অ্যানাটমি নিয়ে রীতিমতো পড়াশোনা শুভব্রতর, বেহালা ফ্রিজার কাণ্ডে পুলিশের হাতে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য
বেহালায় জেমস লং সরণিতে ফ্রিজারে মৃতদেহ সংরক্ষণ কাণ্ডে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কীভাবে দেহ সংরক্ষণ করতে হয় তা নিয়ে রীতিমতো পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন শুভব্রত।
মায়ের দেহ তিনবছর ধরে ফ্রিজারে রেখে বাড়িতে সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন শুভব্রত মজুমদার। বেহালায় জেমস লং সরণিতে ফ্রিজারে মৃতদেহ সংরক্ষণ কাণ্ডে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কীভাবে দেহ সংরক্ষণ করতে হয় তা নিয়ে রীতিমতো পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন শুভব্রত।
নানা জায়গায় পড়াশোনা করে ইন্টারনেট ঘেঁটে গবেষণা করে শুভব্রত অ্যানাটমি ও চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে গবেষণা করেছেন। সেই থেকে জ্ঞান অর্জন করেই ফ্রিজারে তিন বছর ধরে কীভাবে মায়ের দেহ রেখে দেওয়া যায় তা তিনি রপ্ত করেন। এবং মায়ের দেহ রেখে চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
পুলিশ বৃহস্পতিবার জেরা করে জানতে পারে গত তিনবছর ধরে শুভব্রত মায়ের পেনশনের টাকা তুলে যাচ্ছিলেন। মায়ের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে একাজ করছিলেন তিনি। যা দেখে পুলিশের সন্দেহ পেনশনের টাকা নিশ্চিত করতেই মায়ের দেহ এভাবে মৃত্যুর পরে ফ্রিজার বন্দি করে রেখেছিলেন শুভব্রত।
বাড়িতে আরও একটি ফ্রিজার উদ্ধার হয়েছে। ছয় মাস আগে বাড়িতে আর একটি ফ্রিজার কেনা হয়েছিল। কেন? তাহলে কি বাবার মৃত্যুর পরও একই বন্দোবস্ত করার কথা ভেবে রেখেছিলেন শুভব্রত?
বানতলার একটি নামী লেদার সংস্থায় শুভব্রত কাজ করতেন। পাঁচ বছর আগে সেই চাকরি ছেড়ে দেন। বীণাদেবী ও গোপালবাবু দুজনেই এফসিআই-য়ে সরকারি চাকুরে ছিলেন। পুলিশ সূত্রে বলা হচ্ছে, মায়ের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে ব্যাঙ্ক থেকে তিনবছর ধরে পেনশনের টাকা তুলতেন শুভব্রত। এভাবেই চলছিল। এবার কি বাবার জন্যও একই ছক কষে রেখেছিলেন তিনি? সেই প্রশ্ন উঠছে।
ঘটনা হল, এক প্রতিবেশীর সন্দেহই শেষপর্যন্ত বীণাদেবীর দেহ উদ্ধারে সাহায্য করেছে। তিনি দেখেছিলেন ফ্রিজ খুলে কিছু একটা গোপনে করত শুভব্রত। জানালার পর্দা সরিয়ে তা দেখেন প্রতিবেশী। পরে বাড়িতে ফ্রিজার আসার পরে সন্দেহ গাঢ় হয়। ছয়মাস আগে আরও একটি ফ্রিজার বাড়িতে আনেন শুভব্রত। তাহলে কী অন্য কোনও প্ল্যান ছিল তার? পুলিশ জানার চেষ্টা করছে।
যদিও প্রাথমিকভাবে জেরা করে পুলিশের মনে হয়েছে শুভব্রত মানসিকভাবে অসুস্থ। আর সেই অসুস্থতা থেকেই বিকৃত এই ঘটনা সে ঘটিয়েছে। বিশেষজ্ঞ মনোরোগ চিকিৎসকের পরামর্শও নেওয়া হচ্ছে।