লোকসভা ভোটের মুখে অস্বস্তি তৃণমূলের, বেতন-ডিএ বৃদ্ধির দাবিতে অবস্থানে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা
রাজ্য সরকারের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে বুধবার ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে অবস্থানে বসলেন সরকারি-আধাসরকারি কর্মচারী ও শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের ‘যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ’।
লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে অস্বস্তি বাড়ল তৃণমূল কংগ্রেসের। রাজ্য সরকারের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে বুধবার ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে অবস্থানে বসলেন সরকারি-আধাসরকারি কর্মচারী ও শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের 'যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ'। ডিএ এবং বেতন কমিশন চালুর দাবিতে এবং মর্জিমাফিক বদলির প্রতিবাদে এই অবস্থান।
বেতন বৃদ্ধির দাবিতে ‘যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ’
‘যৌথ সংগ্রামী মঞ্চে'র আহ্বায়ক ফটিক দে এবং ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেন্ড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনে'র রাজ্য সভাপতি পিন্টু পাড়ুই-এর বক্তব্য, সরকার পে কমিশন চালু করছে না এবং মূল্যসূচক মেনে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা দিচ্ছে না। তাঁদের আরও দাবি, অবিলম্বে বেতন কাঠামোর পুনর্বিন্যাস এবং ২০০৫-০৬ সাল পর্যন্ত পিটিটিআই ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়োগ করতে হবে।
গণঅবস্থানে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা
একই সঙ্গে ফটিক বাবু জানাচ্ছেন, ডিএ এবং বেতন কমিশন বিষয়ে প্রতিশ্রুতি মতো কাজ না হওয়ায় এবং মর্জিমাফিক বদলির প্রতিবাদে তাঁরা গণঅবস্থানে বসেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণামাফিক ১২৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা পেলেও তা ২০১৬ সালের বকেয়া মাত্র। তাঁদের দাবি, ১২৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা কেবলমাত্র 'আইওয়াশ'।
বেতন কমিশন ও ডিএ নিয়ে প্রশ্ন
তাঁদের আরও দাবি কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের মহার্ঘভাতাতে এখনও ২৩ শতাংশ ফারাক রয়েছে। কেন্দ্র সরকার সপ্তম বেতন কমিশন মতো চললেও রাজ্য সরকার এখনও ষষ্ঠ বেতন কমিশন চালু করে উঠতে পারেনি। একইসঙ্গে তাঁরা শূন্যপদ পূরণের দাবিও করছেন।
পিটিটিআই অ্যাসোসিয়েশনের দাবি
অন্যদিকে, ওয়েস্ট বেঙ্গল পিটিটিআই অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি পিন্টু পাড়ুই জানান, ২০০৫ সাল থেকে পিটিটিআই-এর আন্দোলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমর্থন জুগিয়েছেন। তাঁর ২৬ দিনের অনশনের চতুর্থ দিনে পিটিটিআই অনশন মঞ্চে গিয়ে সমর্থন জানিয়ে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, তা তাঁর লেখা বই ‘কেন অনশন'-এও উল্লেখ রয়েছে।
প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি সরকার
পিটিটিআই-এর অনশন চলাকালীন ১৭ জন আত্মহত্যা করেছিল। ২০১১-তে ক্ষমতায় এসে রাইটার্সে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন তিনটি ধাপে তিন বছরের মধ্যে ২০০৫-২০০৬ সালের পিটিটিআই ছাত্রছাত্রীদের নিয়োগ করে নেবেন। এছাড়া বাজেটে ১০ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হলেও একজনও সেই সুযোগ পাননি বলে অভিযোগ তাঁর।
বেতন কাঠামো পুরনো মানেই
তিনি আরও বলেন, শিক্ষামন্ত্রীকে বিশদ তথ্য দেওয়া সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত কোনও সুরাহা হয়নি। সারা ভারতের নিরিখে তাদের যোগ্যতামান বৃদ্ধি করলেও বেতন কাঠামো পড়ে রয়েছে পুরানো মানেই। তাঁরা চাইছেন বেতন কাঠামোর পুনর্বিন্যাস এবং পিটিটিআইদের সবার নিযুক্তি। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে তাঁরা স্মারকলিপি পেশ করেন।