কালিকার স্মৃতিকে উসকে দিল দোহার, ভাটিয়ালি সুরে মাতল পূর্বালোক মিলন উৎসব
song.আব্বাসউদ্দিন থেকে ভাটিয়ালি, লালন-ফকির কিছুই বাদ গেল না। কালিকার কাছে গ্রাম বাংলার মেঠো সুর যেমন ছিল আত্মা তেমনি তার সঙ্গে জুড়ে থাকা বাদ্যযন্ত্রকে সামিল করতে পারাটাও ছিল মুন্সিয়ানা।
এক মাসের পরেই কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যের প্রথম প্রয়াণ দিবস। তার আগে কালিকার হাতে তৈরি দোহার এক অন্য বার্তাই দিয়ে গেল। দোহার দলটির এই মুহূর্তে মূল দেখাশোনার দায়িত্বে কালিকার ছায়াসঙ্গী রাজীবের হাতে। প্রজাতন্ত্র দিবসে পূর্বালোক মিলন উৎসবে সঙ্গীত পরিবেশন করতে এসে দোহার-এর পক্ষ থেকে রাজীব জানান,তাঁদের বিশ্বাস কালিকা চলে গিয়েও তাঁদের মধ্যে রয়েছেন। এমনকী, মঞ্চে তাঁরা যখন গান করেন তখন নাকি তিনি সেখানে তাঁদের সঙ্গে উপস্থিত থাকেন কালিকা। এভাবে এককালের সঙ্গীকে কাছে পাওয়ার অনুভূতি নিয়ে দোহার এগিয়ে চলে সুরেরর আকাশ গঙ্গায়।
কলকাতার বহুস্থানে অনুষ্ঠান করলেও দোহার এই প্রথম পূর্বালোক মিলন উৎসবে অংশ নিল। অথচ, পূর্বালোক থেকে দোহারের প্রতিষ্ঠাতা কালিকাপ্রসাদের বাড়ি মাত্র কয়েক মিনিটের দূরত্বে। বাংলার মাটির গানের জনপ্রিয় বাংলা ব্র্যান্ড 'দোহার' অবশেষে পূর্বালোক-এ পা রাখল প্রজাতন্ত্র দিবসে। আর সেই পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে যেন উসকে উঠল কালিকা ও দোহার-কে নিয়ে একাধিক সব স্মৃতি। কালিকা ঠিক যে ভাবে গ্রাম বাংলার গান পরিবেশনার সঙ্গে সঙ্গে সেই সুরের রূপ-রস গন্ধের সঙ্গে শ্রোতাদের পরিচয় করিয়ে দিতেন দোহারের বর্তমান সদস্যরাও ঠিক সেভাবে সুরের ভেলা নিয়ে যেন এগিয়ে চললেন।
[আরও পড়ুন- পূর্বালোক মিলন উৎসবে বুড়ো হাড়েও ভেলকি, ৭০ পেরিয়েও অসীম দমে সকলকে পিছনে ফেললেন জহর]
আব্বাসউদ্দিন থেকে ভাটিয়ালি, লালন-ফকির কিছুই বাদ গেল না। কালিকার কাছে গ্রাম বাংলার মেঠো সুর যেমন ছিল আত্মা তেমনি তার সঙ্গে জুড়ে থাকা বাদ্যযন্ত্রকে সামিল করতে পারাটাও ছিল মুন্সিয়ানা। কালিকার এই ঘরানার হাত ধরেই একদিন দোহার-এ স্থান পেয়েছিলেন নীলাঞ্জনদা। যার সারিঙ্গা যন্ত্রটি দোহার-এর সঙ্গীত পরিবেশনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।
[আরও পড়ুন- জনপ্রিয় এক টিভি-শো-এ এসেছিল খ্যাতি, পূর্বালোক মিলন উৎসবে জাদুর ছোঁয়া দিলেন সৌমিলি]
একে প্রজাতন্ত্র দিবস তার উপরে গ্রাম বাংলার গান সেখানে বিদ্রোহের আগুন না জ্বললে কেমন লাগে! তাই দোহার-এর হাত ধরেই এল 'বাঁধ ভেঙে দাও বাঁধ ভেঙে দাও' গানটি।
অকাল প্রয়াণের আগে কালিকাপ্রসাদ ইন্দো-বাংলা যৌথ উদ্যোগের একটি ছবিতে সুর দিয়েছিলেন। সেই ছবির গান সঙ্গীতপ্রেমীদের মনও কেড়েছে। পূর্বালোক মিলন উৎসবে সেই গানও শোনালেন কালিকাবিহীন দোহারের সদস্যরা। কোরাসের সমন্বিত কণ্ঠে বারবার যেন মূর্ত হয়ে উঠেছিলেন কালিকা।
দোহার-এর পরিবেশনার অন্যতম জনপ্রিয় দুর্গা-দর্শন গান। যার সঙ্গে জুড়ে থাকে অসাধারণ ধনুচি নৃত্য। সমাপ্তিতে সেই গান নিয়ে বিদায় নেন দোহার-এর সদস্যরা। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে দোহারের সদস্যদের হাতে স্মারকও তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যের একটি ছবিও তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।