'শিক্ষা বাঁচিয়ে বাঁচাও আগামী প্রজন্মকে', প্রতিবাদ শিক্ষক সংগঠনের
শিক্ষা বাঁচাও, রাজ্য বাঁচাও, বাঁচাও আগামী প্রজন্ম কে।এমনটাই বলছেন চাকরি প্রার্থী ও শিক্ষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ। মূলত এই মঞ্চ বাম সমর্থকদের নিয়েই তৈরি। তারাই সুর চড়ালেন টেট দুর্নীতি নিয়ে। কাজ না হলে প্রতিবাদের পরিমান আরও বাড়বে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
এই
সংগঠনের
আহ্বায়ক
ইন্দ্রজিৎ
ঘোষ
বলেন,
এক
দুর্বিষহ
পরিস্থিতির
মধ্যে
এই
বাংলা
রয়েছে।
শিক্ষক
ও
শিক্ষাকর্মী
নিয়োগে
ব্যাপক
দুর্নীতি
আর
কারুর
অজানা
নয়।
বিগত
বামফ্রন্ট
সরকারের
সময়
প্রতিবছর
নিয়োগের
নোটিফিকেশন
হতো
ও
নিয়োগ
হতো।
আর
বর্তমান
সময়ে
প্রতিবছর
নিয়োগের
কোনো
বালাই
নেই।
প্রতিবছর
নিয়োগের
নোটিফিকেশন
ও
নিয়োগ
হলে
এই
সমস্যা
হতোই
না।
NCTE
এর
গাইডলাইন
অনুযায়ী
প্রতি
বছর
পরীক্ষা
নেওয়ার
কথা।
কিন্তু
তার
কোনো
সদিচ্ছা
নেই
এই
সরকারের।
বিগত
৯-১০
বছর
ধরে
একের
পর
এক
যোগ্য
চাকরিপ্রার্থীদের
সাথে
বঞ্চনা
করেছে
রাজ্য
সরকার
ও
তার
মন্ত্রীরা।
স্কুলে,কলেজে,
সরকারি
দপ্তরে
হাজার
হাজার
শূন্যপদ
থাকা
সত্ত্বেও
এই
রাজ্যে
যথাযথ
চাকরি
হচ্ছে
না।
বিধানসভায়
২২
মার্চ
এক
প্রশ্নের
উত্তরে
শিক্ষামন্ত্রী
ব্রাত্য
বসু
বলেন,
প্রাথমিক
শিক্ষকের
শূন্যপদ
১
লক্ষ
৯০
হজার
০৮৫।"
ইন্দ্রজিৎবাবু বলেন যে, "এই সময়ে রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে মাত্র ১১,৭৬৫ টি শূন্যপদে শিক্ষক নেওয়া হবে। টেট পাশ প্রশিক্ষিত প্রার্থী আছেন প্রায় ৪০,০০০। সব শূন্যপদে শিক্ষক নেওয়া হলে '১৪-'১৭ এর পরীক্ষার্থী দের নিজেদের মধ্যে আর সমস্যা থাকবে না। কিন্তু, সরকার এই সমস্যার সমাধান করবে না। কারণ,এই ঝামেলাটাই রাজ্য সরকার চায়। তাই ক্যারি ফরোয়ার্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন গল্প শোনাচ্ছে। "
তাদের
দাবি,
২০১৭
সালে
ফর্ম
ফিলাপ
করে
২০২১
সালে
পরীক্ষা
নিলেন।
ফর্ম
ফিলাপ
করে
বসিয়ে
রেখে
নিয়োগের
নোটিফিকেশন
করলেন।
সেই
নিয়োগে
২০১৭
এর
ছেলেমেয়েরা
অংশগ্রহণ
করতে
পারলো
না।
পরীক্ষার
একবছর
পর
রেজাল্ট
প্রকাশ
করলেন।
তার
একবছর
পর
নিয়োগের
নোটিফিকেশন।
এই
করে
৫
বছর
কাটিয়ে
এখন
নোটিফিকেশন
করলেন
মাত্র
১১৭৬৫
।
ছেলে
মেয়েদের
জীবন
কে
যন্ত্রণার
পথে
ঠেলে
দিল
এই
রাজ্য
সরকার।
তাঁরা জানাচ্ছেন, "রাজ্যে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগের ১৪ হাজার ৩৩৯ টি শূন্যপদের জন্য পরীক্ষা আপার প্রাইমারী শেষ হয়েছে ২০১৫ তে। ২ বার ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া হলেও নিয়োগ হয়নি। বর্তমানে এই ক্ষেত্রে শূন্যপদের সংখ্যা ১,৩৯,২৯৫। এই নিয়োগ শেষ করে দ্রুত নূতন নোটিফিকেশন করার দরকার। সরকার তা করছে না। অকারণ দেরি করে চাকরিপ্রার্থীদের বয়স বাড়াচ্ছে।
