‘সমালোচনা না করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্ব দিন’— রাজভবনের বিজ্ঞপ্তিতে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘জবাব’
মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মমতার অভিযোগের পরই রাজভবনের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। এদিন ফের বিজ্ঞপ্তিতে জারি করে অনাস্থা প্রকাশ করলেন রাজ্যপাল।
রাজ্যপালের 'হুমকি' নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে আরও কড়া বার্তা দিলেন রাজ্যপাল। বুধবার রাজভবনের তরফে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়, 'রাজ্যপাল ও রাজভবনকে অপমান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি রাজ্যবাসীর আবেগকে উসকে দিতেই এই অভিযোগ করা হয়েছে।'
রাজভবনের তরফে বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে- 'আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের ব্যর্থতা ঢাকতেই অন্যদিকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আর সেই চেষ্টা চালাতে আসরে নামানো হয়েছে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে।' উল্লেখ্য, পার্থবাবু এদিন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, রাজ্যপাল এমন ভাষাতে কথা বলেছেন যাতে মনে হতে বাধ্য মুখ্যমন্ত্রী তাঁর অধীনে কাজ করেন।
এই প্রেক্ষিতে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- 'রাজ্যপাল তাঁর সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। এ বিষয়ে কারও কাছ থেকে কোনও কিছু শেখার নেই তাঁর। মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রীরা অভিযোগ করেছেন, রাজভবন বিজেপি বা আরএসএসের অফিসে পরিণত হয়েছে। এ ধরনের মন্তব্য একেবারেই অনুচিত।'
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে- 'রাজ্যপাল এমন কিছু বলেননি যাতে মুখ্যমন্ত্রী অপমানিত বোধ করেন এবং যা হুমকি হিসেবে গণ্য হতে পারে। রাজভবন রাজ্য সরকারের কোনও অফিস নয়। রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানানোর জন্য যে কোনও নাগরিক আসতে পারেন। রাজ্যপালের কাছে কেউ কোনও অভিযোগ জানালে বা কোনও প্রতিনিধি দল অভিযোগ জানালে তা ওয়েস্টপেপার বক্সে ছুড়ে ফেলে দেয় না রাজভবন।'
রাজভবন থেকে এদিন সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, যখনই এমন অভিযোগ আসে, তখন তা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। এবারও তাই করা হয়েছে। তাই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এই অভিযোগ করার আগে মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর সহকর্মীরা একবার ভাবুন।' এদিন ধর্ম-বর্ণ-জাত নির্বিশেষে রাজ্যে শান্তি ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আবেদন জানানো হয় রাজভবনের বিজ্ঞপ্তিতে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে মমতার 'জবাব'-এর পরই রাজভবনের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। সেই বিজ্ঞপ্তিতে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর বয়ানে বলা হয়- 'মুখ্যমন্ত্রীর ভাষায় আমি হতবাক। আমি জনগণের, আমি কোনও রাজনৈতিক দলের নই। রাজ্যে কোনও ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গেলে রাজ্যপাল নীরব থাকতে পারেন না।'
এদিন ফের বিজ্ঞপ্তি জারি করে মমতাকে আরও কড়া বার্তা দিলেন রাজ্যপাল। মঙ্গলবারের বিবৃতিতে রাজভবন স্রেফ কারণ দর্শালেও এদিনের বিজ্ঞপ্তিতে রাজ্য সরকারের প্রতি রাজ্যপালের অনাস্থার ছাপ ছিল স্পষ্ট। রাজ্যপাল এদিন বার্তা দেন, সমালোচনা না করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্ব দিন মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীরা।