পদত্যাগ করলেন কলা বিভাগের ডিন, উপাচার্যের আশ্বাসে ঘেরাও উঠল যাদবপুরে
রাতভর ঘেরাওয়ের পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা তাদের অবস্থান তুলে নিল। ইতিহাস বিভাগের ভর্তির পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হওয়ার পর নতুন করে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।
পদত্যাগ করলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ডিন তথা ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সুভাষ বিশ্বাস। ঘোষণা করা হল সোমবার নতুন ইতিহাস বিভাগে ভর্তির মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে। আর এই ঘোষণার পরই ৯ ঘন্টা ধরে চলা অবস্থান তুলে নিল যাদবপুরের শিক্ষার্থীরা।
বুধবারই ইতিহাস বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষার ফল নিয়ে নতুন করে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল যাদবপুরে। একাংশের পরীক্ষার্থী ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অভিযোগের ভিত্তিতে নতুন করে ইতিহাসের প্রবেশিকা পরীক্ষার সব খাতা পুনর্মূল্যায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়, স্থগিত করা হয় বৃহস্পতিবারের ভর্তি প্রক্রিয়া।
আচমকা জারি হওয়া এই স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে বুধবার রাত ৮ টা থেকে অবস্থানে বসে যাদবপুরের অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলি। তাদের দাবি ছিল, ইতিহাস বিভাগের প্রকাশিত তালিকাটিকে বৈধ বলে ঘোষণা করতে হবে। যাদের নাম সেই তালিকায় বেরিয়েছে তাদের সবাইকে ভর্তি করতে হবে। এরপর যদি আরও কেউ থাকেন যাঁদের ক্ষেত্রে মেধা থাকা সত্ত্বেও তালিকায় নাম নেই তাদেরকেও ভর্তি করতে হবে। গোটা বিষয়টির জন্য কলা বিভাগের ডিনের পদত্যাগ দাবি করে ছাত্রসংগঠনগুলি।
রাতভর ঘেরাও হয়েছিলেন উপাচার্য, সহউপাচার্ষ সহ অনেকে। দফায় দফায় তাঁরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। অবশেষে ভোরের দিকে বের হয় রফাসূত্র। কর্তৃপক্ষ জানায়, আগামী সোমবার মেধাতালিকা পুনর্মূল্যায়ন করে প্রকাশ করার আশ্বাস দেওয়া হয়। সঙ্গে জানানো হয় পত্যাগ করছেন ইতিহাস বিভাগের প্রধান তথা কলা বিভাগের ডিন। এরপরই অবস্থান তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।
বুধবার ইতিহাস বিভাগের প্রবেশিকা পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর দেখা গিয়েছিল উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ যে ২১৬ জনের মেধা তালিকা ছিল, তার মধ্যে ১২০ জনই ১০ এর নিচে নম্বর পেয়েছে। উচ্চমাধ্যমিকে ৮৮ শতাংশ নম্বর পেয়েও কেউ প্রবেশিকায় পেয়েছেন ০! কেউ বা উচ্চমাধ্যমিকে ৯৪.৭ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন, কিন্তু প্রবেশিকায় পেয়েছেন ১ শতাংশ নম্বর। আবার অনেকে উচ্চমাধ্যমিকে ৯৫ শতাংশ নম্বর পেয়েও প্রবেশিকায় স্কোর করেছেন ৫।
স্বাভাবিক ভাবেই এমন নম্বর নিয়ে পরিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায়। সিবিএসই বোর্ডের এক ছাত্রী কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগও জানান। তালিকায় অস্বচ্ছতা আছে বলে দাবি তোলে তৃণমূল ছাত্র পরিষদও। ইতিহাসের সমস্ত খাতা পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। বিষয়টিতে অস্বাভাবিকতা রয়েছে একথা কবুল করেছিলেন কলা বিভাগের ডিনও।
সিদ্ধান্ত হয়, বৃহস্পতিবার ভর্তিপ্রক্রিয়া স্থগিত রেখে সমস্থ খাতা ফের একবার দেখা হবে। জানানো হয় ফল নিয়ে কারোর অভিয়োগ থাকলে ১৪ আগস্টের মধ্যে তা জানাতে হবে। বাংলা, ইংরাজী, তুলনামূলক সাহিত্য, দর্শন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক - কলা বিভাগের বাকি ৫টি বিষয়ে নতুন করে ট্যাবুলেশন সিট বানানোর সিদ্ধান্তও হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে ঠিক হয়েছে বাকি ৫ টি বিষয়ের নম্বর খতিয়ে দেখা হবে না।