For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

সংসার চলে না শিক্ষকদের, ২ টাকা করে দানের জন্য পোস্টার, তৃণমূল শিক্ষক নেতার মন্তব্যে বিতর্ক

প্রাথমিক স্কুল স্পোর্টস-এ শিক্ষকদের চাঁদার ইস্যুকে ঘিরে এবার ব্য়াপকভাবে ছড়াল ক্ষোভ। সোমবারই পশ্চিম বর্ধমানের প্রাথমিক শিক্ষক পর্ষদের চেয়ারম্যান এ কে দে ৫০০ টাকা চাঁদার জন্য সার্কুলার জারি করেন।

Google Oneindia Bengali News

প্রাথমিক স্কুল স্পোর্টস-এ শিক্ষকদের চাঁদার ইস্যুকে ঘিরে এবার ব্য়াপকভাবে ছড়াল ক্ষোভ। সোমবারই পশ্চিম বর্ধমানের প্রাথমিক শিক্ষক পর্ষদের চেয়ারম্যান এ কে দে ৫০০ টাকা চাঁদার জন্য সার্কুলার জারি করেন। শিক্ষকদের কাছ থেকে স্পোর্টস-এর জন্য এই চাঁদা আদায়ের জন্য স্কুল পরিদর্শকদের নির্দেশও দেওয়া হয় ওই সার্কুলারে। পশ্চিম বর্ধমানে যখন এই ঘটনা ঠিক তখন তোলপাড় হল বারাসত সার্কেল। সেখানে চাঁদা না দেওয়া শিক্ষকদের নাম করে পোস্টারিং হয়েছে। আর এতেই ক্ষুব্ধ শিক্ষক মহল।

সংসার চলে না শিক্ষকদের, ২ টাকা করে দানের জন্য পোস্টার, তৃণমূল শিক্ষক নেতার মন্তব্যে বিতর্ক

বারাসত সার্কেল জুড়ে অন্তত জনা কুড়ি শিক্ষক-শিক্ষিকার নামে এই পোস্টারিং হয়েছে। নাম করে করে সেই পোস্টারে জানানো হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকারা কত মাইনে পান সে কথা এবং সেই সঙ্গে এটাও জানানো হয়েছে যে স্কুল স্পোর্টস-এর জন্য এঁরা কেউ চাঁদা দেননি। এমনকী এমন কথাও লেখা হয়েছে যে এই সব শিক্ষিক-শিক্ষিকাদের সংসার চলে না, তাই প্রত্যেককে ২ টাকা করে দান করতেও আহ্বান জানানো হয়েছে এই সব পোস্টারে। পোস্টারে যে সব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নাম এভাবে প্রকাশ্যে আনা হয়েছে তাতে অনেকেই ক্ষুব্ধ। স্কুল স্পোর্টস সরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়। কিন্তু, তারপরও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হয়। কেউ অস্বীকার করলেই তাঁর নামে পোস্টারিং করে দেওয়া হয়। এই চল অনেকদিন ধরেই চলছে বলে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকার অভিযোগ। অপমানের ভয়ে অনেকে চাঁদা দিয়ে দিলেও এখন বহু স্কুল শিক্ষকই নৈতিকতার প্রশ্নে চাঁদা দিতে অস্বীকার করছেন। এঁদের অনেকরই অভিযোগ, প্রত্যেকবার এভাবে চাঁদা তুলে অনেক অর্থ-ই সংগ্রহ হয়। কিন্তু, তার কোনও হিসাব পাওয়া যায় না।

সংসার চলে না শিক্ষকদের, ২ টাকা করে দানের জন্য পোস্টার, তৃণমূল শিক্ষক নেতার মন্তব্যে বিতর্ক

বারাসত সার্কেলে এমন ইস্যুতে পোস্টার পরা নিয়ে ওয়ানইন্ডিয়া বেঙ্গলি বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে কথাও বলে। উত্তর ২৪ পরগনার জেলা তণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির প্রধান দেবজ্যোতি ঘোষ জানান, পোস্টারে যেভাবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নাম নেওয়া হয়েছে তা নিন্দনীয় এবং বিষয়টি নিয়ে বারাসত থানার সঙ্গে কথা বলেছেন এই ঘটনায় জড়িত বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। কিন্তু, তাঁর আদর্শ-এর স্থান থেকে চাঁদা না দেওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রবল ধিক্কার জানিয়েছেন দেবজ্যোতি। তাঁর মতে, সামান্য ১০০ টাকা চাঁদা যারা দিতে পারেন না তাঁরা সমাজের কলঙ্ক এবং চরম ঘৃণ্যতম কাজ করছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, শিক্ষকরা মাস গেলে ২৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা করে মাইনে নিচ্ছেন। বছরের একটা সময়ে ১০০ টাকার চাঁদা দিতে তাঁদের কেন এত অসুবিধা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। চৌত্রিশ বছর ধরেই স্কুল স্পোর্টস-এ শিক্ষকদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। তাহলে চৌত্রিশ বছর ধরে চলে আসা একটি সিস্টেমকে রাতারাতি বদলে ফেলার চেষ্টা কেন করা হচ্ছে তা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সরকারের কর্মসূচিকে বাধা দানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ দেবজ্যোতির। তৃণমূল কংগ্রেসের এই আক্রমণাত্মক শিক্ষক নেতার দাবি, প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে সরকার বিরোধী শক্তি-কে তিনি প্রতিহত করতেও তৈরি। দেবজ্যোতি ঘোষের মতে, স্পোর্টস করার জন্য ১ লক্ষ টাকাও যদি সরকার দেয় তাহলেও এই সব শিক্ষকদের মানসিকতার পরিবর্তন হবে না। সরকারের থেকে পাওয়া ১০ হাজার টাকা দিয়ে স্পোর্টস হলেও আরও কিছু খরচ থাকে। তাই সুষ্ঠুভাবে স্পোর্টস করতে হলে শিক্ষকদের কাছ থেকে চাঁদা নিতে হবে। শিক্ষকরা যে অর্থ দিচ্ছেন তা তো শিক্ষকদের লাঞ্চ প্যাকেটের পিছনেই খরচ করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন এই শিক্ষক নেতা।

