টি আই প্যারেড হবে না, অন্য কোনও ফাঁক যেন না থাকে, সাবধানী তদন্তকারী পুলিশ ও আইনজীবীরাও
কলকাতা, ৩০ সেপ্টেম্বর : ভোল বদলেও শেষরক্ষা হয়নি। দেরিতে হলেও পুলিশের জালে ধরা পড়তে হয়েছে পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত কাদের খান ও তার শাগরেদ মহম্মদ আলিকে। কিন্তু কোন পথে এগোবে এই মামলা? তা নিয়ে প্রথম থেকেই সাবধানী নির্যাতিতার আইনজীবী। সাবধানী তদন্তকারী অফিসাররাও। [পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত কাদের গ্রেফতার]
এদিন নির্যাতিতার আইনজীবী জানালেন, নির্যাতিতা যেহেতু বেঁচে নেই, সম্ভব নয় টি আই প্যারেড। এক্ষেত্রে অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীদেরই সাক্ষী করতে হবে। আর এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে পুলিশকে। [পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণ : রাজীব কুমারের এক সিদ্ধান্তে পুলিশের জালে কাদের খান]
পার্কস্ট্রিটকাণ্ডে নির্যাতিতার আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা জানিয়েছেন, এর আগে বহুবার আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পালাতে সমর্থ হয়েছে মূল অভিযুক্ত কাদের ও তার সহযোগী আলি। কিন্তু শেষপর্যন্ত কলকাতা পুলিশ তাদের জালে পুরতে সমর্থ হয়েছে। কলকাতা পুলিশ এ ক্ষেত্রে যে দারুন কাজ করেছে, সেই বাহবা দিতেই হবে। [পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত নাসের ঘটনাস্থলেই ছিল না, চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি কাদেরের]
এবার আমাদের লক্ষ্য কোনওভাবেই আইনের ফাঁক গলে যেন বেরিয়ে আসতে না পারে অভিযুক্তরা। এতদিন প্রভাব খাটিয়ে আইনকে বোকা বানিয়েছে ধৃত অভিযুক্তরা। এবার তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আবেদন জানাব আমরা। যেহেতু নির্যাতিতা বেঁচে নেই, যে আইনি-ফাঁক তৈরি হবে, তা পুলিশ ও আইনজীবীদের পূরণ করতে হবে। কেননা আমরা ওই নির্যাতিতার কাছে দায়বদ্ধ, দায়বদ্ধ পুরো সমাজের কাছে।
ওই আইনজীবী জানান, শুধু কাদের বা আলি নয়, এতদিন যারা তাদের পালিয়ে যেতে বা গা ঢাকা দিয়ে থাকতে সাহায্য করল, তারাও এই ঘটনায় দায় এড়াতে পারে না। তারাও বহুলাংশে দায়ী। তারা পরোক্ষে এই ঘৃণ্য অপরাধকে প্রশ্রয় দিয়ে গিয়েছে। ফলে কারা এই কাজে কাদের ও আলিকে সাহায্য করেছে, তাদের মদত জুগিয়ে গিয়েছে, তাদেরকেও মামলায় যুক্ত করতে হবে।
পার্কস্ট্রিট মামলায় একপ্রস্থ রায় ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। এবার সেই মামলায় অভিযুক্তদের যে সমস্ত ধারা দেওয়া হয়েছিল, এই দুই অভিযুক্তকেও সেই একই ধারায় অভিযুক্ত করা হবে। এই দুই ধৃতের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা শুরু করা হবে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬বি ধারায় গণধর্ষণের মূল অভিযোগ তো রয়েইছে, সেইসঙ্গে ১৬৪, ১২০বি অন্যান্য ধারাও থাকবে।
এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে যুক্ত হবে এতদিন নাম ভাঁড়িয়ে দেশে-বিদেশে আত্মগোপন করে থাকার অভিযোগও। এদিনই তাদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয় কাদের ও আলিকে। তাদেরকে গোয়েন্দারা নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবেন। তারপরই ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গোয়েন্দারা জানতে চাইবেন, তারা কোথায় কোথায় গিয়েছিল? কারা তাদের সাহায্য করেছিল পালাতে? কোনও প্রভাবশালীর হাত ছিল কি না তাদের এই সাড়ে চার বছর পলায়ন পর্বে, তাও জানার চেষ্টা চালাবে পুলিশ।