রবীন্দ্র চেতনা থেকে বাউল, বর্ণাঢ্য জমকালো উদ্বোধন সোনারপুরের স্পোর্টস কার্নিভাল-এর
সাধারণত কার্নিভাল মানে স্থানীয় জায়গা এবং জনজাতির সংস্কৃতি ও কৃষ্টির পরিচয় জ্ঞাপন হবে একটা জমায়েত।
কলকাতা শহরে প্রায় এক দশক আগে একটি কার্নিভাল-এর আয়োজন হয়েছিল। হরেদরে তাকে অনেক প্রচার দেওয়ারও চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু, সে উদ্যোগ কাজে আসেনি। সেই কার্নিভাল বহুদিন আগেই তিলোত্তমার মন থেকে মুছে গিয়েছে কবেই। এমনকী নগরবাসীর চেতনাতেও তার বিরাজ কতটা তার প্রকাশও তেমন মেলে না। কিন্তু, সোনারপুর রীতিমতো দেখিয়ে দিল কার্নিভাল কাকে বলে। সাধারণত কার্নিভাল মানে স্থানীয় জায়গা এবং জনজাতির সংস্কৃতি ও কৃষ্টির পরিচয় জ্ঞাপন হবে একটা জমায়েত। এতে যেমন রঙীন এক শোভাযাত্রার আয়োজন থাকে তেমনি একটি স্থানে সেই সংস্কৃতির ও কষ্টিকে তুলে ধরে আয়োজন হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের। সোনারপুরের অল বেঙ্গল গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস কার্নিভাল-এ এমনই এক আয়োজনের দেখা মিলল। ৩০ তারিখ এই স্পোর্টস কার্নিভাল-এর শোভাযাত্রার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়ে গিয়েছিল। ৩১ তারিখ সোনারপুর কামালগাজির নেতাজি স্পোর্টস কমপ্লেক্সের ময়দানে হল এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। যেখানে উপস্থিত ছিলেন স্পোর্টস কার্নিভাল-এর মূল উদ্যোক্তা স্থানীয় বিধায়িকা ফিরদৌসী বেগম, সোনারপুর দক্ষিণ-এর বিধায়ক জীবন মুখোপাধ্যায়-সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। যেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সবুজসাথী প্রকল্প, কন্যাশ্রী, যুবশ্রী-সহ একাধিক সামাজিক প্রকল্পের থিম-কে ঘিরে পরিবেশিত হয় নাচ-গানের এক সম্বিলিত আয়োজন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্পোর্টস কার্নিভাল-এর ফ্ল্যাগ উড়িয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। স্পোর্টস কার্নিভাল-এর মূল উদ্যোক্তা স্থানীয় বিধায়িকা ফিরদৌসী বেগম জানান, সাধারণ মানুষ যাতে খেলা-ধূলোর প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন, সেই কারণ এমন অভিনব স্পোর্টস কার্নিভাল-এর আয়োজন। সেইসঙ্গে তিনি আরও বলেন যে, খেলা-ধূলোর মধ্য়ে যেভাবে মানুষকে বাঁধতে পারার ক্ষমতা আছে তা অন্য কিছুর মধ্যে নেই। সেই কারণ খেলা-ধূলোর এই উৎসবের কটা দিন সোনারপুরের মানুষ যেন আরও বেশি করে আত্মিক বন্ধনে একে অপরের সঙ্গে জুড়ে যান।
স্পোর্টস কার্নিভাল-এর আহ্বায়ক নজরুল আলি মণ্ডলও জানালেন, এই কটা দিন তাঁদের নাওয়া-খাওয়ারও সময় থাকে না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে তাঁরা এই স্পোর্টস কার্নিভাল-এর আয়োজন করে আসছেন।
বর্ণাঢ্য এই স্পোর্টস কার্নিভাল-এ এক বাজি প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়েছিল। এদিন নৈশালোকে ছিল মোহনবাগান ও কাস্টমসের মধ্যে এক ফুটবল ম্য়াচ। হাড্ডা-হাড্ডি-র সেই ম্যাচ শেষ পর্যন্ত গড়ায় টাই-ব্রেকারে। কাস্টামস ৫-৪ গোলে টাইব্রেকার জিতে নেয়।
ম্যাচের আগে নেতাজি স্পোর্টস কমপ্লেকসের ময়দানে বিশাল বিশাল ফানুসও ওড়ানো হয়।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানও জানান আয়োজকরা। স্মারক ও উত্তরীয় তুলে দেওয়া হয় প্রত্যেকের হাতে।