
বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অধ্যক্ষ নন, তৃণমূল কর্মী! মুকুল প্রশ্নে বিস্ফোরক শুভেন্দু জানালেন পরবর্তী সিদ্ধান্ত
কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়কে (Mukul Roy) নিয়ে নিজের আগেকার অবস্থান বহাল রেখেছেন বিধানসভার (assembly) অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Banerjee)। হাইকোর্টের (High Court) তরফে পুনর্বিবেচনার আদেশে অধ্যক্ষ জানিয়েছেন মুকুল রায় বিজেপিতেই রয়েছেন। এই খবর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) পেয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার উপস্থিতিতে বিজেপির কার্যনির্বাহী সমিতির বৈঠকের মধ্যেই। বৈঠক শেষে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অধ্যক্ষ (speaker) হিসেবে কাজ না করে তৃণমূলের (Trinamool Congress) কর্মী হিসেবে কাজ করলেন।

মুকুল বিজেপিতেই
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে মুকুল রায় কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে বিজেপির টিকিটে জয়ী হন। এরপর ১১ জুন তৃণমূল ভবনে গিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন।য এরপরেই মুকুল রায়ের সদস্যপদ খারিজের জন্য বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে আবেদন জানান মুকুল রায়। সঙ্গে দলবদলের প্রমাণ হিসেবে বৈদ্যুতিন মাধ্যমে সম্প্রচারিত ভিডিও ফুটেজ জমা দেন। অধ্যক্ষ শুনানির পর জানিয়েছিলেন মুকুল রায় বিজেপিতেই রয়েছে। এর পরে বিষয়টি আদালতে যায়। কলকাতা হাইকোর্টের তরফে ফের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে পাঠানো হয়। এদিন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ফের জানান মুকুল রায় বিজেপিতেই রয়েছেন।

অধ্যক্ষের রায় অষ্টম আশ্চর্য
এদিন অধ্যক্ষ যখন এই রায় দেন, সেই সময় শুভেন্দু অধিকারী ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে দলের কর্মসূচিতে ব্যস্ত। সেখানে খবর পাওয়ার পরে নিজের বক্তব্যে বিরোধী দলনেতা বুঝিয়ে দেন তিনি এই রায়ে সন্তুষ্ট নন। বলেন অধ্যক্ষের এই রায় অষ্টম আশ্চর্যের।

আদালতই বলেছে তিনি ঠিক
দলের কর্মসূচি শেষে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, বিষয়টি হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের সামনে রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি কলকাতার হাইকোর্টে পাঠিয়েছিল। এব্যাপারে তিনি অধ্যক্ষকের কথা উল্লেখ করে বলেন, সেই সময় তিনি যা তথ্য প্রমাণ দিয়েছিলেন, তা নাকি পর্যাপ্ত ছিল না।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তিনি হাইকোর্টে যান। আর কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ জানিয়েছিল তিনি (শুভেন্দু অধিকারী) যে তথ্য প্রমাণ দিয়েছেন, তা যথার্থ। তবে আদালত অধ্যক্ষের মর্যাদা রাখতে বিষয়টি তাঁর কাছে পাঠিয়েছিল। কিন্তু অধ্যক্ষ নিজের কাজ করতে পারলেন না। বিরোধী দলনেতা কটাক্ষ করে বলেন, অধ্যক্ষ সাংবিধানিক কর্তব্য পালন না করে তৃণমূলের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, অধ্যক্ষ কী করলেন, তা তাঁর কাছে কোনও ফ্যাক্টর নয়। তিনি বৃহস্পতিবারেই
প্রধান বিচারপতির কাছে যাবেন বলেও জানান।

উত্তরীয় সৌজন্য
এদিন বিধানসভার অধ্যক্ষ যখন তাঁর রায় দেন, তখন সেখানে শুভেন্দু অধিকারীর তরফে কোনও আইনজীবী ছিলেন না বলেই জানা গিয়েছে। অধ্যক্ষ তাঁর রায় দিতে গিয়ে বলেছেন, যেমন প্রমাণ মামলাকারী জমা দিয়েছিলেন, তার থেকে মুকুল রায় যে তৃণমূলে তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সেই কারণে তিনি আগের রায় বহাল রাখলেন। এব্যাপারে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, তৃণমূল পুরনো নেতা-কর্মীদের প্রতি উদার। পুরনো কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তৃণমূল ভদ্রতা করে। সেই কারণে
মুকুল রায়কে তৃণমূল ভবনে উত্তরীয় পরানো হয়।