সংসার চলে না শিক্ষকদের, ২ টাকা করে দানের জন্য পোস্টার, তৃণমূল শিক্ষক নেতার মন্তব্যে বিতর্ক

দেবজ্যোতি ঘোষের মতো অবশ্য ভাবতে রাজি নন পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি-র উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি আরসাদ আলি। তাঁর মতে, স্কুল স্পোর্টস-এ অর্থ দেওয়াটা বাধ্যতামূলক নয়। কোনও শিক্ষক স্বেচ্ছায় চাঁদা দিতে পারেন। কিন্তু তা বলে চাঁদা প্রথাকে কারোর উপরে জোর করে চাপানো যায় না। যদিও, স্কুল স্পোর্টস-এ শিক্ষকদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়ার প্রবল বিরোধী শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ। ইতিমধ্যেই তাঁরা এই ইস্যুতে আন্দোলন শুরু করেছে এবং নানা কর্মসূচিও নিয়েছে। তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির উত্তর ২৪ পরগনার নেতা দেবজ্যোতি ঘোষের মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ। এই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মইদুল ইসলাম জানিয়েছেন, দেবজ্যোতি ঘোষ শিক্ষকদের অপমান করেছেন। তাঁর অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়া উচিত। মইদুলের মতে, সরকারি অর্থে স্পোর্টস হবে এই দাবি নিয়ে তাঁরা বহুদিন থেকেই সরব। দেবজ্যোতি ঘোষ চাঁদা না দেওয়া নিয়ে শিক্ষকদের যেভাবে সমাজের কলঙ্ক ও সমাজের নিকৃষ্টতম বলে মন্তব্য করেছে তা তৃণমূলি কালচারেরই প্রতিফলন বলে তিনি মনে করছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে নিচুতলার কর্মীরাও দেবজ্য়োতি ঘোষের মতো কুরুচিকর ও অশালিন মন্তব্যে অভ্যস্ত। সুতরাং, তাঁরা যে শিক্ষকদের অপমানে সিদ্ধহস্ত হবেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই বলেও মনে করছেন মইদুল। তিনি আরও জানিয়েছেন, যারা জার্সি বদল করে এখন তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন তাঁরা নিজেদের বড় তৃণমূলি প্রমাণ করতে চৌত্রিশ বছরের বাম শাসন নিয়ে বহু কথাই বলছেন। দেবজ্যোতি ঘোষ সস্তা কথা বলে তৃণমূলে জনপ্রিয়তা পাওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মইদুল। তিনি স্পষ্টভাবেই জানিয়েছেন, স্কুল স্পোর্টস-এ শিক্ষকরা চাঁদা দেবে না। যে শিক্ষক চাঁদা না দেওয়ার শপথে অটল থাকবেন তাঁর পাশে রয়েছে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ। যাঁরা এইসব প্রতিবাদী শিক্ষকদের মানহানি ও অপমান করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে অহিংস আন্দোলনে যেতে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ পিছপা হবে না বলেও প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মইদুল।

সংসার চলে না শিক্ষকদের, ২ টাকা করে দানের জন্য পোস্টার, তৃণমূল শিক্ষক নেতার মন্তব্যে বিতর্ক

প্রাথমিক শিক্ষকদের স্বার্থ নিয়ে আন্দোলন করছে উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। এই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক পৃথ্বা বিশ্বাস জানিয়েছেন, যিনি শিক্ষকদের সম্পর্কে এহেন মন্তব্য করেন তাতে তাঁর ব্যক্তিগত রুচির পরিচয় ফুঁটে উঠছে। এই নিয়ে তিনি আর কোনও মন্তব্য করবেন না। তবে, শিক্ষকরা চাঁদা দেবে না এই দাবিতে তিনিও অটল। তাঁরও স্পষ্ট কথা সরকারি স্কুলে স্পোর্টস হবে সরকারি অর্থে। সেখানে শিক্ষকরা কোনওভাবেই অর্থ দেবে না। উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অসহায় শিক্ষকদের পাশে দাঁড়়াচ্ছে এবং যদি কোনও শিক্ষক এই চাঁদা ইস্য়ুতে অসহায় বোধ করেন তাহলে তাঁরা সেই শিক্ষকের পাশে গিয়ে সাহস জোগাবেন বলেও জানিয়েছেন পৃথ্বা।

