পার্শ্ব শিক্ষকদের নবান্ন অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড
Breaking পার্শ্ব শিক্ষকদের নবান্ন অভিযান ঘিরে ধন্ধুমার কাণ্ড
পার্শ্ব শিক্ষকদের নবান্ন অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড। সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে আজ নবান্ন অভিযানের ডাক দেন শিক্ষকরা। কিন্তু পুলিশের তরফে রানী রাসমণি রোড পর্যন্ত মিছিল করার অনুমতি দেয় পুলিশ। কিন্তু সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে পার্শ্ব শিক্ষকদের মিছিল বার হতেই তা আটকে দেয় পুলিশ। আর তা আটকে দিতেই পুলিশের সঙ্গে কার্যত খন্ডযুদ্ধ বেঁধে যায় আন্দোলনকারীদের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পালটা লাঠিচার্জ করে পুলিশ আধিকারিকরা। আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয় জল কামানও। পালটা পুলিশকে লক্ষ্য করেই ইট আন্দোলনকারীদের। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র গোটা এলাকা।
দুপক্ষের মধ্যে খন্ডযুদ্ধে একাধিক পার্শ্ব শিক্ষক এবং শিক্ষিকা গুরুতর আহত হয়েছেন। যদিও পুলিশেরও বেশ কয়েকজন আধিকারিক আহত বলে খবর। এই মুহূর্তে রাস্তার মধ্যেই বসে পড়েই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন শিক্ষক এবং শিক্ষিকারা। যদিও রাস্তার উপরে বসে থাকা আন্দোলনকারীদের যে ভাবেই তুলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।
জানা যায়, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শুক্রবার নবান্ন অভিযানের ডাক দেয় পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্য মঞ্চ। যদিও নবান্ন পর্যন্ত যাওয়ার অনুমতি দেয়নি কলকাতা পুলিশ। রানী রাসমণি পর্যন্ত এই সভা নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু নবান্ন পর্যন্ত যাওয়ার ক্ষেত্রে অনড় আন্দোলনকারীরা। সেই মতো আজ শুক্রবার মিছিল শুরু হয়। সুবোধ মল্লিকা স্কোয়ার থেকে মিছিল কিছুটা এগোতেই তা আটকে দেয় পুলিশ। কিন্তু একের পর এক ব্যারিকেড ভেঙ্গে আন্দোলনকারীরা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে রীতিমত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট বৃষ্টি শুরু হলে পালটা লাঠিচার্জ শুরু হয় আন্দোলনকারীদের উপর। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী। আন্দোলনকারীদের একটা বার্তা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখা না করলে আন্দোলন আরও বৃহৎ আকার নেবে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। উত্তেজনা পরিস্থিতি ঘটনাস্থলে।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন করছিলাম। প্রশাসন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁদের সাক্ষাৎ করিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু তাঁরা তাঁদের কথা রাখেনি। উলটে শান্তিপূর্ণ মিছিলের উপর পুলিশ একেবারে নির্বিচারে লাঠিচার্জ করেছে বলে অভিযোগ আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকরাদের। পাশাপাশি তাঁদের হুঁশিয়ারি, অবিলম্বে তাঁদের যে সমস্ত নেতৃত্বকে পুলিশ আটক করে নিয়ে গিয়েছে তাঁদেরকে ছেড়ে দিতে হবে। না হলে রাস্তায় বসে লাগাতার আন্দোলন চলবে বলে দাবি তাঁদের। উল্লেখ্য, পুলিশ-শিক্ষক খন্ডযুদ্ধের পর ঐক্য মঞ্চের একাধিক নেতৃত্বকে আটক করেছে পুলিশ। নিয়ে যাওয়া হয়েছে লালবাজারে। আর এই ঘটনার প্রতিবাদে পালটা অবস্থান বিক্ষোভ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।
উল্লেখ্য, বেতন কাঠামো পুনর্গঠন সহ একাধিক দাবি নিয়ে আজ শুক্রবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন পার্শ্ব শিক্ষকরা। এর আগে একই দাবিতে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল আন্দোলনকারীদের। এমনকী ঘেরাও করা হয় বিকাশ ভবনও। কিন্তু বর্তমান সরকার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি বলে অভিযোগ পার্শ্ব শিক্ষকদের। এরপরই বৃহত্তর আন্দোলনের পদক্ষেপ হিসাবে নবান্ন অভিয়ানের ডাক দেওয়া হয়। গত ৫০ দিনেরও বেশি সময় ধরে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে আন্দোলন করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকরা। প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন আগে হঠাৎ করেই রাজ্য বিধানসভা ঘেরাও করেন পার্শ্ব শিক্ষক-শিক্ষিকারা। প্রায় ২৬ দফা দাবিতে বিধানসভার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ দেখান পার্শ্বশিক্ষকরা। বিধানসভার গেটে উঠে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন শিক্ষিকারা। হঠাৎ করেই এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়ে পড়ে। আন্দোলনকারীদের গেট থেকে নামাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয়। আন্দোলনকারীদর দাবি ছিল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে দিতে হবে। পরে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় আসছেন না জেনে কিছুটা শান্ত হন তাঁরা। যদিও এরপরেই প্রশাসনের তরফে নাকি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। আর তা রাখা হয়নি বলেই অভিযোগ তাঁদের। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার দুপুরে উত্তাল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।