কলকাতায় ফের রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া! ৩ বছর ধরে বাড়িতেই দেহ
রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া বেহালার জেমস লং সরণির ঘোলসাপুরে। ৩ বছর ধরে বাড়িতে মায়ের দেহ রেখে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছেলে ও বাবার বিরুদ্ধে। দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া বেহালার জেমস লং সরণির ঘোলসাপুরে। ৩ বছর ধরে বাড়িতে মায়ের দেহ রেখে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ছেলে ও বাবার বিরুদ্ধে। দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। এলাকায় বছর ৩০-এর বাসিন্দা এই মজুমদার পরিবার।
রবিনসন স্ট্রিটে ঘরে খোলা জায়গায় রাখা হয়েছিল দেহ। কিন্তু বেহালার জেমস লং সরণির ঘোলসাপুরের রেল কলোনিতে দেহ রাখা হয়েছিল ঘরে আলাদা রাখা ফ্রিজে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রৌঢ়া বীণা মজুমদারের মৃত্যু হয়েছিল ২০১৫-র ৭ এপ্রিল। এ সম্পর্কিত ডেথ সার্টিফিকেটও পাওয়া গিয়েছে। এরপর দেহ রাখা হয়েছিল পিস হাভেনে। পরে দেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। প্রতিবেশীরা তখন বাড়ির কর্তা গোপাল মজুমদারের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সেই সময় গোপাল মজুমদার জানিয়েছিলেন, ছেলে মাকে পোড়াতে রাজি নয়। এরপর থেকে প্রতিবেশীরা আর কোনও খোঁজ নেননি। কিন্তু বাড়ির পরিচারিকার মাধ্যমে সব খবরই বাইরে চলে আসত। ঘরে দেহ সংরক্ষণের খবর সেই জানিয়ে দেয়।
ছেলে শুভব্রত মজুমদার লেদার টেকনোলজির মেধাবি ছাত্র ছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে চাকরি ছেড়ে দিয়ে ঘরেই থাকত সে। কেউ বলছেন সে চাকরি করত। লেদার টেকনোলজির ছাত্র হওয়ার সুবাদে, মৃতদেহ কিংবা চামরা সংরক্ষণের বিষয়ের অনেকটাই জানা ছিল ছেলে শুভব্রত মজুমদারের। জানা গিয়েছে, সেই মতোই মৃতদেহের মধ্যেকার তাড়াতাড়ি পচনশীল বস্তু বের করে আলাদা ফ্রিজে দেহ সংরক্ষণ করে সে। দেহ সংরক্ষণে ব্যবহার করা হয়েছিল রায়াসনিকও। ঘর থেকে রাসায়নিকের একাধিক জারও উদ্ধার করেছে বেহালা থানার পুলিশ।
বাড়ির কর্তা গোপাল মজুমদারের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে ছেলে শুভব্রত বিশ্বাস ছিল দেহে প্রাণ ফিরিয়ে আনা সম্ভব। ছেলে চামরার জিনিসের ব্যবসা করে বলেও জানিয়েছেন বাবা। বাবা-ছেলের মানসিক সুস্থতা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
অন্য একটি সূত্রের খবর, মায়ের পেনশন যাতে বন্ধ না হয়ে যায় তার জন্যই এই ব্যবস্থা। এই বিষয়টিও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। রাত দুটো নাগাদ বাড়িতে বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। প্রৌঢ়া বীণা মজুমদারের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।