সারদাকাণ্ডে বিশেষ ‘ছাড়’ কুণালকে, আইনজীবীদের কর্মবিরতিতে নিজেই করলেন সওয়াল
সারদাকাণ্ডে সাংসদ কুণাল ঘোষের শর্তাধীন জামিন মিলেছিল আগেই। এবার সেই জামিনের শর্ত শিথিল হল। নিজেই সওয়াল করে তিনি পেলেন দেশের সর্বত্র যাওয়ার ছাড়পত্র। আর শুধু নারকেলডাঙা থানা এলাকার মধ্যে বদ্ধ থাকতে হবে না তাঁকে, তিনি নিজের মর্জিমতো যে কোনও জায়গায় যেতে পারবেন। বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট তাঁকে বিশেষ এই ছাড়পত্র দিয়েছে।
উল্লেখ্য, কুণাল ঘোষের জামিনের প্রধান শর্ত ছিল তাঁর বাসস্থান নারকেলডাঙা থানার গন্ডির বাইরে তিনি যেতে পারবেন না।

[আরও পড়ুন:শেষে আলিমুদ্দিনে আসতে হবে মমতাকে! অস্তিত্ব সংকটে পড়ে এ কেমন 'বার্তা' গৌতমের ]
বুধবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ রায় দিয়েছে, আর নারকেলডাঙা থানা এলাকার বাইরে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা থাকছে না কুণাল ঘোষের। দেশের যে কোনও জায়গায় যেতে পারবেন তিনি। তবে আপাতত দেশের বাইরে তিনি যেতে পারবেন না।
আদালত জানিয়েছে, কলকাতার মধ্যে তিনি অবাধে যেতে পারবেন। শুধু কলকাতার বাইরে যেতে গেলে সিবিআইকে তাঁর কর্মসূচি জানিয়ে যেতে হবে। আর প্রতি সপ্তাহে সিবিআই অফিসেও তাঁকে হাজিরা দিতে হবে না। প্রয়োজন হলে যেতে হবে। আইনজীবীরা যখন ধর্মঘটে সামিল, তখন পরপর তিনদিন হাইকোর্টে নিজেই সওয়াল করেন কুণাল ঘোষ। নিজেই নিষেধাজ্ঞা শিথিলের জন্য সওয়াল করে রায় আদায় করে নিলেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ২০১৬ সালের ৫ অক্টোবর শর্তাধীন অন্তর্বর্তী জামিন পান কুণাল ঘোষ। ২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারি জামিন স্থায়ী হয় তাঁর। তবে শর্তগুলি বলবৎ থেকেই যায়। এরপর ২০১৭-র জুন মাসে নারকেলডাঙা থানার বেড়াজাল তোলার জন্য আবেদন করেন কুণাল। মামলার চাপে দীর্ঘদিন এটি শুনানি না হয়ে পড়েছিল।
পরে শুনানি শুরু হলেও ততদিনে জামিন খারিজের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে ফেলেছে সিবিআই। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চ বলে দেয় সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত শর্ত শিথিলের আবেদন শুনবেন না তাঁরা। এরপর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট কুণালের জামিন খারিজে সিবিআইয়ের আবেদন খারিজ করে দেয়। কিন্তু এরপর যখন কুণাল হাইকোর্টে শর্ত শিথিলের আবেদন করবেন, তখন আইনজীবীদের কর্মবিরতি শুরু হয়ে যায়।
২৭ ফেব্রুয়ারি ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তর ডিভিশন বেঞ্চে নিজে সওয়াল করেন কুণাল। তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়ে আদালত বিষয়টি বিবেচনা করে মার্চ শুনানির দিন স্থির করে ৫ মার্চ। এরপর বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির এজলাসে মামলাটি উঠলে আইনজীবীদের কর্মবিরতিতে নিজেই সওয়াল করেন কুণাল। শেষপর্যন্ত মেলে নারকেলডাঙা থানার বাইরে যাওয়ার ছাড়পত্র।