করোনার দোসর লাদাখে ভারত-চিন দ্বন্দ্ব, চায়না টাউনের বাসিন্দাদের কার্যত একঘরে করেছে কলকাতা
পিছু ছাড়ছে না করোনা সঙ্গে দোসর চিনা সঙ্কট, চায়না টাউনের বাসিন্দাদের কার্যত একঘরে করেছে কলকাতা
'করোনা’ ডাক পিছু ছাড়তে না ছাড়তেই এখন চিন-ভারত সংঘাতের আবহে নতুন সঙ্কট কলকাতার চায়না টাউনের মানুষদের। সূত্রের খবর, গালওয়ানে সেনা সংঘর্ষের পর থেকেই ভারতের মধ্যে থেকেও কোনও এক অদৃশ্য হাতছানিতে কারা যেন একঘরে করে দিয়েছে কলকাতার চায়না টাউনের প্রায় ৫০০০ বাসিন্দাকে।
কার্যত একঘরে হয়ে দিন কাটাচ্ছেন ট্যাংরার চিনা বসতির মানুষেরা
কলকাতার ট্যাংরার এই চিনা বসতি শহরের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী স্থান। বহু বছর আগে চিনের বহু মানুষ কর্মসূত্রে বা ব্যবসার কারণে এখানে চলে আসেন। আর তারপরে সন্তান-সন্ততিরা নিয়ে এখানেই থেকে যান। কালক্রমে এই জায়গার নাম হয় চায়না টাউন । বর্তমানে করোনা সঙ্কট ও চিন ভারত সঙ্কটের জেরে শহরের সহ-নাগরিকরাই এখন তাদের কার্যত অচ্ছুৎ করে দিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।
করোনা ও চিন সঙ্কটের আবহে কার্যত দিশেহারা চায়না টাউনের বাসিন্দারা
সূত্রের খবর, করোনা সঙ্কটের শুরুতে কোনও রকমে চললেও বর্তমানে তাদের রেস্তোরাঁ গুলি কার্যত জনশূন্য। এই চিনা বংশোদ্ভূত ভারতীয় নাগরিকেরা একপ্রকার ভয়েই এখন বেশিরভাগ সময় নিজ নিজ পাড়ায় দিন কাটাচ্ছেন বলে জানা যাচ্ছে। অন্যত্র বেরোলেই শুনতে হচ্ছে গালিগালাজ। জুটছে মারধর। লাদাখ সংঘর্ষের পর থেকেই চায়না টাউনের সর্বত্রই আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা গ্রাস করেছে। কয়েকদিন আগে চিনা দ্রব্য বয়কটের পাশাপাশি কলকাতায় বসবাসকারী চিনা বাসিন্দাদেরও বিতাড়িত করার ডাক দিয়েছিলেন কিছু ‘অত্যুৎসাহী দেশপ্রেমী'।
ভারত মাতার জয়ধ্বনি দিয়ে রাস্তা চায়না টাউনের বাসিন্দারা
এদিকে দেশের মানুষেরাই যাতে তাদের ভুল না বোঝে তাই গত সপ্তাহেই চিনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে জমায়েতের ডাক দেন চায়না টাউনের বাসিন্দারা। গত শনিবার সকালে কলকাতার চায়না টাউনের সামনে ভারত মাতার নামে জয়ধ্বনি দিয়ে চিনা আগ্রাসনের নিন্দা করলেন কলকাতার চিনা-মহল্লার বাসিন্দারা। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে এসেই তাঁরা আর্জি জানান, ‘আমরাও ভারতীয় নাগরিক। আমাদের দয়া করে গালাগালি দেবেন না। ভুল বুঝবেন না।'
ক্ষোভ-আবেগ মিশিয়ে ভারত প্রেমের কথা জানান চায়না টাউনের বাসিন্দারা
এদিকে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তরফে আয়োজিত চায়না টাউনের মানুষদের ওই জমায়েতে এসে অনেকেই ভারতের প্রতি নিজের ভালোবাসা ও আবেগনূভূতি প্রকাশ করতে দেখা যায়। বর্তমান সঙ্কট প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে চায়না টাউনের বাসিন্দা ৬৫ বছরের লি ইয়াও সিয়েন বলেন, "আমরা এখানের ভোটার এবং আমরা বেশিরভাগই এখানেই জন্মগ্রহণ করেছি। তবে এখনও কিছু অশিক্ষিত ও বিকৃত মনষ্ক মানুষ রয়েছেন যারা দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি জানে না। তারাই এখন আমাদের দেখতে পেলে স্লোগান দিতে বলে, আমাদের চিনে ফিরে যেতে বলে।" আর একজন বলেন, "এখানে আমাদের তিন প্রজন্মের বসবাস। আমরা আপনাদের মতোই ভাত-ডাল-রুটি খাই। আমাদেরও কালি মন্দির আছে। এই দেশ, এই শহর আমাদের মাতৃসম।"
মুকুলকে আর দেখা যাবে না বিজেপি অফিসে! জল্পনার পারদ আরও চড়ল একুশের আগে