এয়ারহোস্টেস হওয়ার স্বপ্নের ‘গঙ্গাপ্রাপ্তি’ ঘাটশিলার তরুণীর, নেপথ্যে কি সম্পর্কের টানাপোড়েন
তিনদিন আগে উত্তরবন্দর থানা এলাকায় গঙ্গার ঘাট থেকে এক অজ্ঞাত পরিচয় তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়। সেই অজ্ঞাত পরিচয় দেহই ঘাটশিলার অপহৃতা তরুণী সুস্মিতার বলে শনাক্ত করা হয়েছে।
১০ দিন নিখোঁজ থাকার পর ঘাটশিলার তরুণীর মৃতদেহ মিলল। তিনদিন আগে উত্তরবন্দর থানা এলাকায় গঙ্গার ঘাট থেকে এক অজ্ঞাত পরিচয় তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়। সেই অজ্ঞাত পরিচয় দেহই ঘাটশিলার অপহৃতা তরুণী সুস্মিতার রায়ের বলে শনাক্ত করা হয়েছে। বুধবার মর্গে গিয়ে সুস্মিতার বাবা মেয়ের মৃতদেহ শনাক্ত করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের পোশাক ও শরীরের একটি দাগ দেখে শনাক্ত হয় ওই দেহ সুস্মিতারই। এরপরই কালীঘাট থানায় সুস্মিতার প্রেমিক-সহ তিনজন বন্ধু ও রুমমেট ডেকে জেরা করা হচ্ছে। এদিনই কলকাতার পুলিশ মর্গে সুস্মিতার দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই স্পষ্ট হবে সুস্মিতা খুন হয়েছেন, নাকি আত্মঘাতী হয়েছেন।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সুস্মিতার মৃত্যু হয়েছে জলে ডুবে। কিন্তু সেই জলে ডোবা অনেক কারণেই হতে পারে। প্রথম তিনি জলে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারেন। আবার এমনও হতে পারে তাঁকে নদীতে ঠেলে খুন করা হল। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। পাশাপাশি পুলিশ জানার চেষ্টা করছে, এই দশদিন সুস্মিতা কোথায় কোথায় গিয়েছেন। তাঁর মোবাইলের শেষ টাওয়ার লোকেশন কী ইঙ্গিত করছে, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এয়ারহোস্টেস হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ঝাড়খণ্ডের ঘাটশিলা থেকে কলকাতায় এসেছিলেন সুস্মিতা। মাস দেড়েক আগে কালীঘাটের এক এয়ারহোস্টেস প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হন তিনি। ঈশ্বর গাঙ্গুলি স্ট্রিটের একটি বাড়িতে পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকতেও শুরু করেন। ১০ ডিসেম্বর প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়ার পর থেকেই তাঁর কোনও খোঁজ মিলছে না। রুমমেটরাও বলতে পারছিলেন না তাঁর খবর। তাঁর ফোনও বন্ধ ছিল।
প্রায় সপ্তাহকাল মেয়ের কোনও খোঁজ না পেয়ে বাবা জহর দাস থানায় অপহরণের মামলা দায়ের করে। সোমবার কালীঘাট থানায় সুস্মিতার প্রেমিক ও বন্ধু-বান্ধবীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। তারপরই এদিন সকালে মৃতদেহ শনাক্ত হয়। মৃতদেহ শনাক্তের পর অপহরণের অভিযোগের সঙ্গে খুনের মামলাও রুজু করছে সুস্মিতার পরিবার।
দেহ শনাক্তের পরই পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে আরও জোর দেয়। পুলিশ ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছে সুস্মিতার একাধিক পুরুষ বন্ধু ছিল। সেই সম্পর্ক নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে তাঁর মন কষাকষি হয়। তাঁদের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদও হয়। সুস্মিতার রুম-পার্টনারের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে আরও তথ্য জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।