শহীদুল্লাদের পর সাক্ষাৎ-প্রার্থী টেট উত্তীর্ণরাও! এসএসির সমাধানে নেমে কি চাপ বাড়ালেন অভিষেক
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে শুক্রবার যখন বৈঠক করছিলেন আশু সমাধান সূত্র বের করার জন্য, তখনই টেট উত্তীর্ণরা হাজির হন সাক্ষাৎপ্রার্থী হয়ে।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে শুক্রবার যখন বৈঠক করছিলেন আশু সমাধান সূত্র বের করার জন্য, তখনই টেট উত্তীর্ণরা হাজির হন সাক্ষাৎপ্রার্থী হয়ে। কিন্তু অভিষেক সাক্ষাৎ করতে না পারলেও তিনি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে আগামী সাতদিনের মধ্যে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা বলেন। কিন্তু তাতেও ক্ষোভ প্রশমণ হল না, রাতভর চলল অবস্থান। েই অবস্থান প্রশ্ন উঠে গেল এসএসির সমাধান সূত্র বের করতে গিয়ে কি নিজের উপর চাপ বাড়ালেন অভিষেক?
শনিবারও টেট উত্তীর্ণরা তাঁদের দাবিতে অনড়। তাঁরা চান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। তাঁদের নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতার কথা তুলে ধরতে চান তাঁরা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাঁরা চান টেট উত্তীর্ণদের পাশেও দাঁড়ান তিনি।
শুক্রবার অভিষেক যখন তাঁর ক্যামাক স্ট্রিট অফিসে এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন, তখন ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণরা হাজির তাঁর অফিসের সামনে। তাঁরা দাবি জানাতে থাকেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা না করে তাঁরা এখান থেকে যাবেন না। যতক্ষণ না পর্যন্ত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন, ততক্ষণ অবস্থান চলবে, তাঁরা কেউ পিছু হটবেন না।
২০১৪-য় টেট উত্তীর্ণ জমায়েতকারীদের দাবি, এসএসসির এসএলএসটি অর্থাৎ স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্ট উত্তীর্ণ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকের খবর পেয়েই তাঁরা এখানে এসেছেন। অভিষেকবাবু যাতে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেও একটা সুরাহার চেষ্টা করেন সেই আশায় বুক বেঁধে তাঁরা এসেছেন।
এরপর এসএসসি প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক শেষ হয়ে গেলেও তাঁরা অবস্থানে অনড় থাকেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের কাছে বার্তা পাঠান শিক্ষামন্ত্রী সাতদিনের মধ্যে আপনাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আপনাদের দাবি শুনে তা সমাধানের চেষ্টা করবেন, তবু অনড় তাঁরা। অভিষেকের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসের সামনেই তাঁরা অবস্থান করে রয়েছেন রাতভর। শনিবার দুপুর গড়িয়ে গেলেও তাঁরা ওই অবস্থান থেকে সরে আসেননি।
অভিষেক প্রতিনিধি পাঠালেও তাঁরা ফিরেয় দেন। বিক্ষোভকারীরা বলেন, আমরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে চান। অভিষেক জানান, আপনারা শান্ত হয়ে ফিরে যান, সাতদিনের মধ্যে স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী আপনাদের সঙ্গে কথা বলবেন। তাতেও অনড় থেকেছেন ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীরা। এখনও তাঁরা বলে চলেছেন, যতক্ষণ না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁরা সাক্ষাৎ করবেন, ততক্ষণ তাঁরা এই জায়গা থেকে সরবেন না। তাঁদের অবস্থান বিক্ষোভ চলতেই থাকবে। ৫০০ দিনেরও বেশি বিক্ষোভরত এসএসসি প্রার্থীদের সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে এবার টেট উত্তীর্ণরা দুয়ারে হাজির।
এদিকে আবার এসএসসির নিয়োগ নিয়ে সমস্যার সমাধানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৎপর হওয়ায় অনধিকার চর্চার দাবি উঠে গেল। তিনি ঘোড়া ডেঙিয়ে ঘাস খেতে চাইছেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, অভিষেক তো সরকারের কেউ নন। তিনি কী করে এসএসসি প্রার্থীদের চাকরির ব্যবস্থা করতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। তবে কি তিনি দল এবং সরকার তাঁর নিয়ন্ত্রণেই সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করে।
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সেই প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অধিকারের মধ্যে থেকেই এসএসসি চাকরি প্রার্থীদের সহায়তা করার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি মানবিক হয়ে এসএসসি প্রার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতিক্রমে এবং তাঁর নির্দেশক্রমেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগী হয়েছেন এসএসির বিক্ষোভরত প্রার্থীদের সমস্যা সমাধানের।
কুণাল ঘোষ বলেন, কেন অনধিকার চর্চার অভিযোগ উঠছে অভিষেকের বিরুদ্ধে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের নেতা, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু তৃণমূলের নেতা আমি তৃণমূলের সদস্য। আমরা আলোচনা করেচি এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে। এখানে কোনও সরকারি আধিকারিক ছিল না। সরকারি স্তরে আলোচনা হবে ৮ অগাস্ট। সেদিন তা হবে শিক্ষামন্ত্রীর অফিসে। সেখানে থাকবেন এসএসসির চেয়ারম্যান, চাকরিপ্রার্থীদের দাবি মেটানোর চেষ্টা হবে সেদিন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মানবিক হয়ে সমস্যার আশু সমাধানের চেষ্টা করেছেন মাত্র।