ভারতের মধ্যে প্রথম কলকাতার কোভিড যুবতী ইসিএমও–এর সহায়তায় সুস্থ হয়ে উঠলেন
ভারতের মধ্যে প্রথম কলকাতার কোভিড যুবতী ইসিএমও–এর সহায়তায় সুস্থ হয়ে উঠলেন
এক ২৪ বছরের স্থুলকায় যুবতী দাবি করেছেন যে তিনি দেশের প্রথম কোভিড–১৯ রোগী যিনি করোনাকে পরাস্ত করেছেন এবং এক্সট্রাকর্পোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন (ইসিএমও) সহায়তা নিয়ে ছিলেন গত ১২ দিন, তারপরই সুস্থ হয়ে ওঠেন। তিনি কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
কোভিড রোগীদের জন্য শেষ বিকল্প ইসিএমও
হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে ভেন্টিলেটরের সহায়তায় কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা নিয়মিত পরিচালনা করা সর্বদা সম্ভব নয় এবং ইসিএমও তাদের জন্য শেষ বিকল্প। যদিও হাসপাতালের পক্ষ থেকে এও জানানো হয়েছে যে ইসিএমও দেওয়ার পরও দিল্লি ও চেন্নাইয়ের তিনজন করোনা রোগীকে বাঁচানো যায়নি।
যুবতীর অবস্থা সঙ্কটজনক ছিল
ওই যুবতী কলকাতার কালিঘাটের বাসিন্দা এবং ওজন প্রায় ১০০ কেজি। ১৭ মে তিনি জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, ‘আমরির জরুরি বিভাগে যখন তাঁকে প্রথম নিয়ে আসা হয় তখন চিকিৎসকরা দেখেন তাঁর অক্সিজেন স্তর ৩৪ শতাংশ নেমে গিয়েছে, যা চিকিৎসকদের কাছে গভীর উদ্বেগের বিষয় ছিল।' যদিও তাঁর কোনও অন্য অসুস্থতা ছিল না। চিকিৎসকদের মনে হয়েছিল তাঁর এই গুরুতর অবস্থার পেছনে স্থুলতাই দায়ি। হাসপাতালের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘তিনি ১০ মে থেকে উচ্চ জ্বর ও গলা ব্যাথায় ভুগছিলেন। যদিও তাঁর জ্বর কমে যায় এবং ফের পরে জ্বর চলে আসে এবং তিনি তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগতে শুরু করেন। তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয় এবং তাঁর অবস্থার অবনতি হতে শুরু করলে পরের দিন তাঁকে ইসিএমও-তে রাখা হয়।'
কলকাতার যুবতীর জন্য সফল ইসিএমও
আমরি হাসপাতালের ইসিএমও বিশেষজ্ঞ ডাঃ সোহম মজুমদার বলেন, ‘তাঁকে ইসিএমও ও ভেন্টিলেটর উভয় থেকেই বের করে আনা হয় এবং তাঁর বেঁচে থাকা কোভিড-১৯-এর ক্লিনিক্যাল পরিচালনার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।' যদিও এখানে উল্লেখযোগ্য যে দিল্লির এইমসের দু'জন রোগী ও চেন্নাইয়ের বেসরকারি হাসপাতালের এক রোগীকে ইসিএমও-তে রাখা হয়েছিল, কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই কোভিড-১৯-এর তিন রোগী মারা যায়।
ইসিএমও সঙ্কটজনক সময়ে সহায়ককারী
আমরি ক্রিটিকাল কেয়ার ও ইন্টারনাল মেডিসিনের বরিষ্ঠ পরামর্শদাতা ডাঃ মহুয়া ভট্টাচার্য বলেন, ‘২৪ বছরের ওই রোগীর কেসে তাঁকে ইসিএমও দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছিল এবং তাঁকে মৃত্যু মুখ থেকে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করেছে।' একটি আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল জানার্লে প্রকাশিত এক সমীক্ষা বলছে, করোনা ভাইরাসে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জীবনের একটি বড় হুমকি হল তাদের ফুসফুস কাজ করা বন্ধ করে দেয় এবং মস্তিষ্ক ও অন্যান্য জটিল অঙ্গগুলিতে রক্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন সঞ্চালন করতে ব্যর্থ হয় এবং ইসিএমও মেশিনগুলি এই সময় সহায়ককারী হয়ে ওঠে। যদিও বৃদ্ধ করোনা ভাইরাস রোগীদের ক্ষেত্রে ইসিএমও সাহায্য করতে পারবে না।
৩১ জুলাইয়ের মধ্যে শুধুমাত্র দিল্লিতেই করোনা আক্রান্ত হবেন সাড়ে ৫ লক্ষ, বলছে কেজরিওয়াল সরকার