তৃণমূলে এখন ‘তৎকাল’ কোটার বাড়বাড়ন্ত! বিপাকে পড়ে আদি তৃণমূল-স্তুতি পার্থর
‘দলে এমন অনেকে আছেন, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলে রয়েছেন। বিনা স্বার্থেই কাজ করে যাচ্ছেন। আর একটা পক্ষ সবেমাত্র দলে এসেই পদ পাওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন।’
'কাল এসে ভাববেন না, আজই পদ পেয়ে যাবেন। আগে দল করুন, কাজ করুন, নীতি বুঝুন। তারপর পদ পাওয়ার ভাবনা মনে আনবেন।' তৎকাল কোটায় পদ পেতে চাইছেন যাঁরা, তাঁদের সাবধান করে দিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূলে আদি-নব্যের লড়াইয়ে পার্থবাবু আদি তৃণমূলীদের পাশেই দাঁড়ালেন।
নজরুল মঞ্চে এদিন তৃণমূলের কিষান ক্ষেত-মজদুর সংগঠনের সম্মেলনে দলের মহাসচিব সতর্ক করে দিলেন নতুনদের। তিনি বলেন, 'দলে এমন অনেকে আছেন, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলে রয়েছেন। বিনা স্বার্থেই কাজ করে যাচ্ছেন দলের জন্য। আর একটা পক্ষ সবেমাত্র দলে এসেছেন। এসেই পদ পাওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। এটা ঠিক নয়।'
তিনি এই শ্রেণির তৃণমূলীদের তৎকাল টিকিটের সঙ্গে তুলনা করেন। তাঁর কথায়, 'কিছু যাত্রী শেষ মুহূর্তে তৎকাল টিকিট কাটে। তৎকাল কোটায় দলে ঢুকেই পদ পাওয়ার জন্য উঠে পড়ে লাগে।' এদিন এই শ্রেণির তৃণমূলীদের উপর নজর রাখতে নির্দেশ দেন মহাসচিব। তাঁর বার্তা, 'নব্যরা আসবে, দল বাড়বে। এটাই নিয়ম। কিন্তু পুরনোদের উপর ভরসা হারালে চলবে না। তাঁদের অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।'
পার্থবাবুর এদিনের কথায় আর এক শ্রেণির তৃণমূলীর হদিশ পাওয়া গেল। আগে আদি-নব্য দ্বন্দ্ব ছিল। সেখানে এসে ঢুকল তৎকাল তৃণমূল। যা তৃণমূলে নতুন সঙ্কট হয়ে দেখা দিয়েছে এবার। তৎকাল তৃণমূলের কোপে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে স্বভাবতই চাপে দল।
তৃণমূল মহাসচিবের এই বক্তব্যের সমালোচনাও করেছেন বিরোধীরা। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, 'দলের অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে। পুরনো তৃণমূলীরা এখন সবাই বসে গিয়েছেন। যাঁরা রয়েছেন সবাই তৎকাল। তাই পার্থবাবুর মুখে এখন পুরনোদের স্তুতি।'
শনিবার কোর কমিটির বৈঠকে মমতা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে বার্তা দিয়েছেন। এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় বললেন, আদি তৃণমূলীদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন। দলে ভিড়েই পদ পেয়ে যাবেন- এমন ভাবনা মন থেকে দূর করতে বলেন তিনি। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সির গলাতেও একই সুর। তিনি বলেন, 'যাঁরা প্রকৃত কর্মী তাঁরা কোনও পদ পাচ্ছেন না। স্বজনপোষণ কিছুতেই মানবে না তৃণমূল।'