উত্তর প্রদেশের মোস্ট ওয়ান্টেড বাংলাদেশি ধৃত কলকাতায়! ৩৭ জনকে জেরায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
বাংলাদেশিরা (Bangladesh) এই রাজ্যে অবৈধ কার্যকলাপে লিপ্ত। এদের একজন আবার উত্তর প্রদেশ (Uttar Pradesh) পুলিশের এটিএস-এর খাতায় মোস্ট ওয়ান্টেড। যোগী রাজ্যের পুলিশের কাজ থেকে খবর পেয়েই শনিবার রাতে আনন্দপুর এলাকায় অভিযান চালায় কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) এসটিএফ (STF)। প্রথমে শনিবার গ্রেফতার করা হয় ২০ জনকে, তারপর রবিবার গ্রেফতার হয়েছে আরও ১৭ জন। তাদেরকে জেরা করে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

সব মিলিয়ে গ্রেফতার ৩৭ জন
কলকাতা পুলিশ দুদিনে মোট ৩৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এদের মধ্যে মাত্র জনা তিনেকের এদেশে থাকার বৈধ কাগজপত্র পাওয়া গিয়েছে। বাকিদের কাছে প্যান কার্ড কিংবা আধারের যেসব কিছু পাওয়া গিয়েছে, তার সবই ভুয়ো। এদের সবার বিরুদ্ধেই ৩৭০, ৪১৯, ৪২০ ধারার পাশাপাশি ফরেনার্স অ্যাক্টেও মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার রাতের পরে রবিবারেও আনন্দপুরের গুলশন কলোনিতে তল্লাশি চালানো হয়।

গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযানে মূল অভিযুক্ত মেহফিজুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ব্যক্তি উত্তর প্রদেশের পুলিশের খাতায় মোস্ট ওয়ান্টেড বলে জানা গিয়েছে। সেই দেড় থেকে ২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে কলকাতার মাধ্যমে ভিন দেশে পাচার করে দিত। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করেই এদের সন্ধান পাওয়া যায়।

জেরায় চাঞ্চল্যকর তথ্য
সবাইকে জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেয়েছে কলকাতা পুলিশ। এরা সবাই মানব পাচারের সঙ্গে যুক্ত। কেউ পাণ্ডা। না হলে বাংলাদেশ থেকে ভারত হয়ে পাঠানো হচ্ছিল বাইরের কোনও দেশে। সেখানে ওই ব্যক্তিকে ভারতের নাগরিক সাজাতে ভুয়ো কাগজপত্রও তৈরি করা হয়েছিল। বেশ কিছু কাজ চলছিল। ধৃতদের কাছ থেকে পুলিশ যেসব কাগজ পেয়েছে তার অধিকাংশই ভুয়ো বলেই এখনও পর্যন্ত খবর।
জানা গিয়েছে, দুবাই হোক কিংবা অস্ট্রেলিয়া কিংবা ইউরোপের গ্রিস, নেদারল্যান্ডস, বাংলাদেশের মানুষজনকে সেখানে পাঠাতে কলকাতা এনে লুকিয়ে রাখা হত। এরপর ভুয়ো কাগজপত্র তৈরি করে সেইসব দেশে পাঠানো হত।

কীভাবে চোরাপথে ভারতে, তদন্ত পুলিশ
নথিপত্র ছাড়াই চোরা পথে ভারতে ঢুকছে বাংলাদেশিরা। এত বেশি সংখ্যায় বাংলাদেশি কলকাতায় ধরা পড়ার পরে নড়েচড়ে বসেছে কলকাতা পুলিশ। কীভাবে এরা সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকছে, তা জানতে শুরু হয়েছে তদন্ত।

বিজেপির অভিযোগ
ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে নিশানা করেছে বিজেপি। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, অবৈধ ভাবে এদেশে আসা বাংলাদেশিদের মাদ্রাসায় লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। অন্যদিকে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অভিযোগ বাম আমল থেকেই এই পরিস্থিতি চলছে। রোহিঙ্গারাও এই রাজ্যে আশ্রয় নিয়ে চলেছে। কলকাতায় ভোটের কাজে ব্যবহার করতেই এদের আনা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দিলীপ ঘোষ।