পিঠে-পুলি মানেই বাঙালি রসনায় অন্য মাত্রা, লোভ সংবরণ বড়ই কঠিন, যার প্রমাণ এই ছবি
সোনারপুরে ৩১ তারিখ থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে স্পোর্টস কার্নিভাল। আর এই স্পোর্টস কার্নিভাল-এ এবার বাড়তি পাওনা পিঠে-পুলি উৎসব। কি নেই তাতে রাঙা পুলি থেকে শুরু করে সাধের ক্ষীরের পাটি-সাপটা।
বহুদিন আগে এক বিস্কুট কোম্পানির এক বিজ্ঞাপন রাজ্য জুড়ে রাজ করেছিল। আর সেটা ছিল 'এ স্বাদের ভাগ হবে না'। বাংলার পিঠে-পুলি সম্পর্কে এই ক্যাপশনটা একদম পারফেক্ট। কারণ দিনের পরদিন যে সব বাঙালি পিঠে-পুলির শুধুমাত্র নাম শুনেই জিভটা লক-লক করে দিয়েছেন তারা জানেন যে এ স্বাদের মর্ম কতটা। লাল লাল পাটি-সাপটার মধ্যে থাকা ক্ষীর বা নারকেলের পুরে কামড় বসাতে বসাতে মনটা যে কোথায় হারিয়ে যায় বলা কঠিন। তাই সোনারপুর উৎসবের অঙ্গ পীঠে-পুলি উৎসবে রসনার তৃপ্তিটা যেন বারবার ফিরে আসছিল। বিশেষ করে স্থানীয় বিধায়িকা ফিরদৌসী বেগম পীঠের প্লেট বাড়িয়ে দিতেই প্রথমে নিমরাজি হয়েও পরে যেভাবে তাতে মজে গেলেন সোনারপুর দক্ষিণ-এর বিধায়ক জীবন মুখোপাধ্যায় তাতে বোঝাই গেল সত্যি সত্যি-এ স্বাদের ভাগ হওয়া কঠিন।
সোনারপুরে ৩১ তারিখ থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে স্পোর্টস কার্নিভাল। আর এই স্পোর্টস কার্নিভাল-এ এবার বাড়তি পাওনা পিঠে-পুলি উৎসব। কি নেই তাতে রাঙা পুলি থেকে শুরু করে সাধের ক্ষীরের পাটি-সাপটা। মালপোয়া থেকে শুরু করে সরা পিঠে।
সোনারপুরের কামালগাজির নেতাজি স্পোর্টস কমপ্লেক্সের ময়দানে পিঠে-পুলি উৎসবের উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গেই পিঠে-পুলি উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক জীবন মুখোপাধ্যায়ের পিঠে-পুলির প্রতি আসক্তি সর্বজন বিদিত। কিন্তু, এমন এক অনুষ্ঠানে এসে পিঠে-র ভুরি-ভোজে মজতে একটু খুতখুত-ই করছিলেন জীবন মুখোপাধ্যায়। কিন্তু, স্থানীয় বিধায়িকা ফিরদৌসী বেগম যখন একপ্রকার জোর করেই পিঠের প্লেটটা বাড়িয়ে দিয়েছেন তখন আর না বলা যায় কি করে। পিঠের প্রতি বাঙালির দরদ-আবেগ এ নিয়ে বহু বছর ধরেই গুচ্ছ গুচ্ছ জিনিস লেখা হয়েছে। সুতরাং, জীবনবাবুর মতো মানুষরা আছেন বলেই যে বাঙালি এখনও পিঠে-পুলির স্বাদ অমর করে রেখেছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
সোনারপুর উৎসবে পিঠে-পুলির পসরা নিয়ে বেশ কয়েকটি স্টল বসেছে। মহিলারাই বাড়ি থেকে তৈরি করা পিঠে-পুলি নিয়ে হাজির হচ্ছেন এখানে। কিছু জন আবার পিঠে-পুলি-র ট্রে-তে নাম লেখেননি। স্থানীয় বিধায়িকা ফিরদৌসী নাম লেখারও পরামর্শ দিলেন। অনেকে আবার দিদি-দিদি বলে পীঠে খাওয়ানোর জন্য জোরও করলেন ফিরদৌসীকে। কিন্তু, বিধায়িকার এক প্রশ্ন 'আমাকে সব খাইয়ে দিলে তোমরা বেচবে কি?' বিনিময়ে স্টলে থাকা মহিলাদের কাছ থেকে উড়ে এল বিনম্র হাসি। বোঝাই গেল বাংলা ও বাঙালির অন্যতম আইডেন্টিটি পিঠে-পুলির সংস্কার কতটা ঘরোয়া আর কতটা আন্তরিক। যার একটুকরো ছবি মিলল ৩১ বিকেলে সোনারপুরের নেতাজি স্পোর্ট কমপ্লেক্সের মাঠের উল্টোদিকে পীঠে-পুলি-র স্টলে।
[আরও পড়ুন:রাবীন্দ্র চেতনা থেকে বাউল, বর্ণাঢ্য জমকালো উদ্বোধন সোনারপুরের স্পোর্টস কার্নিভাল-এর]