সংসার চলে না শিক্ষকদের, ২ টাকা করে দানের জন্য পোস্টার, তৃণমূল শিক্ষক নেতার মন্তব্যে বিতর্ক

শিক্ষকদের চাঁদা দেওয়া ইস্য়ুতে ওয়ানইন্ডিয়া বাংলা কথা বলেই তৃণমূলের শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র-র সঙ্গে। তিনি স্পষ্ট জানান, কে কোথায় কোন বিষয়ে মন্তব্য করেছেন সে নিয়ে তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে পারবেন না। কার্যত ক্ষিপ্ত মেজাজেই তিনি বলেন, তাঁকে কেন এসবের মধ্যে টানা হচ্ছে। এমনকী, তাঁর দলেরই এক শিক্ষক নেতা যিনি আবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মাথা তিনি শিক্ষকদের সম্পর্কে কি এমন মন্তব্য করতে পারেন? এমন প্রশ্ন শুনেও কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি অশোক রুদ্র। তাঁর জবাব তিনি মন্তব্য করবেন না।

সংসার চলে না শিক্ষকদের, ২ টাকা করে দানের জন্য পোস্টার, তৃণমূল শিক্ষক নেতার মন্তব্যে বিতর্ক

[আরও পড়ুন: শিক্ষায় এবার চাঁদার জুলুম! ৫০০ টাকা চাঁদার ফতোয়া খোদ ডিপিএসসি চেয়ারম্যানের ][আরও পড়ুন: শিক্ষায় এবার চাঁদার জুলুম! ৫০০ টাকা চাঁদার ফতোয়া খোদ ডিপিএসসি চেয়ারম্যানের ]

রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি এবিপিটিএ-র রাজ্য সম্পাদক সমর চক্রবর্তী জানিয়েছেন, 'এক তৃণমূল শিক্ষকনেতা বাকি শিক্ষকদের নিকৃষ্টতম বলে দাবি করছেন, আসলে ওই কথাটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নজরুল মঞ্চের সভাতে ওনাদেরকেই বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী ওনাদের জন্যই ঘেউ-ঘেউ শব্দটা উল্লেখ করেছিলেন। এরপরও যদি তৃণমূল কংগ্রেসের এহেন শিক্ষক নেতাদের শিক্ষা না হয় তাহলে আমাদের কিছু বলার নেই। বাম আমলে মেলায় বা মুম্বই থেকে শিল্পী এনে তাঁর গলায় সোনার চেন ঝোলানোর কাজে সরকারি অর্থের অপচয় করা হত না। বরং বাম সরকার আমাদের নিরাপত্তা দিয়েছে। পাঁচ-পাঁচটা পে-কমিশন দিয়েছে। অবৈতনিক শিক্ষা চালু করেছে। ৯৯.৫৫ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার আঙিনায় এনেছে। অথচ এই সরকারের আমলে শিক্ষা ব্যবস্থার রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি। সুষ্ঠু শিক্ষায় কোনও নজর নেই। পাঠ্যসূচি-তে ঠিকমতো নজর নেই। স্কুল পরিচালনার কোনও দায়-দায়িত্ব নেই। স্কুল স্পোর্টস-এ শিক্ষকদের অর্থ দেওয়াটা নিজস্ব সিদ্ধান্ত। আর চাঁদা তুললে হিসাব দিতে হবে। কিন্তু, এসবের কোনও বালাই নেই। নিজেদের ইচ্ছে-মতো যা ইচ্ছে তাই করবে এরা। আর নিজেদের নেতারা স্কুল স্পোর্টস-এর মাঠে এসে মঞ্চ আলোকিত করবেন, তাঁদের আবার ভেট দেওয়া হবে। এ জিনিস চলতে পারে না। আমরা কাউকে বলছি না যে টাকা দেবেন না। কেউ যদি স্বেচ্ছায় দেন তা চলতে পারে। তবে সরকার তার দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না। কিন্তু শিক্ষকরা চাঁদা না দিলে রাতের অন্ধকারে পোস্টার মারব, এই করব-সেই করব- এমন জিনিস মানা যায় না। দেবজ্যোতি ঘোষ যদি নিজে একজন শিক্ষক হয়ে থাকেন তাহলে তাঁর শিক্ষোচিত আচরণ করা উচিত। চাঁদা না দেওয়া নিয়ে যারা আন্দোলন করছে তাদের পাশে থাকা উচিত।'

English summary
School Sports in Government Primary Schools are going on various district of West Bengal. But, Some teachers are not willing to pay the donation in the sports and it creates a huge controversy.
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X