কবে শেষ হবে এই মৃত্যু-মিছিল, ঐত্রীর মৃত্যুতে আওয়াজ তুললেন সন্তানহারা মায়েরা
হাসপাতাল ইউনিট হেড জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায়কে সাসপেন্ড করেই দায় সারতে চাইছে। এর প্রতিবাদেই শনিবার সকাল থেকে আমরি হাসপাতালের সামনে অবস্থান শুরু করল ঐত্রীর মা-বাবা ও পরিবার।
শুধু সাসপেনশনেই সন্তুষ্ট নয় ঐত্রীর পরিবার, তাঁদের দাবি ঐত্রীর মৃত্যুর সুবিচার। হাসাপাতাল ইউনিট হেড জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায়কে সাসপেন্ড করেই দায় সারতে চাইছে। এর প্রতিবাদেই শনিবার সকাল থেকে আমরি হাসপাতালের সামনে অবস্থান শুরু করল ঐত্রীর মা-বাবা ও পরিবার। সেই অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হলেন স্বজনহারানো অন্য পরিবারেরাও।
ঐত্রীর মায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে যাঁরা ঐত্রীর পাশে থাকতে চায়, তাঁরাও সামিল এই অবস্থানে। সামিল হন বেসরকারি হাসপাতালের গাফিলতিতে মৃত কুহেলি ও ঋতজা-র মায়েরাও। রয়েছেন আরও অনেক ভুক্তভোগী মায়েরা। এই মিছিল থেকেই দাবি উঠল- কবে শেষ হবে এই মৃত্যু মিছিল। কুহেলি, ঋতজার পর ঐত্রীর মৃত্যু। আর মেনে নেওয়া যায় না। এবার শেষ হোক এই অবিচার।
পরিবারের সদস্যরা ঐত্রীর ছবি দেওয়া টি-সার্ট পরে অভিনব প্রতিবাদে সামিল হন। মোমবাতি মিছিল করে তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। ঐত্রীর মা এদিনও দাবি জানান, 'আমরা তো সাসপেন্ড চাইনি। আজ সাসপেন্ড হয়েছেন, কাল আবার ফিরে আসবেন। জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায়ের মতো মানুষেরা যদি মেডিকেল ক্ষেত্রে থাকেন, তাহলে ঐত্রীর মতো আরও অনেক ফুটফুটে প্রাণ ঝরে যাবে। আমার ঐত্রীকে তো সরাসরি খুন করেছে হাসপাতাল। আমি চাই ঐত্রীও হোক শেষ শিশু, যাকে এভাবে চলে যেতে হল। শুধু ঐত্রীর মতোর শিশুই নয়, কোনও মানুষকেও যেন এভাবে চিকিৎসার গাফলতিতে চলে যেতে না হয়।'
এদিন প্রশাসনের বিরুদ্ধেও সরব হন ঐত্রীর মা শম্পা দে। তিনি বলেন, 'এখনও প্রশাসন আমরি হাসপাতালের এই অমানবিক ক্রিয়াকলাপের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তাই আমরা এই অবস্থান চালাচ্ছি সুবিচারের দাবিতে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নিলে অমরণ অনশনে বসব আমরা।'
ঐত্রীর মায়ের দাবি, 'আড়াই বছরের ফুটফুটে মেয়েটা এক ইঞ্জেকশনেই শেষ হয়ে গিয়েছে। তারপরও হাসপাতাল এতটুকু সংবদেনশীল ব্যবহার করেনি। জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায় তো একজন মহিলা। একজন মা। তিনি কী করে এরকম অমানবিক আচরণ করলেন। তাই এর শেষ দেখতে চাই আমি।'
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যাপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন ঐত্রীর মা ও বাবা। তারপর শুক্রবার দে দম্পতি সুবিচারের আশায় ছুটে যান কলকাতা মেডিকেল কাউন্সিলে, যান পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশনেও। সেখানে গিয়েও একই দাবিতে সরব হন। দুদিন সময় দেন ঐত্রীর মা শম্পা দে। কিন্তু জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায়কে সাসপেন্ড করে দায় সেরে ফেলতে চাওয়ায় এদিনই আমরির সামনে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হন ঐত্রীর পরিবারের সদস্যরা।