। পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর হাতে স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়। এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, শোভন চট্টোপাধ্যায়, পূর্ণেন্দু বসু, নির্মল ঘোষ প্রমুখ।
গতকালই বিধানসভা থেকে রাজভভন পর্যন্ত পদযাত্রা করেন তৃণমূল বিধায়করা। রাজভবনের সামনে মুখে কালো কাপড় বেঁধে ধরনায় সামিল হন তাঁরা। এরপর পার্থবাবু রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের অনুপস্থিতিতে তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তখনই স্থির হয় আজ রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনার দিনক্ষণ।
রাজ্যের টোলপ্লাজাগুলিতে গত দু'দিন ধরে সেনা নামিয়ে তথ্য-তালাশ চালানো হয়েছে। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকে অন্ধকারে রেখে এই কাজ করায় মুখ্যমন্ত্রী প্রতিবাদ জানাতে বৃহস্পতিবার রাতভর নবান্নে কাটান। শুক্রবার রাতের মধ্যে অধিকাংশ টোলপ্লাজা থেকে সেনা সরে যাওয়ায় ৩০ ঘণ্টা নবান্নে কাটানোর পর বাড়ি ফেরেন মুখ্যমন্ত্রী। পার্থবাবু বলেন, নোটকাণ্ডে প্রতিবাদে সামিল হওয়াতেই সেনা নামিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা সেনাদের সম্মান করি। কিন্তু সেনাদের যদি বেআইনি কাজে ব্যবহার করে কোনও সরকার তার নিন্দাও করি।'