হাইকোর্টে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেফতার
কলকাতা হাইকোর্টে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিশ। লালবাজার সূত্রের খবর, চাকরির আশায় সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন নদীয়ার এক যুবক। তিনি পুলিশকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে সরকারি চাকরি খুঁজছিলেন। সেই সূত্রেই জেলার এক বাসিন্দা তাঁকে বলেন, হাইকোর্টে লোক নেওয়া হবে। ইন্টারভিউ চলছে। বেতনও ভালো। নিয়োগের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা তাঁর ঘনিষ্ঠ। চাকরির জন্য চিন্তা নেই, তবে টাকাপয়সা কিছু লাগবে। চাকরির আশায় অভিযোগকারী টাকা দিয়ে দেন। এরপর তাঁকে চিঠি দিয়ে ইন্টারভিউয়ের জন্য হাইকোর্টে ডাকা হয়। আদালতের একতলায় ভিতরের দিকে একটি ফাঁকা ঘরে চেয়ার-টেবিলে বসা এক ব্যক্তি ইন্টারভিউ নেয়। প্রশ্নোত্তর শেষে জানিয়ে দেওয়া হয়, চাকরি হলে পোস্টের মাধ্যমে নিয়োগপত্র চলে যাবে।
জানা গিয়েছে, একইভাবে আরও অনেক যুবক-যুবতীকে চিঠি পাঠিয়ে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়। এরপর ডাকে তাঁদের কাছে যায় নিয়োগপত্র। তা নিয়ে হাইকোর্টে আসার পর নদীয়ার অভিযোগকারীকে বাইরে বসা এক যুবক হাজিরা খাতায় সই করায়। 'রেজিস্ট্রি বুক' নামে একটি খাতায় নিয়োগপত্রের খুঁটিনাটি লিখে রাখা হয়। সেই প্রতারক জানায়, এখন লকডাউন চলায় ভিতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। তাই বাইরে সইয়ের বন্দোবস্ত। হাইকোর্ট নির্দিষ্ট কয়েকদিন খুলছে। সেই দিনে তাঁকে আসতে হবে। সেই তারিখে হাজির হয়েই আদালত খোলা দেখে ওই যুবকের সন্দেহ হয়। খোঁজ করে রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে নিয়োগপত্র দেখালে জানা যায় সেটি জাল।
তদন্তে নেমে হেয়ারস্ট্রিট থানার পুলিস সিসিটিভি ফুটেজ এবং টাকা নেওয়া ব্যক্তির নাম ও ফোন নম্বর জোগাড় করে। মোবাইলের সূত্র ধরে তাকে আটক করা হয়। জানা যায়, এভাবে তারা অন্তত ৩৫ থেকে ৪০ জনকে ঠকিয়েছে। ধৃত সাতজনের মধ্যে দু'জন বেলেঘাটা, দু'জন চিনার পার্কের বাসিন্দা। বাকিদের বাড়ি নদীয়া ও উত্তর ২৪ পরগনায়। প্রতারিতদের বেশিরভাগ এই জেলাগুলির বাসিন্দা। ধৃতদের এদিন কলকাতা নগর দায়রা আদালতে তোলা হলে বিচারক পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।