মমতার নিরঞ্জন-নির্দেশিকায় ঘোর আপত্তি, গেরুয়া শিবিরে আন্দোলন-মামলার প্রস্তুতি
প্রতিমা নিরঞ্জনে সরকারি নির্দেশিকা অমান্য করতে পুজো কমিটিগুলির প্রতি আর্জি জানাল সঙ্ঘ। মুখ্যমন্ত্রীর নিরঞ্জন নির্দেশ নিয়ে প্রয়োজনে আইনি-যুদ্ধে নামতেও তারা তৈরি। বিজেপি ইতিমধ্যেই মামলার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। বিজেপির এই নিরঞ্জন-যুদ্ধে আরএসএসেরও যে সায় আছে তা স্পষ্ট হয়ে গেল সঙ্ঘের ঘোষণায়।

রাষ্ট্রীয় সেবক সঙ্ঘের কথায়, হিন্দু ধর্মের রীতি নীতির কোনও তোয়াক্কা করছে না তৃণমূল সরকার। একই দিনে দুই ধর্মের অনুষ্ঠান পড়েছে। এটাকে সম্প্রীতি বজায় রেখে করা যেত। কিন্তু তা না করে একটা ধর্মের রীতিকে কার্যত অবহেলা করা হল। অন্য ধর্মাবলম্বীদের তোষণের জন্যই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নির্দেশিকা আরোপ করেছেন বলে অভিযোগ।
আরএসএস মুখপাত্র জিষ্ণু বসু জানান, মুখ্যমন্ত্রীর বিসর্জন ফর্মুলা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। হিন্দু ধর্মের রীতি নীতি আদৌ গুরুত্ব পাচ্ছে না এই সরকারের কাছে। দুই ধর্মকেই যে সমান গুরুত্ব দেওয়া যেতে পারে, সেই ভাবনাই নেই সরকারের। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন কেন একাদশীর দিন নিরঞ্জনের অনুমতি দেওয়া হবে না।

একই সঙ্গে দুই ধর্মের অনুষ্ঠান নির্ধারিত হয়েছে এবার। এই অবস্থায় সংঘাত এড়াতে মুখ্যমন্ত্রী মহরমের দিন নিরঞ্জন বন্ধ রাখার নির্দেশিকা জারি করেন। তাতেই সমালোচনা শুরু করেছিল বিজেপি। মামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল তারা। এবার সঙ্ঘ সরাসরি পুজো কমিটির উদ্দেশ্যে নির্দেশিকা অমান্য করার আবেদন করল। হিন্দু নিয়ম মেনেই নিরঞ্জন করার আবেদন জানানো হল।
এদিন কোন কোন পুজো কমিটি মহরমের জন্য বিসর্জনের অনুমতি পায়নি তা পুলিশের কাছে জানতে চেয়েছে আরএসএস। এর মাধ্যমে সঙ্ঘ চাপ সৃষ্টি করল পুলিশের উপর। চাপিয়ে দেওয়া নির্দেশিকা মানা হবে না বলেও বার্তা দিল আরএসএস।
গতবারও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহরমের শোভাযাত্রা ও দুর্গাপুজোর নিরঞ্জন নিয়ে যাতে কোনও অশান্তি না হয়, তার জন্যই একই সিদ্ধান্ত এবারও বলবৎ রেখেছিলেন তিনি। গতবার প্রতিবাদ করছিল বিজেপি ও আরএসএস। তবে এবারের মতো গর্জে ওঠেনি তারা। এবার বিজেপি যে ছেড়ে কথা বলবে না তাও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে তাঁদের বার্তাতেই।