স্বামীজির শুরু করা পুজো! বেলুড় মঠের পুজোয় না গেলেই নয়, জেনে নিন ইতিহাস
১৯০১ সালে বেলুড় মঠে দুর্গাপুজো শুরু হয়। মূলত স্বামী বিবেকানন্দর উদ্যোগেই এই পুজো শুরু হয়েছিল। সারদা মাকেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
১৯০১ সালে বেলুড় মঠে দুর্গাপুজো শুরু হয়। মূলত স্বামী বিবেকানন্দর উদ্যোগেই এই পুজো শুরু হয়েছিল। সারদা মাকেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সারদা মাকে ১০৮ টি পদ্ম দিয়ে আলাদা করে জ্যান্ত দুর্গার পুজো করেছিলেন স্বামীজি। বেলুড়ের কুমারী পুজোর প্রচলন শুরু করেছিলেন স্বামীজিই।
পুজোর ইতিহাস
১৯০১-এর দুর্গাপুজোর বেশ কিছু আগে যেখানে স্বামীজির মন্দিরের কাছে যে বেলগাছ রয়েছে, তার নিচে বসেছিলেন স্বামীজি। সেই সময়ই মঠে দুর্গাপুজোর করার ইচ্ছা জাগে বলে জানা যায়। কুমোরটুলি থেকে প্রতিমা আনা হয়েছিল। কোনও অর্ডার দেওয়া না থাকলেও, একজন প্রতিমা আনতে না আসায় পঞ্চমীর দিন প্রতিমা আনা হয় বেলুড় মঠে। প্রতিমা আনতে গিয়েছিলেন কৃষ্ণলাল মহারাজ। প্রাচীন বৈদিক মতে পুজোর বিধি মেনে পুজো করা হবে ঠিক হয়েছিল। পুরনো ঠাকুরে মন্দির এবং বর্তমান মঠ ম্যানেজারের অফিসের মধ্যবর্তী জায়গায় পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল।
স্বামীজিকে সাহায্য করেছিলেন যাঁরা
স্বামী বিবেকানন্দ যাঁদের সন্ন্যাস দিয়েছিলেন, এমন সাত-আটজন এই পুজো করতে স্বামীজিকে সাহায্য করেছিলেন বলে জানা যায়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন, সুকুল, গোবিন্দ, কালিকৃষ্ণ, সুধীর, সুশীল। এই দুর্গাপুজোয় প্রথম পূজারি হয়েছিলেন ব্রহ্মচারী কৃষ্ণলাল।
পুজোর সংকল্প সারদা মায়ের নামে
সংকল্প কার নামে হবে সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। কেননা, সন্ন্যাসীদের নামে তো সংকল্প হতে পারে না। সেই সময় সারদা মায়ের কাছে যাওয়া হয়। স্বামী বিবেকানন্দ উপায় বাতলে দেন। বলেন, সারদা মায়ের নামে সংকল্প করতে। সেই পুজোয় সারদা মাকে হাওড়ার ঘুসুরি থেকে আনা হয়েছিল বেলুড় মঠে।
বেলুড়ের কুমারী পুজো
বেলুড়ে অষ্টমীর দিন কুমার পুজোর চল শুরু প্রথম পুজো থেকেই। রামলালদাদার কন্যাকে স্বামীজি কুমারী পুজোর জন্য বেছে নিয়েছিলেন বলে জানা যায়। কোনও ব্রাহ্মণ কন্যাকেই কুমারী পুজোর জন্য বেছে নেওয়া হয়।
জ্যান্ত দুর্গার পুজো
অষ্টমীর দিন কুমারী পুজো করার পর ১০৮টি পদ্ম মা সারদার পায়ে দিয়ে জ্যান্ত দুর্গার পুজো করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ।
পুজোয় ভোগ
ষষ্ঠী থেকে দশমী, সব দিনই দুর্গার পুজো হয় এবং ভোগ নিবেদন করা হয়।
মাকে মাছ নিবেদন
সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমী, দুর্গাকে মাছ নিবেদন করা হয়। চার-পাঁচ রকমের মাছ থাকে।
সন্ধি পুজোয় মহাপ্রসাদ
সন্ধিপুজোয় কালীঘাটে বলি দেওয়া মহাপ্রসাদ মঠে নিয়ে গিয়ে রান্না করে দেবীর কাছে দেওয়া হয়।
প্রতিমা নিরঞ্জন
বেলুড়ের প্রতিমা নিরঞ্জনও দেখার মতো। বহু মানুষ যেমন পুজোর দিনগুলিতে বেলুড়ে ভিড় জমান, ঠিক তেমনই প্রতিমা নিরঞ্জনের দিনও ভিড় জমান। দশমীর রাতে হয় নিরঞ্জন। দেবদেবীর মুখে মিষ্টি দিয়ে, মায়ের পায়ে আলতা ছুঁয়ে দেওয়া হয়। মুখে মিষ্টি দিলেও, তা আাবার রুমাল দিয়ে মুছিয়ে দেওয়া হয়। পান থেঁতো করে মুখে ধরার রেওয়াজও রয়েছে। দশ হাতে বোঁটাশুদ্ধ পান ছাড়াও দেওয়া হয় মিষ্টি।