কঙ্কাল কাণ্ডের পার্থর মৃত্যু : খানিকটা সিজোফ্রেনিক ডিপ্রেশন, আর অনেকটাই দায়ী একাকীত্ব
একাকীত্বই কেড়ে নিল রবিনসন স্ট্রিটের কঙ্কালকাণ্ড খ্যাত পার্থ দে-কে। সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য যিনি বছর খানেকেরও বেশি সময় ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি, সেই লড়াই থেমে গেল অবশেষে।
কলকাতা, ২২ ফেব্রুয়ারি : একাকীত্বই কেড়ে নিল রবিনসন স্ট্রিটের কঙ্কালকাণ্ড খ্যাত পার্থ দে-কে। সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য যিনি বছর খানেকেরও বেশি সময় ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি, সেই লড়াই থেমে গেল অবশেষে। ওয়াটগঞ্জের আবাসনে তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত নেমে পুলিশ একপ্রকার নিশ্চিতই তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর আত্মহত্যার কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে- খানিকটা সিজোফ্রেনিক ডিপ্রেশন, আর অনেকটাই দায়ী একাকীত্ব।[কঙ্কাল কাণ্ডের 'নায়ক' পার্থ দে-র অস্বাভাবিক মৃত্যু]
পুলিশ তদন্ত নেমে জানতে পেরেছে, মাদার হাউস থেকে ওয়াটগঞ্জের আবাসনে চলে যাওয়ার পর থেকেই তিনি বিজয়গড়ের একটি সংস্থায় যাতায়াত শুরু করেছিলেন। ওই সংস্থায় কম্পিউটার ও স্পোকেন ইংলিশ শেখাতেন তিনি। তদন্তের স্বার্থে এদিন ওই সংস্থার অফিসে পাড়ি দিয়েছিল পুলিশ। সেখানে গিয়ে পুলিশ অনেক তথ্য পেয়েছে পার্থ-র সম্বন্ধে।[অন্তরালে থেকেই চির অন্তরালে পার্থ দে! তবে কি ফের মানসিক অবসাদ গ্রাস করেছিল তাঁকে?]
পুলিশ জানতে পেরেছে, পার্থ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসছিলেন। সমাজের মূল স্রোতে ফেরার সমস্ত রকম চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন তিনি। ফিরছিলেনও সুস্থ স্বাভাবিক সমাজে। কিন্তু কীভাবে সমস্ত কিছু থেমে গেল। পার্থ-র আত্মহত্যার খবরে স্তম্ভিত ওই সংস্থায় তাঁর সহকর্মীরা। এক মহিলা সহকর্মী জানালেন, পার্থ তাঁদের কাছে বারবার বলতেন, দিদি, আমি খুব একা। দিদির কথা বড্ড বেশি মনে পড়ে। কাজের ফাঁকে পার্থ তাঁদের দিদি দেবযানীর গাওয়া গানও শোনাতেন।
সহকর্মীদের কথায়, পার্থ তাঁর একাকীত্ব কাটানোর চেষ্টা করত। কিন্তু কোথায় যেন অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁর চলার পথ। মনেবিদদের কথায়, পার্থ দে যে জায়গা থেকে আবার সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন, এই অবস্থাকে বলা হয় সিজোফ্রেনিক ডিপ্রেশন। পার্থ হলেন একজন সিজোফ্রেনিক। এই ধরনের রোগী ১০ শতাংশ ক্ষেত্র আত্মঘাতী হন। পার্থ সেই ১০ শতাংশের মধ্যেই পড়েছেন। প্রায় সুস্থ হয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হল না।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ওয়াটগঞ্জের আবাসন থেকে পার্থ দে-র মৃতদেহ উদ্ধার হয়। দেহের পাশ থেকে একটি পেট্রলের বোতল উদ্ধার হয়। পাওয়া যায় একটি দেশলাইও। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। বুধবার পার্থ দে-র দেহ ময়নাতদন্ত করা হয়। সেই ময়নাতদন্তের ভিডিও রেকর্ডিংও করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।