রাজ্যে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা শেষ হয়েছে ২০১৬ তে। তার পর আর নোটিফিকেশন নেই। এই ক্ষেত্রে শূন্যপদের সংখ্যা ২৩,৭১১। রাজ্যের প্রায় ৬-৭ লক্ষ বি এড পাস করা ছেলে মেয়েরা চাকরি তো দূরস্ত পরীক্ষাই দিতে পারল না।".
ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, "এই দুর্নীতির কারনে যোগ্যরা আজ রাস্তায়। শিক্ষিত, যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা পরীক্ষায় পাশ করা সত্ত্বেও চাকরি পাচ্ছেন না, রাস্তায় বসে থেকে লাগাতার ৬০০ দিনের উপর আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সময়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস সত্ত্বেও তারা নিজের যোগ্যতার চাকরি পাননি। বদলে মুখ্যমন্ত্রীর দলের নেতারা পাড়ায় পাড়ায় সিন্ডিকেট খুলেছিলেন চাকরি দেওয়ার। ৫, ১০, ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়েছে চাকরি। আমাদের দাবি ভুয়ো নিয়োগ বাতিল করে দ্রুত স্বচ্ছ ও স্থায়ী নিয়োগ করতে হবে। সেই কাজ না করে রাজ্য সরকার অবৈধ নিয়োগকে বৈধতা দিতে সুপার নিউম্যারিকাল পোস্টের আমদানি করল। যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা কোনো ভাবেই এটা মানবে না। অযোগ্য আর যোগ্যরা এক আসনে বসতে পারেনা কখনো। মুড়ি মিছরি এক না। অনেক হয়েছে। একটা দুর্নীতি ঢাকতে আরো বড় দুর্নীতি নয়। নিয়োগ দুর্নীতির কারনে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী, স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান, প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা, মধ্য শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান সকলে জেলে। উদ্ধার হলো কোটি কোটি টাকা।যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি বিক্রি হয়েছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কেবল চাকরিপ্রার্থীরা নয়। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সমগ্র শিক্ষা ব্যাবস্থা। ক্ষতি হচ্ছে আমাদের আগামী প্রজন্মের।
একইসঙ্গে তিনি বলছেন, "এখন আন্দোলন একটা গতি নিয়েছে। এই আন্দোলনের তেজ আরো বাড়াতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমেই আদায় করতে হবে স্থায়ী পদে স্থায়ী নিয়োগ, সমস্ত শূন্যপদে দ্রুত ও মেধার ভিত্তিতে স্বচ্ছ নিয়োগ, NCTE এর নিয়ম মেনে প্রতিবছর পরীক্ষা, রেজাল্ট প্রকাশের পর ইন্ডিভিজুয়াল নাম্বার। আমরা আশাবাদী আগামীদিনে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে নিয়েই চাকরিপ্রার্থী ও শিক্ষক সংগঠন গুলির যৌথ মঞ্চ এই আন্দোলনের সঠিক পথ অনুসরণ করে যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের বঞ্চনা থেকে মুক্তি দিতে পারবে"