দল থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর কী করবেন ঋতব্রত, টুইটারে জানালেন সে কথা
দল বিতাড়িত হয়েছেন ঋতব্রত। এবার কী করবেন তিনি? এই নিয়ে চলছে জল্পনা। বিজেপি না তৃণমূল কোথায় যাবেন? এই পরিস্থিতির মধ্যে ঋতব্রত টুইট করে জানালেন তাঁর মনের অভিপ্রায়।
সিপিএম-এর সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক নেই ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শুক্রবারই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সে কথা জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য সিপিএম। সেই সঙ্গে জানানো হয়েছে কেন ঋতব্রতকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। যদিও, এই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে ঋতব্রত-র কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এবং প্রকাশ্যে দলকে হেনস্থা করায় ঋতব্রত যে সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হতে চলেছেন তা জানাই গিয়েছিল। কারণ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম নেতৃত্ব ঋতব্রতর বহিষ্কারের বিষয়টি চূড়ান্ত করে তা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর কাছে পাঠিয়েছিল। সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীও ঋতব্রতর বহিষ্কারের বিষয়টি চূড়ান্ত করে তা দলের পলিটব্যুরোর কাছে পাঠিয়েছিল সিলমোহরের জন্য। শুক্রবার সেই সুপারিশ চলে আসায় সিপিএম থেকে ঋতব্রত বিতারণের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যায়।
সিপিএম-এর অন্দরমহলে মূলত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রিয়পাত্র বলেই পরিচিত ছিলেন ঋতব্রত। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য-র ইচ্ছাতেই নাকি ঋতব্রতকে সাংসদ করে রাজ্য়সভায় পাঠিয়েছিল সিপিএম। এমনটাও দাবি করা হয়ে থাকে। সিপিএম-এর কোলেই কার্যত জন্ম হওয়া ঋতব্রতর রাজনৈতিক কেরিয়ার এবার কোন খাতে বইবে? এই নিয়ে জল্পনা চলছেই।
শুক্রবার শেষবেলায় আগামী দিনের পরিকল্পনা নিয়ে টুইটারে দু'চার কথা জানিয়েছেন সাংসদ ঋতব্রত। তাতে তিনি লিখেছেন 'পশ্চিমবঙ্গ আমার সবকিছু এবং আগামীদিনেও এটাই থাকবে। ' টুইটের শেষে হ্যাসট্যাগ সাইন দিয়ে জয় বাংলা এবং জয় হিন্দ শব্দ দু'টিও লিখেছেন ঋতব্রত।
Bengal has been and will be my priority. #JoyBangla #JaiHind pic.twitter.com/QNjAPpNhth
— Ritabrata Banerjee (@RitabrataBanerj) September 15, 2017
বহিষ্কারের দিন থেকেই ঋতব্রতর সঙ্গে জুড়েছে মুকুল রায়ের নাম। কারণ, ঋতব্রত নাকি মুকুলের দৌত্যেই বিজেপি-র পশ্চিমবঙ্গ পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাই বিজেপিতে ঋতব্রতর যাওয়া নিয়ে একটা জল্পনা তৈরি হয়েছে। যদিও, ঋতব্রতর দাবি, সাংসদ হওয়ার সূত্রে সকলের সঙ্গেই তাঁর ভালো সম্পর্ক। মুকুল রায়ের সঙ্গে তাঁর ভালোরকম ঘনিষ্ঠতা আছে। কিন্তু, বিজেপি-তে যাওয়ার খবরকে একপ্রকার উড়িয়েই দিয়েছিলেন তিনি। তবে, সন্দেহ নেই সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত ঋতব্রতর এই টুইট এক নয়া জল্পনা তৈরি করেছে।
এদিকে, শুক্রবার সিপিএম যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, তাতে এটা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে এক বাংলা টেলিভিশন নিউজ চ্যানেলে ঋতব্রত যেভাবে দল বিরোধী কথা বলেছেন এবং দলকে হেনস্থা করার চেষ্টা করেছেন তা গ্রহণযোগ্য নয়। আর এই কারণেই ঋতব্রতর বহিষ্কারে চূড়ান্ত সিলমোহর দেওয়া হয়েছে।
Ritabrata Banerjee expelled from CPI(M) pic.twitter.com/5iYMxeMi1e
— CPI(M) WEST BENGAL (@CPIM_WESTBENGAL) September 15, 2017
এই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে যে, গুরুতর সব অভিযোগ থাকার পরও দল ঋতব্রতকে সংশোধনের সুযোগ দিয়ে আসছিল। কিন্তু, ঋতব্রত নাকি নিজেকে সংশোধন তো করেননি উল্টে দলের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করেছেন। যদিও, বুধবারের পর থেকে সংবাদমাধ্যমের সামনে আসছেন না ঋতব্রত। তিনি কোথায় কেউ জানে না। বুধবার নিজের বহিষ্কারের কথা জানার পর প্রায় কেঁদে ফেলেছিলেন ঋতব্রত। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি শুধু জানিয়েছিলেন 'সিপিএম-ই আমার ঘর-বাড়ি-সবকিছু। সিপিএম ছাড়া আমার কোনও অস্তিত্ব নেই। তাই এই সিদ্ধান্তে কিছু বলার মতো অবস্থায় নেই আমি। আপাতত আমি একা থাকতে চাই।' তাহলে কি ঋতব্রত 'একা' থাকার অভিপ্রায়ে আপাতত লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকাটা শ্রেয় বলে মনে করছেন?