পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণ কাণ্ডের রায় ঘোষণা, দোষী সাব্যস্ত ধৃত তিন অভিযুক্তই
কলকাতা, ১০ ডিসেম্বর : অবশেষে বোধহয় সুবিচার পেল পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণ কাণ্ডে নির্যাতিতা সুজেট জর্ডনের আত্মা। এই ঘটনায় ধৃত তিন অভিযুক্ত রুমান খান, নাসির খান ও সুমিত বাজাজকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত। আগামিকাল অর্থাৎ শুক্রবার দুপুর ২টোর সময় সাজা ঘোষণা করা হবে।
২০১২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে পার্কস্ট্রিটের রাস্তায় ধর্ষিতা হন সুজেট জর্ডন নামের ওই মহিলা। সেই রাতেই তিনি থানায় ছুটে গেলেও সুবিচার পাননি। উল্টে প্রশাসনের শীর্ষ থেকে জুটেছিল গঞ্জনা। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতেই এসব করানো হচ্ছে বলে আঙুল তোলা হয়েছিল বিরোধীদের দিকে।
শুধু তাই নয়, ধর্ষিতা মহিলার চরিত্র নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। আর তা তুলেছিলেন ক্ষমতার শীর্ষে থাকা ব্যক্তিরাই। এই ঘটনায় রাজ্য সরকারে তরফে অবিচার যে শুধু সুজেট জর্ডন পেয়েছেন তা নয়, অপমান জুটেছিল এই ঘটনার তদন্তকারী অফিসার দময়ন্তী সেনের কপালেও।
তৎকালীন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান দময়ন্তী সেনকে বদলি করে দেওয়া হয় গুরুত্বহীন পদে। ফলে সবমিলিয়ে রাজ্যের তো বটেই সারা দেশের সংবাদ শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছিল এই ধর্ষণের ঘটনা।চাপের মুখে পড়ে সরকারকে ব্যবস্থা নিতেই হয়েছিল। গ্রেফতার করা হয়েছিল এদিন দোষী সাব্যস্ত তিন অভিযুক্ত রুমান খান, নাসির খান ও সুমিত বাজাজকে। তবে এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত কাদের খান ও আর এক অভিযুক্ত মহম্মদ আলি এখনও ফেরার।
২০১২ সালের ঘটনার পরে অন্ধকারে লুকিয়ে না থেকে সমাজের নির্যাতিতাদের পাশে ছুটে গিয়েছিলেন সুজেট। মুখ উঁচু করে বলেছেন, তিনি কোনও দোষ করেননি। ফলে মুখ লুকানোর কোনও প্রয়োজন নেই। এই লজ্জা তাদের যারা এমন ঘটনা ঘটাতে পারে।
যদিও এবছরের ১৩ মার্চ সুজেটের লড়াই থেমে গিয়েছে। ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। তবে সুজেট যে প্রতিবাদের আগুন জ্বালিয়ে গিয়েছিলেন তা নেভেনি। আর তাই ফল অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত হওয়া।