রূপার ধর্ষণ-মন্তব্যে খোঁচা কবীর সুমনের, প্রতিক্রিয়ায় কী জানালেন অভিনেত্রী-সাংসদ
রূপাদেবী এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘তৃণমূলের আনুগত্য ছাড়া ভিনরাজ্যের কেউ পশ্চিমবঙ্গে এলে ১৫ দিনের মধ্যে ধর্ষিতা হবেন।’ সেই কথা টেনেই একুশের মঞ্চে খোঁচা কবীর সুমনের।
২১-এর মঞ্চ থেকে বিজেপি সাংসদ তথা জনপ্রিয় অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে ধর্ষণ-মন্তব্যে খোঁচা দিলেন কবীর সুমন। বাংলা সঙ্গীত জগতের জনপ্রিয় শিল্পী কবীর সুমন বিজেপিকে কটাক্ষ করার পাশাপাশি রূপাদেবীকে আক্রমণ করে বলেন, 'ওদের রূপা নামে কে একজন আছে না। ওর আবার কথায় কথায় ধর্ষণ হয়।' তাঁর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিতর্কে ঘৃতাহুতি পড়াই স্বাভাবিক।
এদিন রূপা গঙ্গোপাধ্যায় স্বভাববিরুদ্ধ ভঙ্গিতেই সুমনবাবুর ধর্ষণ মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দেন। তিনি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েই সুমনবাবুর কথার তীব্র বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, 'সুমনবাবু একজন গুণী মানুষ, জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী। তাঁর মনে হয়েছে আমাকে আক্রমণ করতে ওই কথা বলা দরকার, উনি বলেছেন। কী আর প্রতিক্রিয়া জানাব! আসলে উনি যে পার্টিতে রয়েছেন, সেই পার্টির ওটাই কালচার। তাঁদের নেতা-কর্মীদের খুশি করতেই এমন মন্তব্য করে থাকতে পারেন সুমনবাবু।'
গত চারদিন আগেই রূপাদেবী এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, 'তৃণমূলের আনুগত্য ছাড়া ভিনরাজ্যের কেউ পশ্চিমবঙ্গে এলে ১৫ দিনের মধ্যে ধর্ষিতা হবেন।' তৃণমূলকে সমর্থন করেন এমন ভিনরাজ্যের রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি এই বার্তা দেন। তিনি মন্তব্য করেছিলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আনুগত্য ছাড়া তাঁদের স্ত্রী-কন্যাদের এ রাজ্যে পাঠিয়ে দেখুন, কী হয়!'
এর পরিপ্রেক্ষিতেই শোভনদেববাবু উত্তর দেন, 'এ রাজ্যে থেকে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে কতবার ধর্ষিতা হতে হয়েছে। তাঁর মন্তব্যের সত্যতা প্রমাণ করতে চাইলে এর জবাব দিতে হবে তাঁকে।' বিতর্ক শুরু হয় বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে। এরই মধ্যে থানা পর্যন্ত গড়ায় এই বিতর্ক। তৃণমূলের বর্ষীয়ান বিধায়ক তথা মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে জোড়াসাঁকো থানায় এফআইআর করেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়।
এদিন ফের সেই ধর্ষণ মন্তব্যেরই খোঁচা দিলেন শিল্পী কবীর সুমন। ধর্মতলার একুশের মঞ্চ থেকে তিনি রূপার ওই মন্তব্যের সমালোচনা করেন। সেইসঙ্গে বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, 'বিজেপি নামে একটি দল আছে। ওদের উপর রাগ করে লাভ নেই। ওরা রাগ করার যোগ্যই নয়।' তাঁর দাওয়াই, বিজেপিকে শুধু আটকে দিলেই হবে। জনগণের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, 'বিজেপিকে গুরুত্ব দেবেন না। ওরা এমনিই চলে যাবে।'
এবারও একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে ডাকা পেয়েছিলেন শিল্পী কবীর সুমন। ডাক পেয়েছিলেন গান গাওয়ার। নজরুল ইসলামের একটি গান পরিবেশনের ফাঁকে ফাঁকেই রূপা দেবীর সমালোচনা করেন তিনি। বিজেপিকেও কটাক্ষ করেন। আর গানের মাধ্যমেই তিনি এদিন মমতা বন্দনায় মুখরিত হন। নজরুলের গানের শেষ লাইন বদলে দিয়ে তিনি গেয়ে ওঠেন- 'আমরা মমতার মতো উচ্ছ্বল।' তাঁর এই লাইনের জন্যই করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে সভাস্থল।