মমতার নিরাপত্তা ওয়াচ টাওয়ার থেকে নজরদারি, নয়া ব্যবস্থার খুঁটি-নাটি একনজরে
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির নিরাপত্তা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। লোকসভা ভোটের আগেই মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে দুটি ওয়াচ টাওয়ার বসানো হবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির নিরাপত্তা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। লোকসভা ভোটের আগেই মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে দুটি ওয়াচ টাওয়ার বসানো হবে। নজরদারি চালানোর জন্যই এই ওয়াচ টাওয়ার বানানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা খাতে খরচ হবে ৭৪ লক্ষ টাকা। তিন মাসের মধ্যেই এই কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানানো হয়েছে নবান্ন সূত্রে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির নিরাপত্তা
নিরাপত্তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি বদলের কথা এর আগে উঠেছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তাতে রাজি হননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান কালীঘাটের বাড়িতেই থাকতে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে একাধিক নেতা-কর্মীরা আসছেন ওই বাড়িতে। সেই কারণেই নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তায় মহিলা নিরাপত্তা রক্ষী
এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তা ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল নবান্নের তরফে। স্থির হয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রীর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বলয়ে অর্থাৎ ডি-জোনে মহিলা নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। মঞ্চে ও র্যাম্পে নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা বাড়িয়ে বজ্র আঁটুনির ফসকা গেরোগুলিকে আরও শক্তপোক্ত করাই ছিল নিরাপত্তা আধিকারিকদের উদ্দেশ্য।
হেমতাবাদের ঘটনা থেকে শিক্ষা
হেমতাবাদে ডি-জোন ভেদ করে দুই বোন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ঢুকে পড়েছিলেন। এই ঘটনায় পর্যাপ্ত মহিলা নিরাপত্তাকর্মী না থাকাকেই দায়ী করেছিল প্রশাসন। সেই অভাব পূরণ করতে বদ্ধপরিকর নবান্ন, ডি-জোনে মহিলা কর্মী বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। মুখ্যমন্ত্রীর ভিভিআইপি নিরাপত্তা যাতে কোনওমতেই বিঘ্নিত না হয়, সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত।
মোবাইলে নিষেধাজ্ঞা জারি
ডি-জোনের নিরাপত্তা মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় তখন। নিতান্ত কর্তব্যের খাতিরে প্রয়োজন না হলে নিরাপত্তারক্ষীরা মোবাইল ব্যবহার করতে পারবে না বলে কড়া ব্যবস্থা লাগু করে প্রশাসন। বাঁশের ব্যারিকেড আরও উঁচু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত হয় দুই বা্ঁশের মধ্যে ফাঁকও কমানোরও।
মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা বলয়
ডি-জোনের দায়িত্বে থাকেন স্পেশাল সিকিউরিটি ইউনিটের কম্যান্ডো ট্রেনিংপ্রাপ্ত আধিকারিক। এই কম্যান্ডো বাহিনীর পিছনে উর্দিধারী পুলিশ থাকে, তার পিছনে থাকে স্পেশাল ব্রাঞ্চের কর্মীরা। মোট ১২০ থেকে ১৫০ জন নিরাপত্তার দায়িত্ব কর্তব্যরত থাকেন। সেই নিরাপত্তা বলয়ের কোথাও কোনও গাফিলতি দেখতে চান না আধিকারিকরা।
মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানান, খুন হতে পারি
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি যে কোনও মুহূর্তে খুন হতে পারেন। নিজেই জানিয়েছিলেন সে কথা। অকপটে জানিয়েছিলেন তাঁকে খুন করতে সুপারি দেওয়া হয়েছিল। করা হয়েছিল রেইকিও। পরক্ষণেই কঠোর সাহসের পরিচয় দিয়ে তিনি বলেন, মৃত্যুকে ভয় পান না তিনি। তাই গোয়েন্দারা বলা সত্ত্বেও কালীঘাটের বাড়ি তিনি ছাড়েননি।
কালীঘাটের বাড়িতে নিরাপত্তা বাড়ছে
মুখ্যমন্ত্রী এক বেসরকারি চ্যানেলে জানিয়েছিলেন, গোয়েন্দারা তাঁকে বলেছেন, কালীঘাটের এই বাড়িতে নিরাপত্তা দেওয়ার মতো অবস্থা নেই। আপনি অন্য কোনও জায়গায় থাকুন। কিন্তু আমি শুনিনি সে কথা। কারণ আমি মৃত্যুকে ভয় পাই না। আগেও অনেকবার আমার উপর প্রাণঘাতী হামলা হয়েছে। আমি জানি আমার শক্তি মানুষ। মানুষ যতদিন চাইবেন, আমি বেঁচে থাকব।
বিজেপিকে ঘুরিয়ে বার্তা দিয়েছিলেন মমতা
তিনি এমনও বলেন যে, কোন দল তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিল, আমি সব জানি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি ভদ্রতার খাতিরে সেই দলের নাম বলতে চাই না। কিন্তু তিনি সাবধান করে দেন, এত সহজে তাঁকে শেষ করা যাবে না। তাঁর কথায়, রাজনৈতিকভাবে লড়াই করতে পারছে না বলেই, এই ধরনের সন্ত্রাসমূলক চিন্তা-ভাবনা করছে কেউ কেউ।
মমতার নিরাপত্তায় অবশেষে ওয়াচ টাওয়ার
অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজি হয়েছেন কালীঘাটের বাড়ির নিরাপত্তা অন্যভাবে বাড়াতে। যেহেতু কালীঘাচের বাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো যাবে না, তখন গোয়েন্দাদের কাছে মূল অস্ত্র নজরদারি চালানো। সেই নজরদারি চালানোর জন্যই ওয়াচ টাওয়ার বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিন মাসের মধ্যেই ওয়াচ টাওয়ার গড়ার কাজ শেষ হয়ে যাবে।
[আরও পড়ুন: বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ মিলল অনুব্রত-গড়ে, পুরুলিয়া-কাণ্ডের ছায়া রহস্য-মৃত্যুকাণ্ডে]