এখন থেকে জ্যোতি বসুর পাশেই থাকবেন সোমনাথ, পরপারে গিয়েও ‘নেতা’র পাশে স্থান
যাঁকে অনুসরণ করে পথ চলা শুরু করেছিলেন, পরপারে গিয়েও তাঁর পাশেই স্থান পেলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। রাজনৈতিক জীবনে সোমনাথ গুরু বলে মানতেন জ্যোতি বসুকে।
যাঁকে অনুসরণ করে পথ চলা শুরু করেছিলেন, পরপারে গিয়েও তাঁর পাশেই স্থান পেলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। রাজনৈতিক জীবনে সোমনাথ গুরু বলে মানতেন জ্যোতি বসুকে। তাঁকে অনুসরণ করেই চলতেন। এবার সেই গুরুর পাশেই ঠাঁই হল শিষ্যের। এসএসকেএম হাসপাতালে জ্যোতি বসুর দেহের পাশেই রাখা হচ্ছে লোকসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষকে।
ফারাক মাত্র আট বছরের। ২০১০ থেকে ২০১৮। আট বছর আগে বার্ধক্যজনিত রোগ-ভোগের পর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু দেহত্যাগ করেছিলেন। সেদিন ছিল ২০১০ সালের ২০ জানুয়ারি। আর ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট চিরনিদ্রায় ঘুমিয়ে পড়লেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। উভয়েই দান করেছিলেন দেহ। সেইমতো গুরু-শিষ্যকে পাশাপাশি রাখার ব্যবস্থা করল এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ।
১৯৬৮ সালে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদানের পরেই জ্যোতি বসুকে রাজনৈতিক পরামর্শদাতা মেনেছিলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। জীবনের ঝড়-ঝঞ্ঝা সবেতেই তিনি মেনে চলতেন জ্যোতি বসুর পরামর্শ। এমনকী যেদিন দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল, তার আগে জ্যোতি বসুর সঙ্গে পরামর্শ করেই নিয়েছিলেন দৃষ্টান্তমূলক সেই সিদ্ধান্ত। তার পরই শেষ হয়ে গিয়েছিল সিপিএমের সঙ্গে ৪০ বছরের সম্পর্ক। তবু আদর্শকে জলাঞ্জলি দেননি তিনি। নিজেকে তুলে নিয়ে গিয়েছেন বিশেষ স্থানে।
সেদিন ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তি নিয়ে ইউপিএ ১ সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নিয়েছিল সিপিএম। তা সত্ত্বেও দলের হুইপ অমান্য করে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করে গিয়েছিলেন লোকসভার তৎকালীন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। ইস্তফা দেননি দলের নির্দেশ সত্ত্বেও। শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে দল তাঁকে বহিষ্কার করেছিল। তিনি অবিচল ছিলেন কর্তব্য-নিষ্ঠায়।
[আরও পড়ুন:কোন দলের সাংসদ ছিলেন সোমনাথ! সিপিএমের শোক-বার্তাতেও স্পষ্ট বহিষ্কার-বিতর্ক]
এহেন এক নেতার প্রয়াণে আজ শোকস্তব্ধ রাজনৈতিক মহল। শোকস্তব্ধ আত্মীয়-পরিজন-অনুগামীরা। এরই মধ্যে এসএসকেএমের অ্যানাটমি বিভাগে জ্যোতি বসুর দেহের পাশেই পাকাপাকি স্থান পেতে চলেছেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। শুধু দেহদানই তিনি করে যাননি, দান করেছিলেন চোখও। তাঁর চোখ দুটি নেবে প্রিয়ংবদা বিড়লা আই হাসপাতাল। ত্বক সংরক্ষণ করা হবে এসএসকেএমে। সেই তোড়জোড় শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। এসএসকেএমে দেহ আসার পরই শুরু হবে প্রক্রিয়া।
[আরও পড়ুন: জ্যোতি বসুও সহমত ছিলেন সোমনাথের সঙ্গে! বহিষ্কার-বিতর্ক উসকে নবতম সংযোজন]