সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন দিশা?
কলকাতা, ১১ এপ্রিল : ছোটপর্দার চেনা মুখ ছিলেন দিশা গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নিজের ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে পরিষ্কার আত্মহত্যাই করেছেন দিশা। পুলিশও প্রাথমিক তদন্তের পর দিশার আত্মঘাতী হওয়ার সম্ভাবনাতেই জোর দিয়েছিল। তবে এই মুহূর্তের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কেন আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন দিশা? [বাংলা টেলি সিরিয়ালের অভিনেত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু]
ছোটপর্দায় বেশ নামডাক ছিল দিশার। মাত্র ২৪ বছরেই বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। হাতে একাধিক কাজ ছিল। দিশার সহকর্মীদের কথায়, শুটিং সেটে বেশ প্রাণোচ্ছ্বল থাকতেন দিশা। নিজের মিষ্টি ব্যবহারে সবার মন জয় করে নিতেন। কখনও দেখে বোঝা যায়নি ও কোনও সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বা হতাশাগ্রস্ত কিংবা কোনওদিন এমন অঘট কিছু ঘটিয়ে ফেলতে পারেন। [আত্মহত্যাই করেছেন দিশা, ময়নাতদন্তের পর ইঙ্গিত পুলিশের]
তবে কী সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন দিশা? যে অভিনেতা বন্ধুকে দিশার প্রেমিক বলা হচ্ছে তার সঙ্গে আসলে বাড়ি থেকেই বিয়ের ঠিক করা হয়েছিল। সেই বিয়েতে মত ছিল না দিশার। দিশা অন্য একজনকে ভালবাসতেন। দিশার ভালবাসার মানুষটি পুরুষ না হওয়াতেই যত সমস্যার সূত্রপাত।
মৌচাক নামের একটি সিরিয়ালে কাজ করার সময় আর এক সমবয়সী অভিনেত্রীর সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি হয় দিশার। সে বন্ধুত্ব ক্রমশ গভীর হতে থাকে। বন্ধুত্বের থেকে একটু বেশিই হবে সে সম্পর্ক। প্রাসযই দুজনকে একসঙ্গে দেখা যেতে শুরু করে। টলি পাড়ায় একটু কানাকানিও শুরু হয় দুজনের বন্ধুত্ব নিয়ে।
দিশার বাবা দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকতেন। কয়েক মাস আগে দিশার মাও বাবার কাছে যান। কাজের জন্য দিশা পর্ণশ্রীর ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। তখন এই বান্ধবী দিশার সঙ্গে এসে ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেন। যদিও এই বিষয়টা একেবারেই ভালভাবে নেননি দিশার মা-বাবা। দিশাকে ভালমন্দ শুনিয়ে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেন দিশার মা।
এরপরেও দুজনের বন্ধুত্বে কোনও বাধ পড়েনি। টলিপাড়ার খবর, দিশার বান্ধবীকে মোটেই পছন্দ করতেন না দিশার প্রেমিক। কোনও এক অনুষ্ঠানে দিশার বান্ধবীর সঙ্গে দিশার প্রেমিকের তুমুল ঝগড়াও হয় বলে জানা গিয়েছে। এর পর থেকে দিশার বান্ধবীর সঙ্গেও দিশার মাঝে মধ্যেই ঝগড়া হতে শুরু হয়। এই সব মিলিয়েই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিলেন দিশা। সমকামী সম্পর্ক সমাজ ও পরিবার মেনে নেবে না। বাবা-মার বেছে দেওয়া জীবন সে মেনে নিতে পারছিল না, আর এই দোটানা থেকেই আত্মহত্যা বলে মনে করা হচ্ছে।