ধ্বংসস্তূপে গুরুতর আহত হয়ে পড়ে, ভিডিও কল করে প্রতিবেশীদের সঙ্গে যোগাযোগ তরুণীর
টিভিতে মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার খবর শুনেই ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটে গিয়েছিলেন। ঘটনাস্থলে গিয়েই দেখেন প্রান্তিকার সংজ্ঞাহীন শরীরটা পড়ে আছে স্ল্যাবের পাশে।
আচমকাই ফোনটা বেজে উঠেছিল। মোবাইলটা শর্মিষ্ঠার হাতে ছিল। শর্মিষ্ঠা ফোনটা হাতে নিয়ে দেখতে পান একটা ভিডিও কল। তাঁর বাড়িতে থাকা প্রান্তিকার ভিডিও কল। অন করতেই বিস্মিত হওয়ার পালা। কারণ, প্রায় সজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে প্রান্তিকা। ঠিক করে চোখ খুলতে পারছে না সে। কোনওমতে আঙুল দিয়ে কিছু দেখানোর চেষ্টা করছে। শর্মিষ্ঠা দেখেন প্রান্তিকার চারদিকে একটা ধ্বংসস্তূপ। মনে হচ্ছে যেন কোথাও ব্রিজ ভেঙে পড়েছে।
আচমকাই ভিডিও-র মধ্যে দুটো ছেলের মুখ ভেসে ওঠে। তারাই জানান মাঝেরহাটের উড়ালপুল ভেঙে পড়েছে। প্রান্তিকা গুরুতর আহত। দুই যুবক জানতে চান তাঁরা আহত তরুণীর পরিচিত কিনা। শর্মিষ্ঠা জানান তাঁরা প্রতিবেশী। প্রান্তিকাকে এতি দ্রুত এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলেন শর্মিষ্ঠা।
ভবানীপুরে বাড়়ি শর্মিষ্ঠার। তাঁদের বাড়িতেই ছোট থেকে থাকে প্রান্তিকা। তাঁর বাবা ছোট-খাটো কাজ করেন। প্রান্তিকাদের আসল বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুর। সম্প্রতি ইউনাইটেড মিশন থেকে পাশ করে সে কলেজে ভর্তি হয়েছিল। প্রতিদিনের মতোই বাসে করে ভবানীপুরের বাড়িতে ফিরছিল প্রান্তিকা। আর সে সময় মাঝেরহাট উড়ালপুলের মাঝের একটা অংশ ভেঙে পড়ে। প্রান্তিকাকে এসএসকেএম-এ আনার আগেই বাচ্চা কোলে সেখানে পৌঁছে যান শর্মিষ্ঠা। মাথায় গুরুতর চোট রয়েছে প্রান্তিকার। চিকিৎকরা জানিয়েছেন অবস্থা সংকটজনক।
[আরও পড়ুন: মাঝেরহাটে ব্রিজ ভেঙে পড়ার নেপথ্যে কি মেট্রোর কাজ! কী বলছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ]
[আরও পড়ুন: সামনে মাঘেই স্থির হয়েছিল বিয়ের, খোঁজ না পেয়ে মর্গে ছেলের দেখা পেলেন মা]
[আরও পড়ুন: ট্যাক্সি নিয়ে মাঝ ব্রিজ থেকে পড়েও গায়ে আঁচড় লাগেনি, অলৌকিক রক্ষা চালক-সহ যাত্রীদের]
[আরও পড়ুন: মাঝেরহাট ব্রিজ বিপর্যয়ে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা মমতার, উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন]
শুধু প্রান্তিকাই নয়, মাঝেরহাটের এই ব্রিজ ভেঙে পড়ার ঘটনায় এসএসকেএমে ভর্তি রয়েছেন নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। তিনি জামাইয়ের বাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন। যে সময় তাঁরা ব্রিজের উপরে ছিলেন, তখনই ব্রিজটি ভেঙে পড়ে। ব্রিজের সঙ্গে সঙ্গে বাইক নিয়ে নিচে পড়ে যান বাইক আরোহী দুজন। নজরুলের জামাইয়ের কোমরে আঘাত লাগে। আর নজরুল ইসলামের আঘাত লাগে সারা শরীরে।
[আরও পড়ুন: কলকাতাকেও হার মানায় যেসব ভয়াবহ দুর্ঘটনা, ব্রিজ-বিপর্যয়ের ইতিহাস একনজরে]
[আরও পড়ুন: 'ব্রিজের রঙ নীল-সাদা করে কোনও রক্ষণাবেক্ষণ হয় না', মাঝেরহাট-কাণ্ডে তোপ দাগলে সুজন ]
[আরও পড়ুন: কলকাতার ব্রিজ দুর্ঘটনা ঘিরে সরকারকে তোপ রাজ্যপালের, মন্তব্যে উঠে এল ক্ষোভ ]
[আরও পড়ুন:মমতার সাত বছরে বাংলায় উড়ালপুল বিপর্যয়ের সাতকাহন, নবতম সংযোজন মাঝেরহাট ]
এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হন ১৪ জন আহত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মদন মিত্র উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালে। এসএসকেএমে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয় ব্রিজ দুর্ঘটনায় আহতদের জন্য। সবাই যাতে সুষ্ঠু চিকিৎসা পায়, রোগীর পরিবারকে যাতে কোনও সমস্যার পড়তে না হয়, পুরো বিষয়টিতে তদারকি করেন মদন মিত্র।
[আরও পড়ুন:ব্রিজ ভাঙার দায় মমতার সরকারের! সরাসরি অভিযোগ মোদীর দলের]
[আরও পড়ুন: কলকাতায় ব্রিজ ভাঙার ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক! পাশে থাকার আশ্বাস মোদীর]
[আরও পড়ুন:ফিরল দু-বছর আগের ভয়াবহ স্মৃতি, মাঝেরহাটে ব্রিজ ভেঙে মৃতের সংখ্যায় ধন্দ]