নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে পার্থ-পরেশের সিবিআই-হাজিরার মধ্যেই আচমকা ইস্তফা SSC চেয়ারম্যানের, কারণ নিয়ে জল্পনা
প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর (Paresh Adhikari) সিবিআই (CBI)-তে হাজিরার দিনে আচমকাই ইস্তফা দিলেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের (School Service Commission
প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর (Paresh Adhikari) সিবিআই (CBI)-তে হাজিরার দিনে আচমকাই ইস্তফা দিলেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের (School Service Commission) চেয়ারম্যান (Chairman) সিদ্ধার্থ মজুমদার (Siddhartha Majumdar)। মাত্র চারমাস হল তাঁকে এই পদে এনেছিলেন বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বর্তমান পরিস্থিতিতে এসএসসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ কারণ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। এদিকে এই পদত্যাগের পরেই আইএএস শুভ্র চক্রবর্তীকে এসএসসির নতুন চেয়ারম্যান করা হয়েছে।
বিচারপতি চাওয়া মাত্রই অনলাইনে হাজিরা
হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চে মঙ্গলবার বর্তমান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে শুনানি চলছিল। বিচারপতি কোনও সময় না দিয়েই এসএসসির চেয়ারম্যানকে অনলাইনে হাজির হতে বলেন। চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার হাজির হয়ে মন্ত্রী কন্যার নিয়োগে যে দুর্নীতি হয়েছে, তা কার্যত বুঝিয়ে দেন।
প্রথমবারের জন্য তথ্য প্রকাশ্যে
মামলাকারী ববিতা সরকার মঙ্গলবারেই জানিয়েছিলেন, তিনি প্রথমবার মন্ত্রিকন্যার নম্বর জানতে পারলেন এসএসসির চেয়ারম্যানের সৌজন্যে। যা তিনি আরটিআই করেও জানতে পারেননি। এসএসসির চেয়ারম্যান তথ্য তুলে ধরে জানান, মামলাকারী তফশিলি জাতির প্রার্থী হিসেবে ববিতা সরকারের প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৭৭ । তিনি পার্সোনালিটি টেস্টে পেয়েছিলেন ৮। অন্যদিকে মন্ত্রীকন্যার প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬১। তিনি পার্সোনালিটি টেস্টে না বলেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে চাকরি পেয়েছিলেন। মন্ত্রীকন্যার থেকে ১৮ নম্বর বেশি পেয়েও চাকরি থেকে বঞ্চিতই থেকে গিয়েছেন ববিতা সরকার।
চারমাসের মধ্যেই ইস্তফা
গত ১৩ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উদ্যোগে সিদ্ধার্থ মজুমদারকে এসএসসির চেয়ারম্যান করে আনা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে চারমাসের কিছু বেশি সময় তিনি এসএসসির চেয়ারম্যানের পদে ছিলেন। এদিন তিনি ঝাড়গ্রামে মুখ্যমন্ত্রী সফরসঙ্গী থাকা শিক্ষা সচিব মনীশ জৈনকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন বলে জানা গিয়েছে। এর আগে সিদ্ধার্থ মজুমদার কলেজ সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের পদেও ছিলেন। পেশায় তিনি সিটি কলেজের অর্থনীতির অধ্যাপক।
সরকারের মনোভাব বুঝতে পেরেই ইস্তফা
স্কুল সার্ভিস কমিশনে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে চাপে রাজ্য সরকার। সেই পরিস্থিতিতে সিদ্ধার্থ মজুমদার একদিন যে তথ্য সবার সামনে আসেনি, তা তিনি মঙ্গলবার প্রকাশ করে দিয়েছিলেন। তাতে পরিষ্কার হয়ে যায়, মন্ত্রীকন্যার নিয়োগে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের মঙ্গলবারের অবস্থান সরকার মোটেও ভালভাবে নেয়নি বলেই জানা গিয়েছে। তারপর থেকেই সরকারি মহলে বার্তা ছড়িয়ে পড়ে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের পদে সরকার এবার কোনো আইএএসকে বসাতে চায়। সেই বার্তাও সিদ্ধার্থ মজুমদারের পদত্যাগের অন্যতম কারণ বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।