মানুষের হাতে পঞ্চায়েত ফিরিয়ে দেওয়ার শপথ নিয়েছে সিপিএম, কামব্যাকের লক্ষ্যে অবিচল সেলিম
একুশের নির্বাচনের পর কামব্যাকের লক্ষ্যে শূন্য থেকে যাত্রা শুরু করেছে সিপিএম। আবারও প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পাওয়ার লক্ষ্যে সম্প্রতি বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে বাংলার বিগত ৩৪ বছরের শাসক দল।
একুশের নির্বাচনের পর কামব্যাকের লক্ষ্যে শূন্য থেকে যাত্রা শুরু করেছে সিপিএম। আবারও প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পাওয়ার লক্ষ্যে সম্প্রতি বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে বাংলার বিগত ৩৪ বছরের শাসক দল। পার্টির রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এবার নতুন টার্গেট খাঁড়া করলেন।
মঙ্গলবার জ্যোতি বসুর প্রয়াণ দিবস। সেই উপলক্ষে নিউটাউনের জ্যোতি বসু সেন্টারে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এই সভায় মূলত দুটি বিষয়ে আলোচনা হব। মহম্মদ সেলিম বলেন, আমরা দুটো রিসার্চ পেপার পাবো। ১) পশ্চিমবঙ্গের গত দশ বছরের অর্থনীতির হাল হকিকৎ, ২) পঞ্চায়েতি ব্যবস্থা।
সেলিম বলেন, দুর্নীতি ও দুষ্কৃতীর জোট যে অর্থ নীতি নিয়ে কাজ করছে, মূলত তার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। বেআইনিভাবে পুলিশের একটা অংশ তার সঙ্গে যুক্ত। এই পরিস্থিতি থেকে বাংলার অর্থনীতিকে বাঁচাতে হবে। কত টাকা এল, কত টাকা খরচ হল- তার কোনটারই হিসাব দেয়নি এই সরকার। এবার হিসেব দেওয়ার সময় এসেছে।
মহম্মদ সেলিমের কথায়, আর একটি বড় লক্ষ্য নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেই নির্বাচনে আমাদের শপথ, মানুষের হাতে পঞ্চায়েতকে ফিরিয়ে দিতে হবে। মানুষের হাতে পঞ্চায়েতকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য গ্রামসভার আয়োজন করেছি আমরা। আমাদের লক্ষ্যকে সঠিক পথে চালনা করতে হবে।
এদিন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একহাত নিয়ে বলেন, দিদির সুরক্ষা কবচ কেন লাগে? মাথা সুরক্ষা করার জন্য। মুঘল জমানায়, তুর্কিতে এসব ব্যবহার করত। তার মানে আমি তোমাকে আঘাত করব, তুমি আমাকে আঘাত করতে পারবে না। ওরা চুরি করবে, দুর্নীতি করবে- আপনি কিছু করতে পারবেন না।
সেলিম বলেন, সেলিম আরও বলেন, ভাড়াটেদের দিয়ে রক্ষা কবচ না করে, নিজে যান। কালীঘাটে নিজে যান না। আসলে দিদির এই সুরক্ষা কবচে কাজ হচ্ছে না। এবার সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে যেতে হবে। যে সাঁজোয়া গাড়িতে ট্যাংকার থাকবে। গুলি চালানো যাবে। তাই আবার নতুন করে বিজ্ঞাপন দিতে হবে। এসব করে আর কিছু হবে না। মানুষের কাছে সব পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের কর্মীরা গ্রামে গ্রামে যাচ্ছেন। রাজ্যজুড়ে আমরা এই কাজ করছি। সেখানে সাধারণ মানুষ দু'হাত তুলে আমাদের আশীর্বাদ করছেন। উৎসাহিত করছে, সাহায্য করছেন। বলছেন আপনারা এগিয়ে চলুন। আমরা আছি। আর দেখুন বাংলার শাসক দলকে, তাঁদের ভয়ে বিপদ থেকে রক্ষার জন্য আইনজীবীরা নানান কর্মিসুচি নিচ্ছে। এটা নতুন তৃণমূল।
এদিন অমর্ত্য সেনের কথা প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, অমর্ত্য সেনের কথা অমর্ত্য সেনের ভাষায় শুনতে চাইছে মানুষ। চিটফান্ডের সময় থেকে কিছু মিডিয়া মমতাময়ী করে উপস্থাপন করছেন সবকিছু। তাদের কপালে দুঃখ আছে। তিনি বলেন, এবিলিটিকে ক্যাপাবিলিটে পরিবর্তন করতে অনেক বাধা উপেক্ষা করতে হয়। সব বিরোধীকে একজোট করতে পারবে?
সেলিম বলেন, ২২টা দলের মহাজোটের কথা বলেন, তারা কোথায়? তাঁর নিজের দল এক জায়গার বেশি নেই। তাও আবার নতুন তৃণমূল। নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি আর আরএসএসকে পরাজিত করতে বিরোধীদের এককাট্টা করতে হবে। তৃণমূল যা করছে, তাতে মেঘালয় তো গোয়ার রিপিট হবে। তবে এটুকু বলতে পারি, কেন্দ্রে বিজেপি রিপ্লেসড হলে খুশি হব। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো আরএসএসের দেবী। উনি যা কর্মসূচি করছেন সেখানে একটাও আরএসএস কর্মসূচির বিরুদ্ধে নেই।
সেলিম বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পার্থের লাইনে যাচ্ছেন। মমতাপন্থী ভিডিও হলে গ্রেফতার হতেন না। রাজ্যে একুশে আইন চালু হয়েছে। আমরা সবাইকে চাইছি বিজেপি ও তৃণমূলের রাজনীতির বিরুদ্ধে। সকলেই এগিয়ে আসুক। বিজেপি ও তৃণমূল বিরোধী সবাইকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।