উপাচার্য গদি ছাড়ুন, আন্দোলনে ফের উত্তাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়
এই দাবিতে শুক্রবার থেকে ফের আন্দোলনে নামলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যালয় অরবিন্দ ভবনের সামনে শুরু হয়েছে অবস্থান বিক্ষোভ।
আরও
পড়ুন:
যাদবপুর
বিশ্ববিদ্যালয়ে
হিটলারি
কায়দায়
পুলিশি
হামলা,
আলো
নিভিয়ে
শ্লীলতাহানি
আরও
পড়ুন:
ছাত্ররা
সরল,
বুঝিয়ে
সামলাতে
হয়,
যাদবপুরে
পুলিশি
হামলার
নিন্দায়
সরব
মন্ত্রী
আরও
পড়ুন:
পুলিশ
মারেনি,
সাফাই
কমিশনারের!
উনি
'তৃণমূলের
ক্যাডার,
চাটুকার',
পাল্টা
বিরোধীদের
মঙ্গলবার গভীর রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে বর্বর তাণ্ডব চালায় পুলিশ। তার পরই উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি। কিন্তু গতকাল নিজের বাহিনীর পক্ষেই সাফাই দেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ। পাশাপাশি বলেন, পুলিশ নিজে থেকে ক্যাম্পাসে যায়নি। উপাচার্য ডেকেছিলেন বলেই গিয়েছিল। এতে আরও ক্ষুব্ধ হন পড়ুয়ারা। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় শুক্রবার সকাল থেকে ফের আন্দোলন শুরু হবে।
এ দিন সকাল থেকেই তপ্ত রয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন ক্যাম্পাস। অরবিন্দ ভবনে ঢোকার কোলাপ্সিবল গেট টেনে দেন বিক্ষোভকারীরা। শুরু হয় স্লোগান দেওয়া। পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। 'অপদার্থ ভিসি, প্রো-ভিসি, রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ চাই', 'ছাত্র মেরে শিক্ষাপ্রেম, কর্তৃপক্ষ শেম শেম', 'যাদবপুর পথে নেমেছে, ভিসি তুমি হুঁশিয়ার', 'অনাচার করো যদি, ভিসি তুমি ছাড়ো গদি' ইত্যাদি পোস্টার পড়েছে। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ রেজিস্ট্রার প্রদীপকুমার ঘোষ অরবিন্দ ভবনের সামনে আসতেই তাঁকে ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ। ছাত্রছাত্রীরা গেটের সামনে শুয়ে পড়েন। বলেন, ভিতরে ঢুকতে গেলে তাঁদের মাড়িয়ে যেতে হবে। এ কথা শুনে গেটের সামনেই বসে পড়েন রেজিস্ট্রার।
ছাত্রছাত্রীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরাও
খানিকক্ষণ পর সহ-উপাচার্য সিদ্ধার্থ দত্ত এসে একইভাবে আটকে পড়েন। কিন্তু তাঁরা দু'জনই জানিয়েছেন, পুলিশ ডাকবেন না। অর্থাৎ পরিস্থিতি যাতে আরও জটিল না হয়ে ওঠে, তাই এই সিদ্ধান্ত। লক্ষণীয় বিষয়, কোনও অধ্যাপককে কিন্তু ঢুকতে বাধা দেননি পড়ুয়ারা।
এদিকে, ছাত্রছাত্রীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা। জুটা অর্থাৎ যাদবপুর ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়ে দিয়েছে, উপাচার্য পদত্যাগ না করলে তাঁরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনও রকম প্রশাসনিক সহযোগিতা করবেন না। গত দু'দিন ধরে ক্লাস বয়কট চলছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়ুয়াদের এই সিদ্ধান্তকেও অঘোষিতভাবে সমর্থন করছেন অধ্যাপকরা। তবে কেউ যদি ক্লাস করতে চায়, তা হলে ক্লাস নেবেন শিক্ষকরা।
উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী অবশ্য এখনও মুখ লুকিয়ে রয়েছেন। শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে গতকাল তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি। কবে আসবেন, কেউ জানে না।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে কলকাতার বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, আশুতোষ কলেজ, গুরুদাস কলেজ ইত্যাদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা সক্রিয় সমর্থন জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা একটি মিছিলও করেন।
অন্যদিকে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী গোটা ঘটনায় রিপোর্ট চেয়েছেন রাজ্য সরকারের কাছে। পুলিশ যেভাবে পড়ুয়াদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে, তাতে ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল। গতকাল শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় রাজ্যপালের তলব পেয়ে দেখা করতে গেলে তিনি ক্ষোভ জানান। স্বরাষ্ট্র সচিবকে তলব করেও ভর্ৎসনা করেছেন রাজ্যপাল।