গঙ্গার গ্রাসে মালদহ! চোখের সামনে বসতবাড়ি তলিয়ে যাচ্ছে নদীতে, হাহাকার বাসিন্দাদের
এবারও ফের বন্যার আতঙ্কে কাঁপছে মালদহ। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে গঙ্গা। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে ভাঙন। বিঘার পর বিঘা জমি গঙ্গার গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে।
এবারও ফের বন্যার আতঙ্কে কাঁপছে মালদহ। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে গঙ্গা। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে ভাঙন। বিঘার পর বিঘা জমি গঙ্গার গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। গঙ্গার গ্রাসে মালদহের রতুয়া ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রায় দু'হাজার পরিবারের গৃহহীন হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তাঁদের নিরাপদ আশ্রয়ে স্থানান্তরিত করছে প্রশাসন।
একদিকে গঙ্গার ভাঙন, আর অন্যদিকে ভারী বৃষ্টির পূর্বভাস। দুয়ে মিলে শাঁখের করাতে পড়েছে মালদহের রতুয়া ব্লকে। প্রতিদিনই গঙ্গার গ্রাস কেড়ে নিচ্ছে বসতবাড়ি, চাষযোগ্য জমি। ইতিমধ্যেই রতুয়া ব্লকের বিলাইমারি, নয়াবিলাইমারি, খাসচামনা, জঙ্গলিটোলা-সহ প্রতিবেশী গ্রামের একশো হেক্টরেরও বেশি জমি গঙ্গার গ্রাসে চলে গিয়েছে। নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়িও। এই অবস্থায় প্রশাসনের তরফে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার মালদহ সেচ দফতরের আধিকারিকরা এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয় লোকজনকে নিরাপদ অবস্থান সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ যে কোনও মুহূর্তে রাতের ভাঙনে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে ওই সমস্ত বাড়ি-ঘরও। অনেকেই আতঙ্কে ঘরছেড়ে অস্থায়ী বাসা বেঁধেছে নদীবাঁধে। প্রশাসনের তরফেও ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রশাসনের আশঙ্কা, যে কোনও মুহূর্তে গ্রামে ঢুকে পড়তে পারে নদী। ওই এলাকায় এতটাই খরস্রোতা গঙ্গা যে, ভাঙন সাংঘাতিক রূপ নিয়েছে। এমনিতেই উত্তরবঙ্গে অবিরাম বৃষ্টির জেরে নদীগুলি ফুঁসছে। তিস্তা-তোর্সার জলে জলপাইগুড়িতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হিমালয় লাগোয়া উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা হয়ে যাওয়ায়, সেই জল নেমে ডুবিয়ে দিতে পারে সমতলের জেলাগুলিকে।
গতবার এই সাঁড়াশি চাপেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল দুই দিনাজপুর ও মালদহে। পাহাড়ের জল নেমে ভাসিয়ে দিয়েছিল উত্তরবঙ্গের নিতের জেলাগুলিকে। একদিকে পাহাড়ের জল, অন্যদিকে গঙ্গার ভাঙন আর উপরে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে এখন দিশেহারা অবস্থা মালদহে। উদ্ধারকার্য চালাতেও হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন।