মুকুলের ‘পরীক্ষা’ চলেছে! ইশরাত পদ পেলেও, বিজেপিতে স্রেফ আঞ্চলিক নেতা ‘চাণক্য’
তিন তালাক প্রথা বাতিলের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজেপিতে পা দিয়েই ইশরাত জাহান পেয়ে গেলেন গুরুত্বপূর্ণ পদ, আর মুকুল রায়ের মতো নেতা রয়ে গেলেন ব্রাত্য।
রাজ্যের শাসকদলের অন্যতম শীর্ষপদ থেকে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন মুকুল রায়। তাও নয় নয় করে হয়ে গেল সাড়ে চার মাস। তবু পদ জুটল না মুকুল রায়ের। অথচ তিন তালাক প্রথা বাতিলের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজেপিতে পা দিয়েই ইশরাত জাহান পেয়ে গেলেন গুরুত্বপূর্ণ পদ, আর মুকুল রায়ের মতো নেতা রয়ে গেলেন ব্রাত্য। এতদিনে শুধু মিলেছে পঞ্চায়েতের দায়িত্ব। অর্থাৎ বিজেপিতে গিয়ে এখনও পরীক্ষা দিয়ে যেতে হচ্ছে তৃণমূলের প্রাক্তন সেকেন্ড ইন কম্যান্ডকে।
[আরও পড়ুন:প্রাথমিক কিংবা উচ্চশিক্ষা, সব হোক মাতৃভাষাতেই! আরএসএস-এর বৈঠকে সিদ্ধান্তের জেরে জল্পনা]
ঢাকঢোল পিটিয়ে মুকুল রায়কে বিজেপিতে যোগদান করানো হয়েছিল। নানা জল্পনা, দলের অন্দরে নানা চাপানউতোর কাটিয়ে তিনি বঙ্গ বিজেপিতে এসেই 'মহেন্দ্র সিং ধোনি'র তকমা পেয়েছিলেন। তার পাশাপাশি বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে 'বিরাট কোহলি'র মর্যাদা দিয়েও মুকুল রায় চাপা দিতে পারেননি কোন্দল। তবে তাঁর কোনও পদও জোটেনি। নানা টালবাহানায় তাঁকে পঞ্চায়েতের দায়িত্ব দিয়েই ক্ষান্ত হয়েছে বিজেপি।
রাজনৈতিক মহলে এখন তাই জোর চর্চা, মুকুল রায় কেন এখনও পেলেন না দলীয় পদ। অথত ইশরাত জাহান দলে এসেই পদ পেয়ে গেলেন! সম্প্রতি বিজেপির মহিলা মোর্চা সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় হাওড়ার ইশরাত জাহানকে মহিলা মোর্চার সংখ্যালঘু সেলের দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু মুকুলের বেলায় জোটেনি অমিত শাহ বা দিলীপ ঘোষের কোনও 'দাক্ষিণ্য'। তাঁকে পদহীন হয়ে শুধু বিজেপি নেতা হিসেবেই পরিচিত হতে হচ্ছে।
[আরও পড়ুন:নারী উন্নয়নে নতুন পদক্ষেপ, স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন বসছে রাজ্যের মহিলা কলেজে]
সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের 'সেকেন্ড ইন কম্যান্ড' ছিলেন মুকুল রায়। দল ছাড়ার সময়ও তাঁর পদ ছিল সর্বভারতীয় সহ সভাপতি। একার হাতে দলের সংগঠন সামলাতেন। সেই মুকুল রায় তৃণমূলে ব্রাত্য হয়ে বিজেপিতে পা বাড়ালেন। কিন্তু সেখানে গিয়েও তিনি কাঙ্খিত সম্মান পেলেন না। সাম্প্রতিক ভোটগুলিতে সে অর্থে মুকুল রায় কোনও দাগ কাটতে পারেননি। তাই কোনও পদ দেওয়ার আগে তাঁকে ফের পরীক্ষায় বসানো হচ্ছে আসন্ন পঞ্চায়েতে।
আসন্ন পঞ্চায়েতে বিজেপির সমস্ত আসনে প্রার্থী দেওয়াই সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। এই অবস্থায় মুকুল রায়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের। ভালো ফল করতে পারলে তুমি স্বাগত, নইলে ফের ঠেলে দেওয়া হবে অন্ধকারে। এখনও এ রাজ্যে বিজেপির পক্ষে দারুন রেজাল্ট করে তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ ছোড়া কার্যত অসম্ভবের জায়গায়। এই অবস্থায় মুকুল রায় কি তাঁর গ্রহণযোগ্যতা বোঝাতে পারবেন? নাকি অন্ধকারের অতলে তলিয়ে যাবে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ, তার উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্যন্ত।