ব্যস্ত মেট্রোয় গো-বলয়ের খাপ পঞ্চায়েতের ছায়া! তরুণ-তরুণীকে ব্যাপক মারধর
শালীনতা-অশালীনতা নিয়ে তর্ক। এক প্রবীণ ব্যক্তির উস্কানির জেরে দমদম মেট্রো স্টেশনে ব্যাপক মারধর করা হল তরুণ-তরুণীকে।
শালীনতা-অশালীনতা নিয়ে তর্ক। এক প্রবীণ ব্যক্তির উস্কানির জেরে দমদম মেট্রো স্টেশনে ব্যাপক মারধর করা হল তরুণ-তরুণীকে। যদিও বিষয়টি নিয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষ কিংবা কোনও থানাতে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়েরের খবর পাওয়া যায়নি। তবে শহর কলকাতায় খাপ পঞ্চায়েতের ছায়ায় উদ্বিঘ্ন অনেকেই।
তরুণ-তরুণী উঠেছিলেন দক্ষিণের কোনও স্টেশন থেকে। অভিযোগ, এরপর তাঁরা পরষ্পরকে আলিঙ্গন বদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন মেট্রোর মধ্যেই। আলিঙ্গনবদ্ধ যুবককে দেখে প্রথমে প্রতিবাদ করেন এক প্রবীণ ব্যক্তি। সমাজে অবক্ষয়ের নানা প্রশ্নও করেন। তবে ওই তরুণ প্রবীণ ব্যক্তির নানা প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন ঠাণ্ডা মাথায়। আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, যুবকের ঠাণ্ডা মাথার উত্তরে ওই প্রবীণ ব্যক্তি আরও ক্ষেপে যান। এরই মধ্যে তরুণীও উত্তর দেন প্রবীণ ব্যক্তির। তরুণী বলেন, ভিড়ের মধ্যে যদি নিজেরা নিজেদের সিকিওরিটির ব্যবস্থা করে নেয়, তাহলে আপত্তি কোথায়। এই সময় প্রবীণ ব্যক্তি তরুণ-তরুণীকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার শাসানি দেন বলে অভিযোগ। এই সময়ই এক ব্যক্তি দমদমে নামার পর দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বলে অভিযোগ।
দমদমে মেট্রোর দরজা খুলতেই টেনে নামানো হয় ওই তরুণ-তরুণীকে। সিঁড়ির রেলিঙে ধরে শুরু হয়ে যায় গণপ্রহার। হামলায় অভিযুক্তদের অনেকেই ছিলেন মধ্যবয়সী। যদিও এরই মধ্যে কয়েকজন এগিয়ে গিয়ে ওই তরুণ-তরুণীকে উদ্ধার করে বাইরে নিয়ে যান।
ঘটনায় স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, যখন চারিদিকে ধর্ষণের এত ঘটনা, সেই ঘটনাকে ঠেকাতে না পেরেই কি এই উত্তেজনা। নাকি প্রকাশ্যে আলিঙ্গন বদ্ধ হওয়া থাকে বাধা দিলে সমাজে নারী নিগ্রহের মতো ঘটনা কমবে।
কোথায় কে আলিঙ্গন বদ্ধ হবেন, কিংবা চুমু খাবেন তা নিয়ে বলার অধিকার কারও নেই। তবে দৃশ্য যদি অশালীন হয়, তা নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানানো যেতে পারত। এবিষয়ে আইন হাতে তুলে নেওয়া নিয়ে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগছে কেন এতটাই মেজাজ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষের একাংশ।
একুশ শতকের বাংলায় কি রাজস্থান, হরিয়ানার মতো হিন্দিবলয়ের খাপ পঞ্চায়েতের নির্দেশের ঘটনা ঘটবে। তাদের নির্দেশের মতোই কি সমাজ চলবে। সেই প্রশ্ন তুলছেন সমাজের একাংশের মানুষ।